নিহত কালামের দাফন, ‘দুই সন্তান নিয়ে কোথায় দাঁড়াব’—স্ত্রীর প্রশ্ন
Published: 27th, October 2025 GMT
ঈশ্বরকাঠি গ্রামটি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা সদর হতে ২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। পদ্মা ও কীর্তিনাশা নদীর তীরঘেঁষা নির্মল ও শান্ত গ্রামটিতে চলছে শোক।
ঢাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে নিহত আবুল কালামের দ্বিতীয় জানাজা আজ সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামটির পোরাগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে। পরে সকাল ১০টার দিকে নড়িয়া পৌর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী অশ্রুসিক্ত নয়নে তাঁকে শেষবিদায় জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনশৈশবে বাবা-মা হারানো আবুল কালামের এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না স্বজনেরা১৭ ঘণ্টা আগেআবুল কালামের বাড়ি উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে। তাঁর এমন অকালমৃত্যু মানতে পারছেন না স্বজন ও গ্রামের মানুষেরা। তিনি ওই গ্রামের জলিল চোকদার ও হনুফা বেগম দম্পতির ছেলে। চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে আবুল কালাম ভাইদের দিক থেকে সবার ছোট। ২০ বছর আগে তাঁর বাবা ও মা মারা যান। এরপর তিনি বেড়ে ওঠেন বড় ভাই ও বোনদের কাছে।
স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় বসবাস করতেন। আর কাজ করতেন রাজধানীর মতিঝিলের একটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে। ওই কাজের জন্যই প্রতিদিন তিনি নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা যাতায়াত করতেন।
আবুল কালামের দ্বিতীয় জানাজা আজ সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈশ্বরকাঠি গ্রামের পোরাগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মোবাইল আমাদের সকল আনন্দ কেড়ে নিয়েছে : জেলা প্রশাসক
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, এই মাঠকে দেখে খুবই খারাপ লাগে মাঠে ঘাস নাই। ঘাস লাগানোর সময় পাই না। আমরা খুব দ্রুত মাঠের উন্নয়নের জন্য কাজ ধরা হবে। মাঠে দর্শক আসছে না। মাঠে দর্শক না আসার মধ্যে দুটি কারণ হচ্ছে। দর্শকে আমাদের খেলা দিয়ে অনুপ্রেণীত করতে পারছি না।
খেলুধলা একটা মনের আনন্দের জায়গা সে খান থেকে আমরা দূরে সরে আসছি। একটি ডিভাইসকে (মোবাইল) মনে করি আমার সকল আনন্দ। এ ডিভাইস আমার সকল আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। দর্শকদের মাঠে আনতে হলে আমাদের নতুন কিছু দেখাতে পারলে মাঠের গেলারি ভরে থাকবে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে মাদক বিরোধী ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিন এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি মাদকের পরনতি নিয়ে বলেন, মাদকের ভয়াল থাবা সমাজে এমন ভাবে পৌঁছে গেছে। মাদকরে বিরুদ্ধে প্রত্যেকে যদি সোচ্চার হয়ে না দাড়াই তাহলে আমাদের জন্য সকলের জন্য বোকামি হবে।
যারা মাদক সেবন করছে তাদের নিয়ে আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয় তারা কোন পরিবার থেকে আসছে! তারা কোন প্রতিষ্ঠান থেকে উঠে আসছে, তারা কোন সমাজ থেকে বড় হচ্ছে, আমরা যারা ওই পরিবারে প্রধান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বে আছে, সমাজের প্রধান আছি আমরা ক অন্ধ হয়ে গেছি। একটি ছেলে জন্ম হবার পর পরই মাদকাসক্ত হয় না।
মাদকে পথে হাটছে আমরা তাদের প্রতি কি খেয়াল করেছি সে দায়িত্ব পালন করছি কি না। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন না করি তাহলে দেশ ও সমাজ সংস্কার করা সম্ভব না।
প্রত্যকে আমাদের অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে দক্ষ ও আরো যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। পৃথিবীর সব জায়গায় প্রতিটা মুহূর্তে পরিবর্তন হচ্ছে আপনাকেও পরিবর্তন হতে হবে নিজেকে উন্নত করতে হবে।
পৃথিবীতে এভারেজের কোনো মূল্য নাই। মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকতে পারবেন। কিন্তু সমাজে কোনো ভূমিকা রাখতে পারবেন না। ভূমিকা রাখতে গেলে আপনাকে কঠিন পরিশ্রম করে দক্ষতা তৈরি করতে হবে।
আপনারা দেশের সম্পদ আপনাদেরকে যোগ্য সম্পদ হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। দেশে অনেক সমস্যা আমাদেরকেই এই সমস্যা সমাধান করতে হবে অন্য কেউ সমাধান করে দিয়ে যাবে না।
আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। একটা সাইড নিয়ে দেশ এগিয়ে নেয়া যাবে না প্রত্যেকটি সাইডকে এগিয়ে নিতে না পারলে দেশ এগিয়ে নেয়া সম্ভব না।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয় উপপরিচালক বাহাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, ঢাকা বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক একেম এম শওকত ইসলাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নিরোধ শিক্ষা উপ পরিচালক দীপ জয় সীখা, নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা.এফ এম মুশিউর রহমান।
সভাপতির বক্তব্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয় উপপরিচালক বাহাউদ্দিন বলেন, মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা আমাদের মূল লক্ষ্য। মাদক থেকে দূরে থাকার জন্য খেলাধুলা। “খেলাধুলায় বাড়ে বল, মাদক ছেড়ে খেলতে চল” এই স্লোগান হচ্ছে আমাদের মূল মন্ত্র। আমরা চাই যুবসমাজ মাদক থেকে দূরে থাকবে এবং মাদক বিরোধী দূত হিসাবে কাজ করবে।
৪টি উপজেলা নিয়ে এ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। এদের মধ্যে আড়াইহাজার উপজেলা বেগুনি জার্সি দল, রূপগঞ্জ উপজেলার সবুজ জার্সি দল, সোনারগাঁ উপজেলা সাদা জার্সি দল, সদর উপজেলা কালো জার্সি দল নিয়ে অংশ গ্রহন করেন।
টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো সাখাওয়াত হোসেন। চুড়ান্ত খেলায় সদর উপজেলা জয় লাভ করে। রেফারি হিসাবে ছিলেন জজ মিয়া সহকারী হিসাবে ছিলেন নয়ন, ইয়াকুব।
পরে বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণ শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা মাদক বিরোধী শপথ পাঠ করান।