শীতকালে ভোরে নাকি বেলা বাড়লে হাঁটা ভালো?
Published: 25th, October 2025 GMT
নিজেকে ফিট রাখতে কেউ নিয়ম করে সকালে হাঁটেন আবার কেউ সন্ধ্যায় হাঁটেন। শীতকালে সকালে বাতাস তীব্র ঠান্ডা থাকে। সকালে হাঁটতে বের হওয়া কী স্বাস্থ্যসম্মত হবে?
চিকিৎসকেরা বলেন, ‘‘সকালে হাঁটার বাড়তি কিছু সুফল রয়েছে। কারণ সকালের বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিতে নিতে হাঁটলে হাঁপানির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে। হৃৎস্পন্দনের হারও স্বাভাবিক থাকে। হজমশক্তি বাড়ে এবং অনিদ্রাজনিত সমস্যা থাকলেও সকালের দিকে হাঁটলে সুফল পাওয়া যাবে।’’
আরো পড়ুন:
বাতের ব্যথা বাড়লে করণীয়
অ্যানথ্রাক্স ঝুঁকি: ঝালকাঠিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই চলছে পশু জবাই
কিন্তু শীতকালে সকালের বাতাসে পোলেনের মাত্রা বেশি তাকে। চিকিৎসকের মত হচ্ছে, ‘‘ শীতকালে ভোর নয়, বেলা বাড়লে বা রোদ উঠলে তবেই হাঁটতে যাওয়া উচিত। খুব ভোরে হাঁটতে বের হলে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বাড়তে পারে। কিন্তু বেলায় সময় না পেলে সন্ধ্যায় কাজ থেকে ফিরে হাঁটতে হয়। সারা দিনের ব্যস্ততার শেষে হাঁটলে মানসিক চাপ অনেকটাই কমে যায়। ক্লান্ত শরীরে ফিরে আসে চনমনে ভাব। এমনকি ওজন কমাতেও সন্ধ্যাবেলায় হাঁটার জুড়ি মেলা ভার। তা ছাড়া সন্ধ্যায় সূর্যের তাপও নেই। ফলে বেশি ক্ষণ হাঁটলে ক্লান্তি কম হয়।’’
শীতকালে হাঁটতে যাওয়া আগে যা করতে হবে
শীতকালে শরীর পুরো ঢেকেই হাঁটতে যাওয়ার জন্য বাইরে বের হন।সঙ্গে গরম কাপড় রাখবেন। মাথা ঢেকে রাখুন। হাঁটতে হাঁটতে গরম অনুভূত হলে মাথার কাপড় সরিয়ে নিতে পারেন। ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করুন, তারপর গতি বাড়ান।
হাঁটার উপকারিতা
মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং ক্লান্তি কমায়
আত্ম-ধারণা এবং আত্মসম্মান উন্নত করে
মেজাজ এবং ঘুমের মান উন্নত করে
শারীরিক সুস্থতা, কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করে এবং সুস্থ পেশী ও হাড় তৈরি করে
শারীরিকভাবে সক্রিয় ব্যক্তিদের হতাশাগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি ৩০% পর্যন্ত কমে যায় এবং সক্রিয় থাকা হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে
রক্তচাপ এবং ডিমেনশিয়া সহ জ্ঞানীয় অবক্ষয়ের ঝুঁকি হ্রাস করে
হৃদরোগ, স্ট্রোক, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, কোলন এবং স্তন ক্যান্সার এবং আলঝাইমার রোগ সহ বড় ধরনের স্বাস্থ্যগত অবস্থার সম্ভাবনা ২০% থেকে ৬০% পর্যন্ত হ্রাস করে
উল্লেখ্য, হার্টের সমস্যা, হাঁপানি বা নিউমোনিয়ার মতো সমস্যা থাকলে প্রয়োজনীয় ওয়ার্মআপ ঘরেই করুন। শীতকালে সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টায় হাঁটতে বের হতে পারেন। সন্ধ্যায় ৫টা থেকে সাড়ে ৫টায়।
সূত্র: গ্রীনথাম্ব কো ইউকে
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সন ধ য য় সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
আট দশক পর দেশের মাটিতে ফিরে যাওয়া
জাপানের টোকিওর নগরকেন্দ্রের ব্যস্ত এক জায়গাজুড়ে আছে বিতর্কিত একটি শিন্তো মন্দির। জাপানে যেটা ইয়াসুকুনি মন্দির নামে পরিচিত। ১৮৬৯ সালে যাত্রা শুরু করা শিন্তো ধর্মের এই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল মূলত এক বছর আগে গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সামন্ত্রতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে আধুনিক জাপানের ভিত্তি তৈরি করে নেওয়া মেইজি পুনরুত্থানের সময় গৃহযুদ্ধে নিহত বিজয়ী পক্ষের সৈন্যদের ‘দেবতুল্য’ ভাবমূর্তি তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। ফলে বিজয়ী পক্ষের নিহত সব সৈনিকের নাম সেখানে দেবতার সারিতে সন্নিবেশিত আছে, পরাজিতদের নয়।
দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন বিসর্জন দেওয়ার বিনিময়ে পাওয়া এ রকম প্রতিদানের মধ্যে বিতর্কের কিছু থাকার কথা নয়। দীর্ঘকাল ধরে এটা নিয়ে কোনো রকম বিতর্কও ছিল না। তবে সেই হিসাব পাল্টে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সর্বোচ্চ সাজা পাওয়া জাপানের সেই সময়ের কয়েকজন নেতাকে ১৯৭০–এর দশকের শেষ দিকে ইয়াসুকুনির দেবতার তালিকায় যুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্য দিয়ে।
ফলে যুদ্ধের পুরো সময় ধরে জাপানের যে কয়েক লাখ তরুণ দেশপ্রেমে নিবেদিত থেকে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, ইয়াসুকুনির সেই ঘটনার আলোকে তাঁদেরও এখন ধরে নেওয়া হচ্ছে ‘বিতর্কিত’ হিসেবে। জাপানের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের বাইরে অন্য একটি মর্মান্তিক দিক হচ্ছে এটা।
যেকোনো যুদ্ধের বলি সর্বাগ্রে হতে হয় যুদ্ধে জড়িত কোনো একটি দেশের তরুণদের। নিজেরা না চাইলেও দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে যাঁদের সাধারণত বাধ্য করা হয়। এর পরোক্ষ ফলশ্রুতিতে নেতৃত্বের স্খলনের জন্য নেতারাই কেবল নয়, সেসব তরুণকেও চিহ্নিত করা হয় ‘খলনায়ক’ হিসেবে।
এমনটাই সম্ভবত ঘটেছে আট দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানের কয়েকজন তরুণ সৈনিকের জীবনে। তাঁদের অনেকেরই সম্ভবত জানা ছিল না কেন তাঁরা যুদ্ধে জড়িত। আর যাঁরা তাঁদের যুদ্ধের ময়দানে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সেই তরুণদের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটে, তা নিয়ে খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করার দরকার সম্ভবত নেই।
সমাধিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানিদের নামফলক