আগামীর বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে: সারজিস
Published: 26th, October 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, “আগামী বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে। সে লক্ষ্যে ডিসেম্বের মধ্যে জেলা, উপজেলাসহ সব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে এনসিপির কমিটি গঠন করা হবে।”
তিনি বলেছেন, “এনসিপিকে যদি শাপলা প্রতীক পেতে রাজপথে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যেতে হয়, তাহলে এনসিপি একইসঙ্গে ওই স্বেচ্ছাচারী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আন্দোলনেও যাবে। আমরা মনে করি, এ নির্বাচন কমিশন দ্বারা নির্বাচন হতে হলে নিরপেক্ষ অবস্থানটা তার কাজে এবং কথার মাধ্যমে ব্যক্ত করতে হবে। যেটা এখন পর্যন্ত তারা করছে না।”
রবিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এনসিপির জেলা ও উপজেলা সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন সারজিস আলম। সমন্বয় সভা শেষে দুপুরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, “আমরা মনে করি, আগামীর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রশ্নে বিএনপি এবং জামায়াত এককভাবে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে পারবে না। তাই, নতুন প্রজন্মের তরুণদের দল এনসিপির প্রতিনিধিত্ব আবশ্যক। জুলাই সনদ প্রশ্নে আমরা এখনো আপসহীন। অন্যান্য দল শুধু নির্বাচনমুখী আচরণ করে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। যেদিন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে ও প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে আদেশ জারি করা হবে এবং গণভোটে যদি জুলাই সনদের পক্ষে রায় আসে, সেদিন এনসিপি স্বাক্ষর করবে।”
নির্বাচনে জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এনসিপি তার জায়গা থেকে শুধু কয়েকটি আসনকে সামনে রেখে সংসদে যাওয়ার জন্য, জোট করার জন্য চিন্তা করছে না। এনসিপি মনে করে, কোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের জায়গা থেকে জুলাই সনদের প্রত্যেকটি সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতি কমিটেড থাকে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নিয়ে সম্পন্ন করার প্রতি কমিটেড থাকে, ভারতীয় আধিপাত্যবাদীর বিরুদ্ধে কমিটেড থাকে, আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিস্টদের দোসরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কমিটেড থাকে, তাহলে এই নির্বাচনে ওই কমিটমেন্টের ভিত্তিতে তাদের সঙ্গে জোট হতে পারে। কিন্তু, জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে এক পাশে রেখে শুধু সিট পাওয়ার জন্য কোনো জোট এনসিপি করবে না। আমরা মনে করি, এনসিপি তার জায়গা থেকে যদি কোনো জোট করেও ওই কমিটমেন্টের ভিত্তিতে, তারপরেও জাতীয় নাগরিক পার্টির নামে করবে এবং শাপলা প্রতীকেই করবে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক আহনাফ সাঈদ খানের সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) খায়রুল কবির, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাঈদ উজ্জ্বল ও কেন্দ্রীয় সদস্য দিদার শাহ্সহ জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মীরা।
ঢাকা/রুমন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কম ট ড থ ক জ ল ই সনদ র জন য এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
আট দশক পর দেশের মাটিতে ফিরে যাওয়া
জাপানের টোকিওর নগরকেন্দ্রের ব্যস্ত এক জায়গাজুড়ে আছে বিতর্কিত একটি শিন্তো মন্দির। জাপানে যেটা ইয়াসুকুনি মন্দির নামে পরিচিত। ১৮৬৯ সালে যাত্রা শুরু করা শিন্তো ধর্মের এই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল মূলত এক বছর আগে গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সামন্ত্রতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে আধুনিক জাপানের ভিত্তি তৈরি করে নেওয়া মেইজি পুনরুত্থানের সময় গৃহযুদ্ধে নিহত বিজয়ী পক্ষের সৈন্যদের ‘দেবতুল্য’ ভাবমূর্তি তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। ফলে বিজয়ী পক্ষের নিহত সব সৈনিকের নাম সেখানে দেবতার সারিতে সন্নিবেশিত আছে, পরাজিতদের নয়।
দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন বিসর্জন দেওয়ার বিনিময়ে পাওয়া এ রকম প্রতিদানের মধ্যে বিতর্কের কিছু থাকার কথা নয়। দীর্ঘকাল ধরে এটা নিয়ে কোনো রকম বিতর্কও ছিল না। তবে সেই হিসাব পাল্টে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সর্বোচ্চ সাজা পাওয়া জাপানের সেই সময়ের কয়েকজন নেতাকে ১৯৭০–এর দশকের শেষ দিকে ইয়াসুকুনির দেবতার তালিকায় যুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্য দিয়ে।
ফলে যুদ্ধের পুরো সময় ধরে জাপানের যে কয়েক লাখ তরুণ দেশপ্রেমে নিবেদিত থেকে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, ইয়াসুকুনির সেই ঘটনার আলোকে তাঁদেরও এখন ধরে নেওয়া হচ্ছে ‘বিতর্কিত’ হিসেবে। জাপানের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের বাইরে অন্য একটি মর্মান্তিক দিক হচ্ছে এটা।
যেকোনো যুদ্ধের বলি সর্বাগ্রে হতে হয় যুদ্ধে জড়িত কোনো একটি দেশের তরুণদের। নিজেরা না চাইলেও দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে যাঁদের সাধারণত বাধ্য করা হয়। এর পরোক্ষ ফলশ্রুতিতে নেতৃত্বের স্খলনের জন্য নেতারাই কেবল নয়, সেসব তরুণকেও চিহ্নিত করা হয় ‘খলনায়ক’ হিসেবে।
এমনটাই সম্ভবত ঘটেছে আট দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানের কয়েকজন তরুণ সৈনিকের জীবনে। তাঁদের অনেকেরই সম্ভবত জানা ছিল না কেন তাঁরা যুদ্ধে জড়িত। আর যাঁরা তাঁদের যুদ্ধের ময়দানে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সেই তরুণদের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটে, তা নিয়ে খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করার দরকার সম্ভবত নেই।
সমাধিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানিদের নামফলক