নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জবিতে বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকের অবাধ বিচরণ
Published: 27th, August 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ক্যাম্পাসে অবাধ বিচরণ করছেন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী খাতুন। বহিষ্কারের একদিন না পেরোতেই তার এমন উপস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত তাকে জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ক্যাফেটেরিয়ার আশেপাশে ও কাঁঠালতলায় ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে।
আরো পড়ুন:
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত
জবি বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বরখাস্ত, ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
শিক্ষার্থীরা বিষয়টিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতি প্রকাশ্য অবজ্ঞা হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া শিক্ষিকাকে দেখে আমরা হতবাক। এটি তার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রমাণ ও প্রশাসনের কার্যকারিতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড.
তবে সহযোগী অধ্যাপক ফেরদৌসী খাতুনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মিটিং এ আছেন বলে জানান তারা।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ফেরদৌসী খাতুনকে সাময়িকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত ও ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আদেশে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে জালিয়াতি, মূল্যায়নে স্বেচ্ছাচারিতা, সহকর্মী ও কর্মকর্তাদের হুমকি-ধামকি এবং অশালীন ভাষায় কটূক্তির মতো অসদাচরণের বিষয় উল্লেখ ছিল।
এর আগেও, তার বিরুদ্ধে নিয়োগ ও পদোন্নতিতে অনিয়ম, ভিন্ন নামে গবেষণা প্রকাশ, নিয়মিত ক্লাস না নেওয়া, ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্বে গাফিলতি, সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ উঠেছিল। এসব কারণে বিভাগীয় শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বরখ স ত বরখ স ত
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’