সাড়ে ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ, দম্পতি গ্রেপ্তার
Published: 16th, November 2025 GMT
বিদেশে পাঠানো ও ব্যবসার কথা বলে প্রতারণা করে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মাদারীপুরের এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে যশোরের বেনাপোলের সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর গ্রামের জহিরুল ইসলাম (৪০) ও তাঁর স্ত্রী নুর নাহার (৩৪)।
আজ রোববার দুপুরে মাদারীপুর আদালতে হাজির করা হলে আদালত এই দুজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ বলছে, তাঁরা দুজনেই সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং দেশে আত্মগোপনে থেকে কানাডার নম্বর ব্যবহার করে যোগাযোগ করতেন।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর আদালতে ২০২৩ সালে একটি প্রতারণা মামলায় জহিরুল ইসলামের এক বছর এবং ২০২৪ সালে প্রতারণা মামলায় নুর নাহারের ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায় হয়, তবে তাঁরা আত্মগোপনে ছিলেন। বিদেশে পাঠানো ও ব্যবসার কথা বলে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
দেশে আত্মগোপনে থেকে নিজেদের কানাডাপ্রবাসী পরিচয় দিতেন। যোগাযোগও করতেন কানাডার ফোন নম্বর দিয়ে। গতকাল বিকেলে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে যশোরের বেনাপোলের সীমান্ত এলাকা থেকে ওই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৬। পরে তাঁদের যশোরের কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে রাত ১০টার দিকে মাদারীপুরের রাজৈর থানায় নিয়ে আসা হয়।
এ সময় থানায় ভিড় করেন প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা। তাঁরা বলেন, এনজিওকর্মী ছিলেন নুর নাহার। ঘুরে ঘুরে লোন দেওয়া ও টাকা তোলার সুবাদে অনেকের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরবর্তী সময় বিভিন্নভাবে প্রতারণামূলক কথা বলে টাকা আত্মসাৎ করে স্বামীসহ পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগী এক আইনজীবী ইমন হোসেন বলেন, ‘আমাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কথা বলে ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তাঁরা। পরে ২১ লাখ টাকার একটি চেক দেন। সেই চেক দিয়ে মামলা করলে যশোরের র্যাব-৬ ও রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সহযোগিতায় তাঁদের যশোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, প্রাথমিকভাবে ৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে গ্রেপ্তার ওই দম্পতির বিরুদ্ধে। তাঁরা দুজনই একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর যশ র র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় সমাবেশে আহত সেই শিক্ষিকা মারা গেছেন
ঢাকায় শিক্ষকদের তিন দফা দাবির আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুরুতর অসুস্থ হওয়া ফাতেমা আক্তার (৪৫) নামে সেই শিক্ষিকা মারা গেছেন।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় তিনি রাজধানী একটি হাসপাতালের আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা জান। তিনি চাঁদপুর মতলব উত্তরের ৫ নম্বর ঝিনাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন।
আরো পড়ুন:
জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরীক্ষার খাতা অবমূল্যায়ন ও ট্যাগিংয়ের অভিযোগ
বগুড়ায় প্রভাষক পরিষদের ‘নো প্রোমোশন নো ওয়ার্ক’ কর্মসূচি
তিনি মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর এলাকার গ্রামের ঘনিয়ারপাড় গ্রামের বাসিন্দা সুরুজ মোল্লার মেয়ে ও ঠাকুরচর গ্রামের ডিএম সোলেমাননএর স্ত্রী।
এর আগে, গত ৮ নভেম্বর সমাবেশের এক পর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে তিনি প্রচণ্ড আতঙ্কে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন এবং ঘটনাস্থলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
চাঁদপুরের মতলব উত্তরের শিক্ষকরা জানান, ফাতেমা আক্তার আন্দোলনের দিন শহীদ মিনারের সামনেও সক্রিয় ছিলেন। সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ শুরু হলে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখান থেকে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। কয়েকদিন ধরে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ মারা গেছেন।
রবিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঠাকুরচর গ্রামে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল বাতেন শোক প্রকাশ করে বলেন, “আন্দোলনে আহত হওয়ার পর থেকে তিনি যে কষ্টটা সহ্য করেছেন, তা হৃদয়বিদারক। আমরা একজন নিবেদিতপ্রাণ, সৎ ও শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষিকাকে হারালাম। তার মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার মৃত্যুতে উপজেলার শিক্ষক সমাজ গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে।”
ঢাকা/অমরেশ/মেহেদী