দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার আসামির মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ৪ ডিসেম্বর
Published: 24th, November 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে। আগামী ৪ ডিসেম্বর এই শুনানি হবে।
আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য বিচারপতি মো.
মামলার চার আসামির মধ্যে দুজন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম।
উল্লিখিত দুই সেনা কর্মকর্তার পক্ষে ট্রাইব্যুনালে ভার্চ্যুয়ালি হাজিরা দেওয়ার জন্য একটি আবেদন করেন তাঁদের আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন। আগামী ৪ ডিসেম্বর এই আবেদনের ওপর শুনানি হবে।
মামলার অপর দুই আসামি পলাতক। তাঁরা হলেন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম ও সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান। তাঁদের পক্ষে একজন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
আকাশের অনেক তারার মতো সাংবাদিক নিবর্তনেরও অনেক ধারা: অ্যাটর্নি জেনারেল
দেশের আইনগুলো যে সাংবাদিকবান্ধব নয়, তা ফুটে উঠল রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামানের এক কথায়।
আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘সাংবাদিক নিবর্তনের জন্য রাষ্ট্র অনেক রকম পথ খোলা রেখেছে। যেটা বলা হয় আকাশের যত তারা, আইনের তত ধারা। সাংবাদিকদেরকে নিবর্তনের জন্য, নিয়ন্ত্রণের জন্য আকাশের সব রকম তারার মতো আইনের ধারা প্রয়োগ করা হয়।’
অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৫’ সম্মেলনের তৃতীয় দিনের এক পর্বে এ কথা বলেন। তিনি ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ: ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা’ পর্বে বক্তব্য দেন।
ব্রিটিশ আমল থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের বিভিন্ন নিবর্তনমূলক আইনের ধারা ও তার প্রয়োগের কথা উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, যে-ই সরকারি ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা সাংবাদিক নিবর্তনের মানসিকতা মনে পোষণ করে।
আসাদুজ্জামান বলেন, আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল করে সবার সঙ্গে আলোচনা করে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আওয়ামী লীগ সরকার করেছিল, সেটা ছিল সবার সঙ্গে প্রতারণা।
বিগত সরকারের সময়ে এসব আইনের অপপ্রয়োগের বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরে এই আইনজীবী বলেন, ‘এই সমস্ত নিবর্তন এবং নির্যাতনমূলক আইন, যে আইন কণ্ঠরোধ করে, যে আইন সাংবাদিকের কলম থামিয়ে দেয়, আমরা এই আইনের অবসান চাই। এটা যাতে ঘুরেফিরে না আসে, সেই বিষয়ে রাজনৈতিক যাঁরা নেতৃত্ব থাকবেন, আগামী দিনে তাঁদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে এই বিষয়গুলো রিথিংক করার।’
শুধু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে না বলে মনে করেন আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, এই ট্রেন্ডটাকে পরিবর্তন করতে হলে রাষ্ট্রের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে।
বিগত সময়ে দিনাজপুরের এক কিশোরীর মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির আদালতের উদাহরণ টেনে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, শুধু আইন করে বা আইন সংশোধন করে এই অবস্থার পরিত্রাণ পাওয়া যাবে না।
বাংলাদেশে ভয়হীন সংস্কৃতির প্রত্যাশা রেখে আসাদুজ্জামান বলেন, বর্তমান সরকার আসার পর গুমের ঘটনা ঘটেনি এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও অনেক কমেছে। গত ১৭ মাসে পুলিশ নিজে বাদী হয়ে একটিও ‘গায়েবি’ মামলা করেনি।
আসাদুজ্জামান আশা প্রকাশ করেন, পরবর্তী নির্বাচিত সরকার সব ধরনের নিবর্তনমূলক আইনের পথ থেকে ফিরে আসবে। তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো নীতিতে ফিরে যাবে না।
সিজিএসের গবেষণা সহযোগী রোমান উদ্দিনের সঞ্চালনায় সংলাপের এই পর্বে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস অ্যান্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সাজ্জাদ সিদ্দিকী এবং ট্রায়াল ওয়াচের জ্যেষ্ঠ প্রোগ্রাম ম্যানেজার মানেকা খান্না।