বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান দুটি চালিকা শক্তি হলো তৈরি পোশাকশিল্প ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। বৈশ্বিক মন্দা বা অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময়ও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে রেমিট্যান্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিবছর গড়ে ২০ থেকে ২২ বিলিয়ন ডলার দেশে আসে, যা আমদানি ব্যয় মেটানো, টাকার মান ধরে রাখা ও গ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

তবে অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো বৈচিত্র্য। যখন কোনো দেশ মাত্র একটি বা দুটি খাতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তখন বাহ্যিক আঘাতে সেই অর্থনীতি সহজেই বিপর্যস্ত হতে পারে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও রেমিট্যান্স–নির্ভরতার ঝুঁকি এখন বাস্তবেই চোখে পড়ছে।

সবচেয়ে বড় ঝুঁকিগুলোর একটি হলো বৈশ্বিক ভূরাজনীতি। সৌদি আরব, ইউএই বা কুয়েতের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় রাজনৈতিক অস্থিরতা, যুদ্ধ বা তেলের দামের পতন হলে বাংলাদেশে কর্মী ফেরত আসার আশঙ্কা থাকে। এতে রেমিট্যান্স কমে যাবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপে পড়বে। অতীতে লিবিয়া ও ইরাক সংকটে এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা গেছে।

আরেকটি সমস্যা হলো অদক্ষ শ্রমিকের আধিক্য। বাংলাদেশ থেকে বিপুল জনশক্তি বিদেশে গেলেও অধিকাংশই অদক্ষ হওয়ায় তাঁদের আয় কম। ভবিষ্যতে অটোমেশন ও প্রযুক্তিনির্ভর শ্রমবাজারে অদক্ষ কর্মীর চাহিদা হ্রাস পেলে বাংলাদেশ বড় সংকটে পড়তে পারে।

রেমিট্যান্স সহজে দেশে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন শিল্পায়নের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে এই অর্থ ভোগ, জমি বা বাড়ি কেনায় ব্যয় হয়। ফলে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বাড়ে না। অর্থনীতিবিদেরা এটিকে ‘ডাচ ডিজিজ’–এর লক্ষণ বলে সতর্ক করে থাকেন।

রেমিট্যান্সের আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো হুন্ডি। ডলারের বাজারদরের পার্থক্যের কারণে অনেক প্রবাসী অবৈধপথে অর্থ পাঠান। এতে রাষ্ট্র বৈদেশিক মুদ্রা হারায় এবং অর্থনীতির আনুষ্ঠানিক কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া দেশের ভেতরে সীমিত সুযোগের কারণে দক্ষ ও মেধাবী তরুণেরা বিদেশমুখী হওয়ায় দীর্ঘ মেয়াদে মেধা পাচারের ঝুঁকিও বাড়ছে।

এই সংকট মোকাবিলায় শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানো, রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি, প্রবাসীদের অর্থ উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগে উৎসাহ দেওয়া ও নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানের মতো পদক্ষেপ জরুরি। রেমিট্যান্স বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে এটিকে একমাত্র ভরসা হিসেবে দেখা ঠিক নয়। দেশের ভেতরেই পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বাড়লে অর্থনীতি স্থায়ীভাবে শক্তিশালী ও ঝুঁকিমুক্ত হতে পারবে।

হেনা শিকদার শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ই–মেইল: [email protected]

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ৪ পদে নিয়োগ

কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ১০ম থেকে ১৬তম গ্রেডের ৪টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ৮০ শতাংশ পদ স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত থাকবে। আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫।

পদের নাম ও বিবরণ

১. কালচারাল অফিসার

পদসংখ্যা: ১

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতকোত্তর বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ১৬,০০০-৩৮,৬৪০ (১০ম গ্রেড) টাকা

২. সংগীত শিক্ষক

পদসংখ্যা: ১

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক ডিগ্রি এবং সংশ্লিষ্ট কাজে অন্যূন ৩ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা (১৩ম গ্রেড)

আরও পড়ুন৫০তম বিসিএসে প্রিলির নম্বরে এল পরিবর্তন, কমেছে ৩ বিষয়ে, বৃদ্ধি ৩টির৭ ঘণ্টা আগে

৩. নৃত্য শিক্ষক

পদসংখ্যা: ১

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক ডিগ্রি এবং সংশ্লিষ্ট কাজে অন্যূন ৩ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা (১৩ম গ্রেড)

৪. অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক

পদসংখ্যা: ১

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং কম্পিউটার ব্যবহারসংক্রান্ত প্রসেসিং, ডেটা এন্ট্রি, টাইপিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন গতি বাংলায় প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন ২০ শব্দ এবং ইংরেজিতে প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন ৩০ শব্দ।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৯৩০০-২২,৪৯০ টাকা (১৩ম গ্রেড)

বয়সসীমা

১৮–৩২ বছর

আবেদনের নিয়ম

আবেদনকারীকে পরিচালক, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কক্সবাজার বরাবর ‘নমুনা ছক’ মোতাবেক পূর্ণ নাম, স্বাক্ষরসহ পূরণকৃত আবেদনপত্র, আবেদন ফি জমাদানের ব্যাংক ড্রাফটের কপি ও অন্যান্য কাগজ সংযুক্ত করে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কক্সবাজার, কার্যালয়ে সরাসরি বা ডাকযোগে পৌঁছাতে হবে। আবেদনকারীকে আবেদনপত্রে খামের উপরিভাগে পদের নাম লিখতে হবে এবং খামের বাঁ পাশে আবেদনকারীর পূর্ণ নাম ও ঠিকানা লিখতে হবে।

আবেদনপত্র ও প্রবেশপত্রের নমুনা কপি, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওয়েবসাইট , জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে।

আবেদন ফি

১ নম্বর পদের আবেদন ফি ২০০ টাকা;

২,৩ ও ৪ নম্বর পদের আবেদন ফি ১০০ টাকা।

পরিচালক, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কক্সবাজারের নামীয় অগ্রণী ব্যাংক, কক্সবাজার শাখায় চলতি হিসাব নং-০২০০০০০৯৫৭২৬৪–তে জমা দিতে হবে।

আবেদনের শেষ তারিখ

৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকেল ৫টা।

আরও পড়ুনসরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকেরা কর্মবিরতিতে, হচ্ছে না বার্ষিক পরীক্ষা৫ ঘণ্টা আগেনির্দেশনা ও শর্ত

১. প্রাপ্ত আবেদনপত্র বাছাইয়ের পর শুধু বৈধ ও যোগ্য প্রার্থীদের লিখিত/মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।

২. আবেদনকারীদের বৈধ ও বাতিল তালিকা ইনস্টিটিউটের নোটিশ বোর্ড, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

৩. পরীক্ষার তারিখ ও সময় উল্লেখ করে প্রবেশপত্র ডাকযোগে প্রেরণ করা করা হবে। কোনো কারণে প্রবেশপত্র না পেয়ে থাকলে পরীক্ষার তিন দিন আগে অফিস থেকে ডুপ্লিকেট কপি সংগ্রহ করা যাবে।

আরও পড়ুনবিএনসিসিতে বিভিন্ন গ্রেডে নিয়োগ, পদসংখ্যা ৩৭১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ