ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির সুযোগ আছে: ব্রান্ড ফোরাম
Published: 3rd, September 2025 GMT
বৈশ্বিক ফ্যাশন শিল্পে টেকসই সাপ্লাই চেইন জোরদার করার লক্ষ্যে ব্র্যান্ড ফোরাম ও বিজিএমইএর প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সংগঠন দুটি টেকসই সাপ্লাই চেইনের জন্য অংশীদারত্ব জোরদার করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির সুযোগ আছে বলে বৈঠকে জনিয়েছে ব্রান্ড ফোরাম।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে এ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ৪০টির বেশি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল—পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে অংশীদারত্বমূলক কৌশল এবং টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া।
বৈঠকে বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে সংগঠনটির পক্ষে অংশ নিয়েছেন প্রথম সহ-সভাপতি সেলিম রহমান, সহ-সভাপতি মো.
সভায় টেকসই সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে পোশাক ব্র্যান্ডগুলো এবং বিজিএমইএ কোন কোন ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরো জোরদার করতে পারে, সে বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়। এছাড়া, পোশাক শিল্পের জন্য বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, সমন্বিত আচরণ বিধি প্রবর্তন, পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, শ্রম সংস্কার, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি, জিএসপি প্লাস থ্রেশহোল্ডের চ্যালেঞ্জসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ব্র্যান্ডদের পক্ষ থেকে টেকসই সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে লজিস্টিক উন্নয়ন, এনবিআর ও কাস্টমস-বিষয়ক জটিলতাগুলো নিরসন, টেকসই ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শ্রম পরিবেশ তৈরি এবং পরিবেশগত সাসটেইনেবিলিটির ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে বিজিএমইএর অন্যতম এজেন্ডা ছিল— পোশাক শিল্পের জন্য সমন্বিত আচরণবিধি প্রণয়নে পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর সহযোগিতা ও সমর্থন পাওয়া, যা সাপ্লাই চেইনে সকল অংশীদারকে উপকৃত করবে।
বিজিএমইএর পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে দেখান যে, একটি সমন্বিত আচরণবিধি কীভাবে নিরীক্ষা প্রক্রিয়া সহজতর করে এবং কারখানার ওপর চাপ কমিয়ে শিল্পকে আরো নৈতিক, টেকসই ও দায়িত্বশীল করে তুলতে পারে।
আলোচনায় শ্রম সংস্কার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায়। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান সভায় বাংলাদেশে শ্রম সংস্কারের সাম্প্রতিক অগ্রগ্রতি তুলে ধরে বলেন, এই সংস্কারগুলো শুধু আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণের জন্যই নয়, বরং একটি টেকসই ও নিরাপদ শিল্প পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য করা হচ্ছে।
তিনি ব্র্যান্ডগুলোকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের এই ইতিবাচক পরিবর্তনে অংশীদার হিসেবে কাজ করার আহবান জানান।
বৈঠকে বিজিএমইএর নেতারা বাংলাদেশ থেকে পোশাক সোর্সিং বৃদ্ধি করা এবং আরো উদ্ভাবনী উচ্চ মানের পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশে সরবরাহকারীদের সাথে অংশীদারত্ব জোরদার করার জন্য ব্র্যান্ডদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্র্যান্ড প্রতিনিধিরা বলেছেন, শিল্পে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির বিশাল সুযোগ রয়েছে। তারা বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউএফটি) টেকনিক্যাল ডিজাইন সেকশন খোলা এবং কারখানা পর্যায়ে তরুণ ফ্যাশন ডিজাইনারদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। এটি বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের কাছে ব্যান্ডগুলোর অন্যতম প্রত্যাশা।
বিজিএমইএর নেতারা পোশাক শিল্পকে আরো প্রতিযোগিতামূলক এবং নৈতিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য শিল্পে বেটার প্রাইসিং মডেল, ইফিশিয়েন্সি মডেল প্রণয়নসহ শিল্পের প্রতিটি ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের পাশে এগিয়ে আসার জন্য পোশাক ব্র্যান্ডগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে তাদের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব জ এমইএর ব জ এমইএ পর ব শ র জন য র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বিজিএমইএ-এনপিও সমঝোতা স্মারক
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে উৎপাদনশীলতা, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা বাড়াতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের (এনপিও) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিজিএমইএ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
শুল্ক হ্রাসে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই, আরো কমাতে আলোচনার পরামর্শ
বিজিএমইএ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৮৭.৫০ শতাংশ
বিজিএমইএ জানায়, সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, পোশাক শিল্পকে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ যুগের উপযোগী করে তুলতে যৌথভাবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সেমিনার ও পরামর্শ সেবা পরিচালনা করবে বিজিএমইএ ও এনপিও। পাশাপাশি, উৎপাদনশীলতা ও অপারেশনাল উৎকর্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৫ এস, কাইজেন, লিন ম্যানুফেকচারিংরের মতো আধুনিক পদ্ধতি প্রয়োগে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
চুক্তির অংশ হিসেবে প্রতি বছর তিনটি তৈরি পোশাক কারখানাকে ‘মডেল এন্টারপ্রাইজ’ হিসেবে বাছাই করা হবে এবং এনপিওর কারিগরি সহায়তায় এসব কারখানায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া, উভয় সংস্থা এশিয়ান প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের সহায়তায় গবেষণা ও সক্ষমতা উন্নয়নমূলক উদ্যোগেও একসাথে কাজ করবে।
এনপিও কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বিজিএমইএ পরিচালক জোয়ারদার মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম এবং এনপিও সভাপতি মো. নুরুল আলম।
বিজিএমইএ প্রতিনিধি বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিবর্তন, প্রযুক্তিগত রূপান্তর এবং সাপ্লাই চেইনের নতুন বাস্তবতায় ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। শুধুমাত্র কম খরচের ওপর নির্ভর না করে, এখন প্রয়োজন গুণগত মান, দক্ষতা, গতি ও উদ্ভাবনের সমন্বয়।
বিজিএমইএ পরিচালক জোয়ারদার মোহাম্মদ হোসনে কমার আলম বলেন, “বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের পথে এগিয়ে নিতে আমাদের উৎপাদন ব্যবস্থায় ডিজিটাল প্রযুক্তি, আইওটি ও ইনোভেশন সংযুক্ত করা জরুরি। বিজিএমইএ ও এনপিওর এই অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের টেকসই, আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক শিল্পে রূপান্তরের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।”
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ