১০ বছর আগে নীরজ ঘেওয়ানের ‘মাসান’ দিয়ে পরিচিতি পান শ্বেতা ত্রিপাঠি। পরের এক দশকে তাঁকে দেখা গেছে ‘মির্জাপুর’, ‘ইয়ে কালি কালি আঁখে’, ‘মেড ইন হেভেন’, কালকূট’ ইত্যাদি আলোচিত সিরিজে। প্রযোজক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি। ‘মুঝে জান না কহো মেরি জান’-এর পর শ্বেতার প্রযোজনা সংস্থা বান্দরফুল ফিল্মসের ব্যানারে এবার তৈরি হবে নতুন ছবি ‘নাভা’।

সুন্দরবনকে ঘিরে রহস্য-ভয়ের গল্প
আকাশ মাহিমির চিত্রনাট্যে ‘নাভা’র গল্প আবর্তিত হয়েছে সুন্দরবনের জলাভূমিকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রীয় চরিত্র তারা, যিনি বহু বছর পর ফিরছেন নিজের পূর্বপুরুষের বাড়িতে। ফেরার পরই তিনি জড়িয়ে পড়েন বহু প্রজন্মজুড়ে চলা এক রহস্যে; যেখানে আছে নদী দেবতার উপাখ্যান, গোপন পারিবারিক অতীত আর মিথ।

লোককথা ও হররের আবহে দর্শকদের রোমাঞ্চকর এক গল্প উপহার দিতে চান শ্বেতা। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমি বৈচিত্র্যময় গল্প উপহার দিতে চাই। আগের ছবি ভালোবাসার গল্প বলেছিল, এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন আবেগের জগতে ঢুকতে চেয়েছি। লোককথায় বোনা হরর মানুষের মনে দাগ কাটতে পারে। সুন্দরবন এখানে শুধু পটভূমি নয়; মূল চরিত্র, যে রক্ষা করে আবার ভয়ও দেখায়।’

শ্বেতা ত্রিপাঠি। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র গল প

এছাড়াও পড়ুন:

লোনাপানির সুন্দরবনের নিচে লুকিয়ে আছে মিঠাপানির ভান্ডার

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে পানি মানেই একরাশ তিক্ততার গল্প। নোনাজল, আর্সেনিক দূষণ, নদীর লবণাক্ততার বিস্তার—সব মিলিয়ে এই অঞ্চলের মানুষ বছরের বেশির ভাগ সময়ই নিরাপদ পানির সংকটে ভোগেন। খুলনা, সাতক্ষীরা আর বাগেরহাটজুড়ে চিংড়িঘের, ভাঙন, খরা ও লবণাক্ত নদীর পানি যেন জীবনের স্থায়ী সঙ্গী।

এই বাস্তবতার মধ্যে আন্তর্জাতিক একদল গবেষকের নতুন দাবি যেন উপকূলের বুকেই এক অচেনা আশার ঝরনা বইয়ে দিয়েছে। তাঁদের গবেষণায় দেখা গেছে, মাটির বহু গভীরে লুকিয়ে আছে দুটি বিশাল মিঠাপানির ভান্ডার। হাজার বছর আগের সেই পানি আজও প্রায় অক্ষত অবস্থায় টিকে আছে।

গবেষণাটি গত শুক্রবার খ্যাতনামা বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশনসে প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, নিউ মেক্সিকো ইনস্টিটিউট অব মাইনিং অ্যান্ড টেকনোলজি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা খুলনা শহর থেকে সুন্দরবনের দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আধুনিক ভূ-তড়িৎ-চৌম্বকীয় প্রযুক্তি, ম্যাগনেটোটেলুরিক ব্যবহার করে ভূগর্ভের অভ্যন্তরীণ গঠন পরীক্ষা করেন।

সুন্দরবনে প্যালিও ওয়াটারের দুটি উৎস পাওয়া গেছে। প্যালিও ওয়াটার হলো প্রাচীন ভূগর্ভস্থ জল, যা হাজার বছরের বেশি সময় ধরে আটকে থাকে। এটি প্রাচীন সুন্দরবনের বয়স ও গঠনের ধারণাকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে। ইসমে আজম, সুন্দরবনবিষয়ক লেখক ও গবেষক

গবেষকদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, খুলনার উত্তরের অংশে প্রায় ২০০ থেকে ৮০০ মিটার গভীরে বিস্তৃত আছে বিশাল এক মিঠাপানির স্তর। এটি প্রায় ৪০ কিলোমিটার বিস্তৃত এবং পানির লবণাক্ততা এত কম যে সরাসরি মিঠাপানি হিসেবে চিহ্নিত করা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পানি তৈরি হয়েছিল শেষ বরফযুগে, যখন সমুদ্রপৃষ্ঠ আজকের তুলনায় প্রায় ১২০ মিটার নিচে ছিল। তখন নদীগুলো গভীর উপত্যকা তৈরি করে সমুদ্রের দিকে ছুটে যেত এবং সেই বালুমিশ্রিত নদীপথে প্রবেশ করা বৃষ্টির পানি হাজার বছর ধরে ভূগর্ভে সঞ্চিত থাকত।

সুন্দরবনের ভেতরে পাওয়া গেছে দ্বিতীয় আরেকটি মিঠাপানির ভান্ডার। এটি আকারে তুলনামূলক ছোট এবং গভীরতাও কম, কিন্তু লবণাক্ততার মাত্রা এতটাই নিচে যে এ অঞ্চলেও নিরাপদ পানির আরেকটি সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এই দুটি ভান্ডারের মাঝখানে আছে একটি প্রশস্ত লবণাক্ত পানির স্তর, যা গঙ্গার প্রাচীন নদীখাত ভরাট হয়ে তৈরি হয়েছে। বরফযুগের পর সমুদ্রপৃষ্ঠ বাড়তে শুরু করলে এই এলাকাগুলো লবণাক্ত কাদা-মাটিতে ঢেকে যায় এবং এখন তা স্থায়ী লবণাক্ত স্তর হিসেবে ভূগর্ভে রয়ে গেছে।

গুগল স্যাটেলাইট মানচিত্রে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লোনাপানির সুন্দরবনের নিচে লুকিয়ে আছে মিঠাপানির ভান্ডার
  • সুন্দরবনে বাঘ-হরিণ শিকার রোধে বসানো ক্যামেরা ভাঙল দুর্বৃত্তরা