এল ক্লাসিকোর আগে রিয়াল ও বার্সেলোনা কোথায় এগিয়ে, কোথায় পিছিয়ে
Published: 26th, October 2025 GMT
টানা চার হার, চার ম্যাচে ১৬ গোল হজম—এই দৃশ্যগুলো হয়তো এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদের মাথায়। এত তারকা নিয়ে গত মৌসুমে এল ক্লাসিকোতে বার্সেলোনার কাছে আক্ষরিক অর্থেই অপদস্থ হয়েছিল রিয়াল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে এমন ভরাডুবি কোনো দলকেই স্বস্তিতে রাখে না। তার ওপর প্রতিপক্ষের তরুণ খেলোয়াড় যদি খোঁচা দিয়ে কথা বলেন, তখন সেটা যেন কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা।
সম্প্রতি সেই কাজটাই করেছেন বার্সা ফরোয়ার্ড লামিনে ইয়ামাল। ক্লাসিকোর আগেই রিয়ালকে বলেছেন ‘চোর’ ও ‘ছিঁচকাঁদুনে’। জবাবে রিয়ালের দানি কারভাহাল বলেছেন, ইয়ামালের কথায় তাঁরা বিরক্ত। প্রেক্ষাপট আর প্রতিক্রিয়া মিলিয়ে বোঝাই যায়, আজ রোববার রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যাচ শুরুর আগেই উত্তাপ ছড়িয়েছে। মানে মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে ধুন্ধুমার কিছু ঘটতেই পারে।
মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগত মৌসুমের দিকে তাকালে দেখা যায়, এল ক্লাসিকো এখন লা লিগার ভাগ্য নির্ধারণের ম্যাচে পরিণত হয়েছে। যেমন বার্সেলোনা লিগ জিতেছিল মাত্র ৪ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে। আর এল ক্লাসিকোর দুই লেগেই তারা জিতেছিল। সেই ৬ পয়েন্টই আসলে শিরোপা এনে দেয় কাতালানদের।
অন্যদিকে রিয়াল হেরেছিল মোট ৬ ম্যাচ—তার মধ্যে দুটোই এল ক্লাসিকো। শুধু তা–ই নয়, স্প্যানিশ সুপার কাপ আর কোপা দেল রেতেও বার্সার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে তারা। সব মিলিয়ে বার্সার বিপক্ষে মৌসুমজুড়ে চার ম্যাচে হেরে ঘরোয়া তিনটি ট্রফিই হারিয়েছে রিয়াল। তাই এবারের মৌসুমেও এই ম্যাচই হয়তো নির্ধারণ করবে লা লিগার ভাগ্য। ফলে দুই দলই মরিয়া, মাঠে লড়বে নিজেদের সবটা উজাড় করে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক ল স ক
এছাড়াও পড়ুন:
আট দশক পর দেশের মাটিতে ফিরে যাওয়া
জাপানের টোকিওর নগরকেন্দ্রের ব্যস্ত এক জায়গাজুড়ে আছে বিতর্কিত একটি শিন্তো মন্দির। জাপানে যেটা ইয়াসুকুনি মন্দির নামে পরিচিত। ১৮৬৯ সালে যাত্রা শুরু করা শিন্তো ধর্মের এই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল মূলত এক বছর আগে গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সামন্ত্রতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে আধুনিক জাপানের ভিত্তি তৈরি করে নেওয়া মেইজি পুনরুত্থানের সময় গৃহযুদ্ধে নিহত বিজয়ী পক্ষের সৈন্যদের ‘দেবতুল্য’ ভাবমূর্তি তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। ফলে বিজয়ী পক্ষের নিহত সব সৈনিকের নাম সেখানে দেবতার সারিতে সন্নিবেশিত আছে, পরাজিতদের নয়।
দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন বিসর্জন দেওয়ার বিনিময়ে পাওয়া এ রকম প্রতিদানের মধ্যে বিতর্কের কিছু থাকার কথা নয়। দীর্ঘকাল ধরে এটা নিয়ে কোনো রকম বিতর্কও ছিল না। তবে সেই হিসাব পাল্টে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সর্বোচ্চ সাজা পাওয়া জাপানের সেই সময়ের কয়েকজন নেতাকে ১৯৭০–এর দশকের শেষ দিকে ইয়াসুকুনির দেবতার তালিকায় যুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্য দিয়ে।
ফলে যুদ্ধের পুরো সময় ধরে জাপানের যে কয়েক লাখ তরুণ দেশপ্রেমে নিবেদিত থেকে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, ইয়াসুকুনির সেই ঘটনার আলোকে তাঁদেরও এখন ধরে নেওয়া হচ্ছে ‘বিতর্কিত’ হিসেবে। জাপানের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের বাইরে অন্য একটি মর্মান্তিক দিক হচ্ছে এটা।
যেকোনো যুদ্ধের বলি সর্বাগ্রে হতে হয় যুদ্ধে জড়িত কোনো একটি দেশের তরুণদের। নিজেরা না চাইলেও দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে যাঁদের সাধারণত বাধ্য করা হয়। এর পরোক্ষ ফলশ্রুতিতে নেতৃত্বের স্খলনের জন্য নেতারাই কেবল নয়, সেসব তরুণকেও চিহ্নিত করা হয় ‘খলনায়ক’ হিসেবে।
এমনটাই সম্ভবত ঘটেছে আট দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানের কয়েকজন তরুণ সৈনিকের জীবনে। তাঁদের অনেকেরই সম্ভবত জানা ছিল না কেন তাঁরা যুদ্ধে জড়িত। আর যাঁরা তাঁদের যুদ্ধের ময়দানে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সেই তরুণদের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটে, তা নিয়ে খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করার দরকার সম্ভবত নেই।
সমাধিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানিদের নামফলক