ইসরায়েলি কূটনীতিকদের আরব আমিরাত ছাড়ার নির্দেশ
Published: 2nd, August 2025 GMT
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে ইসরায়েল তাদের বেশির ভাগ কূটনৈতিক কর্মী ফিরিয়ে আনছে। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনএসসি) উপসাগরীয় দেশটিতে ইসরায়েলিদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা হালনাগাদ করার পর এ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
এ সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এল, যখন ইসরায়েল আমিরাতে নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূত ইয়োসি আব্রাহাম শেলিকে ফিরিয়ে নিয়েছে। এর আগে আমিরাত জানায়, রাজধানী আবুধাবির একটি বারে নারীদের সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করে ‘অশোভন আচরণ’ করার কারণে তারা আর শেলিকে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নয়।
গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদ সতর্ক করে দেয় যে আরব আমিরাতে ইহুদি ও ইসরায়েলিদের ওপর হামলার চেষ্টা হতে পারে, বিশেষ করে শাব্বাত ও ইহুদিধর্মীয় ছুটির সময়ে।
সাম্প্রতিককালে ইরানে ইসরায়েলের ১২ দিনের হামলার জেরে ‘পাল্টা আক্রমণের আশঙ্কা’ এবং গাজায় চলমান অভিযানের কারণে বৈশ্বিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে এ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত এ পর্ষদ জানায়, সাম্প্রতিককালে ইরানে ইসরায়েলের ১২ দিনের হামলার জেরে ‘পাল্টা আক্রমণের আশঙ্কা’ এবং গাজায় চলমান অভিযানের কারণে বৈশ্বিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে এ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, অনেক দেশ ও মানবাধিকার সংগঠন গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে এখন গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করছে।
২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে আমিরাত। এটি ছিল মিসর (১৯৭৯) ও জর্ডানের (১৯৯৪) পর তৃতীয় আরব দেশ, যারা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়। ২০২২ সালে উভয় দেশ একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিও সই করে।
আরও পড়ুননারীদের নিয়ে বারে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আচরণ, আমিরাতের ক্ষোভে রাষ্ট্রদূতকে ফেরত নিচ্ছে ইসরায়েল৩০ জুলাই ২০২৫২০২২ সালের জুন থেকে দুবাই ও তেল আবিবের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ার পর ব্যবসা ও পর্যটনের ক্ষেত্রেও সম্পর্ক গভীর হয়েছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বরাবর বলে আসছেন, আরব আমিরাত ইসরায়েলিদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ দেশগুলোর একটি।
তবে চলতি বছরের মার্চে আমিরাতে এক ইসরায়েলি-মলদোভান রাবি জিভি কোগানকে হত্যার দায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন দেশটির একটি আদালত।
সর্বশেষ এনএসসির সতর্কতা ইঙ্গিত দিচ্ছে, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। এর আগে এ সপ্তাহেই আমিরাত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত শেলির বিরুদ্ধে তিনটি বিতর্কিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক অভিযোগ করেছে।
আরও পড়ুনইসরায়েল ‘সন্ত্রাস’ ছড়াচ্ছে, নিরাপত্তা পরিষদে মুখ ফসকে বললেন মার্কিন দূত২১ জুন ২০২৫ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, শেলি একাধিকবার অশোভন আচরণ করেছেন ও আমিরাতের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন।
টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়, আবুধাবির একটি বারে শেলি এমন আচরণ করেন, যা আমিরাতের কর্মকর্তারা ‘সীমা অতিক্রম’ বলে বর্ণনা এবং তাঁর আচরণকে ‘অমর্যাদাকর’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
আরও পড়ুনইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করল ব্রাজিল২৯ মে ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র ক টন ত ক র একট সতর ক
এছাড়াও পড়ুন:
শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার উত্তমপুর গুচ্ছগ্রাম এলাকায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে আদর্শগ্রাম নূরানী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেনের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকালে মাদ্রাসায় কোচিংয়ে পড়তে গেলে শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ওই শিক্ষার্থীর উপর যৌন নির্যাতন চালান বলে জানিয়েছেন শিশুটির মা।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে বৃষ্টি হওয়ায় মাদ্রাসার কোচিংয়ে মাত্র চারজন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়। তাদের মধ্যে দুইজনকে ছুটি দিয়ে দুইজনকে মাদ্রাসায় রেখে দেন শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন। তাদের মধ্যে একজন ছেলে ও ভুক্তভোগী ছিল মেয়ে। শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ছেলেটিকে কৌশলে মাদ্রাসার রুম ঝাড়ু দিতে পাঠিয়ে দেন। মেয়েটিকে তার কোলের উপর বসিয়ে অশালীন আচরণ করেন। মাদ্রাসার পাশের ভবনের কক্ষ থেকে একটি মেয়ে সেই দৃশ্য দেখে ফেলেন।
আরো পড়ুন:
অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন, থানায় মামলা
বানরের সহযোগিতায় ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচলো শিশু
পরে শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ওই শিশুকে মাদ্রাসায় তার বিশ্রাম কক্ষে নিয়ে যৌন নির্যাচন চালান। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে তাকে ট্যাবলেট খাইয়ে দিয়ে মুখের ভিতরে কাপড় ঢুকিয়ে আবারো যৌন নির্যাচন চালান। এরপর কক্ষটি তালা দিয়ে অন্যত্র চলে যান। শিশুটি চিৎকার করলে অপর শিক্ষার্থী তালা খুলে তাকে বাইরে বের করে আনে।
এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে মাদ্রাসায় ভাঙচুর চালায়। এর আগেও শাহাদাৎ হোসেন কয়েকবার শিশু শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাকে ফাঁসাতে এবং প্রতিষ্ঠানটি শেষ করে দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঢাকা/অলোক/বকুল