চাকসুর ফলাফল: ২ জন বাদে সবাই শিবিরের
Published: 16th, October 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে নির্বাচিত ২৬টি পদের মধ্যে এজিএস এবং সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদ ব্যতীত ২৪ পদে বিজয়ী হয়েছে ছাত্রশিবির মনোনীত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে এ ফলাফল করেন চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
এই বিজয় জুলাই যোদ্ধাদের, শিক্ষার্থীদের: শিবির সভাপতি
ফলাফলে দেখা গেছে, সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৭ হাজার ৯৮৩টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ইব্রাহিম হোসেন রনি। ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট পেয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়।
৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জয়ী হয়েছেন শিবির প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব। ২ হাজার ৭২৪ ভোট পেয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের শাফায়াত হোসেন।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ৭ হাজার ১৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান তৌফিক। ৫ হাজার ৪৫ ভোট পেয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরের সাজ্জাদ হোছন মুন্না।
খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে ৪ হাজার ৬৩৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের মোহাম্মদ শাওন। ৪ হাজার ২৫৩ ভোট পেয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আজহারুল ইসলাম বিপ্লব।
সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে ৪ হাজার ৯২৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তামান্না মাহাবুব প্রীতি। ৪ হাজার ৪৯৪ ভোট পেয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরের শাহ পরাণ মারুফ।
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৫ হাজার ৩২২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন শিবিরের হারেস মাতাব্বর। ২ হাজার ৫৭৪ ভোট পেয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্রের তানজির রহমান।
সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৬ হাজার ৯৮১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন শিবিরের জিহাদ আহনাফ। ৩ হাজার ১৭৬ ভোট পেয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের পার্থ চৌধুরী।
দপ্তর সম্পাদক পদে ৩ হাজার ২৫৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন শিবিরের আব্দুল্লাহ আল নোমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্রের তাহসান হাবিব পেয়েছেন ৩ হাজার ২৩৬ ভোট।
সহ-দপ্তর সম্পাদক পদে ৬ হাজার ৯৮২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের জান্নাতুল আদন নুসরাত। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্রের আলীমুল শামীম রাব্বি ১ হাজার ৫৮ ভোট পেয়েছেন।
সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে ৪ হাজার ২২৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন শিবিরের প্যানেলের তাহসিনা রহমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্রের শুভ হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৩১৬ ভোট।
গবেষণা ও উদ্ভাবন সম্পাদক পদে ৫ হাজার ৬২২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন শিবিরের তানভীর আঞ্জুম শোভন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভয়েস অব সিউ প্যানেলের জালাল উদ্দিন পেয়েছেন ৩ হাজার ১০৬ ভোট।
বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি পদে ৬ হাজার ১২৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন শিবিরের মাহবুবুর রহমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র থেকে জামাল হোসেন ২ হাজার ৪৮০ ভোট পেয়েছেন।
ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে ৬ হাজার ১৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের প্যানেলের নাহিমা আক্তার দ্বীপা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বামজোট সমর্থিত বৈচিত্র্যের ঐক্য প্যানেলের সুমাইয়া শিকদার ৩ হাজার ৮২৬ ভোট পেয়েছেন।
সহ-ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে ৫ হাজার ৯৩৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবির সমর্থিত প্যানেলের জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্রের মাইশা মেহজাবিন তুবা ৩ হাজার ১১০ ভোট পেয়েছেন।
স্বাস্থ্য সম্পাদক পদে ৫ হাজার ১১ পদে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের আফনান হাসান ইমরান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্রের একেএম হাসিবুল কবির পেয়েছেন ২ হাজার ৮১০ ভোট।
মুক্তিযোদ্ধা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ৪ হাজার ৮৬৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের মোনায়েম শরীফ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভয়েস অব সিইউ প্যানেলের রবিউল হাসান শাফি ১ হাজার ৭৯৫ ভোট পেয়েছেন।
ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক পদে ৪ হাজার ৯৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের মেহেদি হাসান সোহান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের শ্রুতিরাজ চৌধুরী পেয়েছেন ২ হাজার ২৬৭ ভোট।
যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পদে ৫ হাজার ৬৬৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের ইসহাক ভূঁঞা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের সায়েম উদ্দিন আহমদ ৩ হাজার ৯৫ ভোট পেয়েছেন।
সহ-যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পদে ৫ হাজার ৮১৬ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের ওবায়দুল সালমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের ইয়াসিন আরাফাত ২ হাজার ৬৭৭ ভোট পেয়েছেন।
আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদে ৭ হাজার ৩৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের ফজলে রাব্বি তাওহিদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আব্দুল্লাহ আল ছাকিব ৩ হাজার ১৯৪ ভোট পেয়েছেন।
পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৬ হাজার ৫৮৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন শিবিরের মাসুম বিল্লাহ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্রের মিনহাজুল ইসলাম পেয়েছেন ২ হাজার ২৯৬ ভোট।
পাঁচজন নির্বাহী সদস্যের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ১১৫ ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছেন জান্নাতুল ফেরদাউস সানজিদা, ৪ হাজার ৭৮৯ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন আদনান শরিফ, ৪ হাজার ৪১৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন আকাশ দাশ, ৪ হাজার ৪১২ ভোট পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন সালমান সাকিব এবং ৪ হাজার ৩১২ ভোট পেয়ে পঞ্চম হয়েছেন সোহানুর রহমান সোহান। তারা সবাই শিবির সমর্থিত প্যানেলের।
চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৯০৮ জন। এর মধ্যে শুধু চাকসুর ২৬টি পদে লড়েছেন ৪১৫ জন প্রার্থী। চাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ২৩ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ২২ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সবচেয়ে বেশি পাঁচটি নির্বাহী সদস্য পদে লড়েছেন ৮৫ জন।
অন্যদিকে, ১৪টি হল ও একটি হোস্টেল সংসদে লড়েছেন ৪৯৩ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নয়টি ছাত্র হলের প্রার্থী ছিলেন ৩৫০ জন এবং পাঁচটি ছাত্রী হলের প্রার্থী ছিলেন ১২৩ জন। এছাড়া একমাত্র শিল্পী আব্দুর রশিদ চৌধুরী হোস্টেল সংসদে প্রার্থী ছিলেন ২০ জন।
চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৫ হাজার ৫২১ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ১৬ হাজার ৮৪ জন এবং ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৩২৯ জন। সে হিসাবে, ছাত্র ভোটার শতকরা ৫৮.৪৭ শতাংশ এবং ছাত্রী ভোটার ৪১.১৭ শতাংশ।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ন র ব চ ত হয় ছ ন শ ব র র ম স বতন ত র র ছ ত রদল র সমর থ ত র রহম ন ফল ফল
এছাড়াও পড়ুন:
চাকসু নির্বাচন: চার হলের ভিপি-জিএস হলেন যারা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এ গণনার কার্যক্রম শুরু হয়। গণনার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ হচ্ছে সিসি ক্যামেরায়, প্রদর্শন করা হচ্ছে সব কেন্দ্রের এলইডি স্কিনে।
আরো পড়ুন:
প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে রাকসু, রাত পোহালেই ভোট
চাকসুর ফল: এক কেন্দ্রে ভিপি-এজিএসে এগিয়ে ছাত্রদল, জিএসে বাম
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ি, পাঁচটি কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা ডিন কার্যালয়ে ভোট গণনা শেষে সেখান থেকেই আলাদাভাবে হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। আর চাকসুর ফল ঘোষণা হবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেছিলেন, “ভোট গণনার পুরো বিষয়টি সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রের এলইডি স্কিনে প্রদর্শন করা হচ্ছে। কোনো কারণে স্কিন বন্ধ হয়ে গেলে ভোট গণনাও বন্ধ রাখা হবে।”
তিনি বলেন, “ওএমআর পদ্ধতিতে ভেন্ডর মেশিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল- এই দুই প্রক্রিয়ায় ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। পুরোদমে ভোট গণনার কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব ফলাফল ঘোষণা করা হবে।”
ইতোমধ্যে হল সংসদের ভোটের ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়েছে।
মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল
চাকসু নির্বাচনে মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল সংসদের ফলাফল রাত পৌনে ১টায় ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ফলাফলে ১৮২ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) হয়েছেন তাজিন ইবনে হাবিব, ১৪৪ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হয়েছেন সাদমান আল-তাছিন এবং ২৯০ ভোট পেয়ে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) হয়েছেন শাখাওয়াত হোসেন।
হলটিতে মোট ভোটার ছিলেন ৫১৬ জন। হলটির কেন্দ্র ছিল বিজ্ঞান অনুষদে।
সোহরাওয়ার্দী হল
সোহরাওয়ার্দী হল সংসদের ফলাফল রাত ১টার পর ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ঘোষিত ফলাফলে ভিপি হয়েছেন নেয়ামত উল্লাহ ফারাবি, জিএস হয়েছেন নুরন্নবী সোহান এবং এজিএস হয়েছেন রেসালাতুর রহমান।
এ হলে ছাত্রশিবিরের পুরো প্যানেল বিজয়ী হয়েছে।
এফ রহমান হল
এরপর এফ রহমান হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ৩৬৯ ভোট পেয়ে ভিপি হয়েছেন শাহরিয়ার সোহাগ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রবিউল পেয়েছেন ৩৪৩ ভোট।
৩৭৯ ভোট পেয়ে জিএস হয়েছেন মো. তামিন চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. জাবের আহমদ পেয়েছেন ৩২ ভোট।
এছাড়া ২৯৮ ভোট পেয়ে এজিএস হয়েছেন সাইদুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইফুর রহমান পেয়েছেন ২৬০ ভোট।
শাহজালাল হল
শাহজালাল হল সংসদের ফলাফল রাত দেড়টার দিকে ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, হলটিতে ভিপি পদে ৯৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আলাউদ্দিন। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী মামুনুর রশিদ পেয়েছেন ৭৩৪ ভোট।
৬৯৭ ভোট পেয়ে জিএস হয়েছেন রায়হান চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াহিদুল ইসলাম পেয়েছেন ৬৭৩ ভোট।
এছাড়া ১১০১ ভোট পেয়ে এজিএস হয়েছেন ইমতিয়াজ জাবের। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল্লাহ আল নোমান পেয়েছেন ৫৯১ ভোট।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী