ডাকসুর ভিপি-জিএস দু’জনই বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার ছাত্র
Published: 10th, September 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে বিজয়ী দুইজনের বাড়ি পার্বত্য চট্টগ্রামে। তারা দুইজনই চট্টগ্রাম বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচিত ভিপি মো.
আরো পড়ুন:
সারা দেশে ছাত্রশিবিরের ২ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা
ডাকসুর ১২ সম্পাদক পদে একটিতেও নেই ছাত্রদল
জিএস এস এম ফরহাদের বাড়ি রাঙ্গামাটির পার্বত্য জেলায়। সাদিক কায়েম ও এস এম ফরহাদ চট্টগ্রাম বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ আবু সালেহ মুহাম্দ ছলিমুল্লাহ।
শিক্ষা জীবনে মেধাবী সাদিক কায়েমের জন্ম চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়। তবে তার বাবার ব্যবসা সূত্রে তিনি বড় হয়েছেন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায়। খাগড়াছড়িতে সাদিক কায়েমের বাবা ব্যবসা করেন। সাদিক কায়েমের প্রাথমিক শিক্ষা খাগড়াছড়িতেই হয়। তিনি খাগড়াছড়ি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন। পরে তিনি চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী।
জিএস এস এম ফরহাদ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার সন্তান। তার জন্ম কাপ্তাই লেক আর সবুজ পাহাড় ঘেরা মাইনি উপজেলায়। মাইনি উপজেলার গাথাছড়া বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন। এরপর তিনি ভর্তি হন চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসায়। এই মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু সালেহ মুহাম্দ ছলিমুল্লাহ জানিয়েছেন, সাদিক কায়েম ও এস এম ফরহাদ এই মাদ্রাসার ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষা জীবনে তারা অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী।
এই মাদ্রাসার দুই সাবেক শিক্ষার্থী ডাকসু নির্বাচনে শীর্ষ পদে নির্বাচিত হওয়ায় মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আনন্দ প্রকাশ করেন।
ঢাকা/রেজাউল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল য় প স কর
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।