প্রায় এক শতাব্দী ধরে ডার্ক ম্যাটার জ্যোতির্বিজ্ঞানের অন্যতম বড় রহস্য। ১৯৩০ দশকে এই ধারণা প্রথম উত্থাপন করা হয়। সুইডেনের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রিটজ জুইকি প্রথম উপলব্ধি করেন দূরবর্তী কোমা ক্লাস্টারের গ্যালাক্সি তাদের দৃশ্যমান নক্ষত্রের মাধ্যাকর্ষণ দ্বারা একত্রে ধরে রাখার জন্য অনেক দ্রুতগতিতে চলছে। কয়েক দশক পর ভেরা রুবিনের সর্পিল গ্যালাক্সিও কোনো একটি অদৃশ্য ভর অতিরিক্ত মহাকর্ষীয় প্রভাব তৈরি করছে বলে জানা যায়। আর তাই দীর্ঘদিন ধরেই মহাকাশে থাকা ডার্ক ম্যাটারের রহস্য জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার প্রথমবারের মতো ডার্ক ম্যাটারের ঝলক শনাক্তের দাবি করেছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। নাসার ফার্মি গামা-রে স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো ডার্ক ম্যাটার পর্যবেক্ষণ করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীরা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের তথ্য বিশ্লেষণের সময় প্রায় ২০ গিগা ইলেকট্রন ভোল্টের শক্তিতে গামা রশ্মির একটি হ্যালো-আকৃতির আভা দেখতে পেয়েছেন। এটি একটি অস্বাভাবিক শক্তিশালী সংকেত, যা উইকলি ইন্টারঅ্যাকটিং ম্যাসিভ পার্টিকেল বা ডাব্লিউআইএমপি নামে পরিচিত কাল্পনিক ডার্ক ম্যাটার কণার ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে পুরোপুরি মিলে গেছে। তত্ত্ব অনুসারে, যখন দুটি এমন কণার মধ্যে সংঘর্ষ হয়, তখন তারা একে অপরকে ধ্বংস করে দেওয়ার ফলে গামা রশ্মি নির্গত হয়। এই রশ্মি মহাবিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী আলোর রূপ।

নতুন এ আবিষ্কারের বিষয়ে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী তোমোনোরি তোতানি জানান, নির্গত ডার্ক ম্যাটার প্রত্যাশিত আকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে মিলে যায়। এই ঘটনার সহজ বিকল্প ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না। গবেষণার ফলাফল সঠিক হলে এটি হবে মানবজাতির প্রথমবার ডার্ক ম্যাটার দেখার অভিজ্ঞতা। এর ফলে পদার্থবিজ্ঞানের স্ট্যান্ডার্ড মডেলের বাইরে একটি সম্পূর্ণ নতুন কণার উপস্থিতি জানা যাবে। তখন বিজ্ঞানীরা হিগস বোসনের মতো একটি রূপান্তরমূলক আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে যেতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, ডার্ক ম্যাটার আলো নির্গত, শোষণ বা প্রতিফলিত করে না। আর তাই শক্তিশালী হলেও অদৃশ্য থাকে এই পদার্থ। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, এই পদার্থ মহাবিশ্বের সব পদার্থের প্রায় ৮৫ শতাংশ তৈরি করে। আমাদের দেখা সবকিছু—নক্ষত্র, গ্রহের চেয়ে ভারী এই পদার্থ।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথমব র পদ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে প্রথমবারের মতো প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে বুধবার 

‘দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি: প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশে প্রথমবারের মতো আগামী বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ-২০২৫।

আগামী ২৬ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একযোগে সারাদেশে প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ পদক প্রদান, বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম, র‌্যালি, আলোচনা, সেমিনার, কর্মশালা ও প্রদর্শনী ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় প্রাণিসম্পদ পদক নীতিমালা অনুযায়ী প্রাণিসম্পদ খাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৫টি ক্যাটাগরিতে ১৫টি পদক প্রদান করা হবে। প্রতিটি ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে যথাক্রমে স্বর্ণ, রৌপ্য এবং ব্রোঞ্জ পদকে ভূষিত করা হবে। এই পদক জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ প্রদান করবেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহের জন্যে ভিডিওতে শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন।” 

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। জিডিপিতে এ খাতের অবদান ১ দশমিক ৮১ শতাংশ, জিডিপতে প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, কৃষিজ জিডিপিতে ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ  এবং অর্থমূল্যে প্রাণিসম্পদ জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৯১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা।”

উপদেষ্টা বলেন, “পোল্ট্রি শিল্প বর্তমানে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মসংস্থানের খাত—যেখানে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে। দেশে নিবন্ধিত ৮৫,২২৭টি বাণিজ্যিক এবং প্রায় ১,৯১,০০০টি প্রান্তিক পোল্ট্রি খামার রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৬ কোটি ৬৮ লাখ ডিম উৎপাদিত হচ্ছে—যা নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য।”

তিনি জানান, রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকার উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) প্রতিরোধে ১৭ লক্ষ ডোজ টিকা, ক্ষুরা রোগ (এফএমডি) নির্মূলে নির্দিষ্ট অঞ্চলে জোনিং কার্যক্রম এবং ছাগলের পিপিআর রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৬ কোটি ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, “জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ উদ্যাপনের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির বিস্তার, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, নারী ও যুব উদ্যোক্তা সৃষ্টি, আন্তর্জাতিক মান অর্জন এবং সরকারি–বেসরকারি সমন্বয় আরও শক্তিশালী হবে।” 

এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ইমাম উদ্দীন কবীর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান-সহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘প্রথমবার চুম্বনের দৃশ্য, স্বভাবতই নার্ভাস ছিলাম’
  • পারমাণবিক জ্বালানি লোডিংয়ের দ্বারপ্রান্তে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র
  • ‘ফিরে চল মাটির টানে’ স্লোগানে প্রথমবার ব্রজমোহন কলেজে নবান্ন উৎসব অনুষ্ঠিত
  • মেসির ১৩০০
  • দেশে প্রথমবারের মতো প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে বুধবার