নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সাত মাস পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) এখনো কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ অনুযায়ী নতুন দলের নিবন্ধন-সংক্রান্ত গেজেট সেপ্টেম্বরে প্রকাশের কথা ছিল। তবে, কমিশন জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহের মধ্যে দল নিবন্ধন এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘শাপলা’ প্রতীক বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হবে।

রবিবার (২৬ অক্টোবর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

শাপলা প্রতীকের যে ৭ নমুনাসহ ইসিকে চিঠি দিল এনসিপি

বিলে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সাদা শাপলা

ইসি সচিব বলেন, ভোট কেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। এটি সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে। নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনও এ সপ্তাহে চূড়ান্ত হবে।

তিনি জানান, কমনওয়েলথের পাঁচ সদস্যের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচনের প্রস্তুতি, অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনাসহ কমিশনের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। এছাড়া প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে কমিশনের উদ্যোগও তারা পর্যবেক্ষণ করেছে।

আখতার আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং অতিরিক্ত তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আমরা আশা করি, এই সপ্তাহের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন হবে। তবে, পরিস্থিতি অনুযায়ী কিছু বিষয়ে সামঞ্জস্য আনতে হতে পারে।

ঢাকা/এএএম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ পল ফ ল এনস প ইস ইস

এছাড়াও পড়ুন:

আট দশক পর দেশের মাটিতে ফিরে যাওয়া

জাপানের টোকিওর নগরকেন্দ্রের ব্যস্ত এক জায়গাজুড়ে আছে বিতর্কিত একটি শিন্তো মন্দির। জাপানে যেটা ইয়াসুকুনি মন্দির নামে পরিচিত। ১৮৬৯ সালে যাত্রা শুরু করা শিন্তো ধর্মের এই মন্দির তৈরি করা হয়েছিল মূলত এক বছর আগে গৃহযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সামন্ত্রতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে আধুনিক জাপানের ভিত্তি তৈরি করে নেওয়া মেইজি পুনরুত্থানের সময় গৃহযুদ্ধে নিহত বিজয়ী পক্ষের সৈন্যদের ‘দেবতুল্য’ ভাবমূর্তি তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। ফলে বিজয়ী পক্ষের নিহত সব সৈনিকের নাম সেখানে দেবতার সারিতে সন্নিবেশিত আছে, পরাজিতদের নয়।

দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন বিসর্জন দেওয়ার বিনিময়ে পাওয়া এ রকম প্রতিদানের মধ্যে বিতর্কের কিছু থাকার কথা নয়। দীর্ঘকাল ধরে এটা নিয়ে কোনো রকম বিতর্কও ছিল না। তবে সেই হিসাব পাল্টে যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সর্বোচ্চ সাজা পাওয়া জাপানের সেই সময়ের কয়েকজন নেতাকে ১৯৭০–এর দশকের শেষ দিকে ইয়াসুকুনির দেবতার তালিকায় যুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানোর মধ্য দিয়ে।

ফলে যুদ্ধের পুরো সময় ধরে জাপানের যে কয়েক লাখ তরুণ দেশপ্রেমে নিবেদিত থেকে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, ইয়াসুকুনির সেই ঘটনার আলোকে তাঁদেরও এখন ধরে নেওয়া হচ্ছে ‘বিতর্কিত’ হিসেবে। জাপানের জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের বাইরে অন্য একটি মর্মান্তিক দিক হচ্ছে এটা।

যেকোনো যুদ্ধের বলি সর্বাগ্রে হতে হয় যুদ্ধে জড়িত কোনো একটি দেশের তরুণদের। নিজেরা না চাইলেও দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে যাঁদের সাধারণত বাধ্য করা হয়। এর পরোক্ষ ফলশ্রুতিতে নেতৃত্বের স্খলনের জন্য নেতারাই কেবল নয়, সেসব তরুণকেও চিহ্নিত করা হয় ‘খলনায়ক’ হিসেবে।

এমনটাই সম্ভবত ঘটেছে আট দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানের কয়েকজন তরুণ সৈনিকের জীবনে। তাঁদের অনেকেরই সম্ভবত জানা ছিল না কেন তাঁরা যুদ্ধে জড়িত। আর যাঁরা তাঁদের যুদ্ধের ময়দানে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সেই তরুণদের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটে, তা নিয়ে খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করার দরকার সম্ভবত নেই।

সমাধিতে চিরনিদ্রায় শায়িত জাপানিদের নামফলক

সম্পর্কিত নিবন্ধ