প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশের কর্মবিরতির মধ্যে আজ আরেকাংশেরও শুরু
Published: 27th, November 2025 GMT
সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে তিন দিন ধরে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করছে সহকারী শিক্ষকদের একাংশ। সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ডাকা কর্মবিরতির এ কর্মসূচি আজ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে।
এর মধ্যে ‘আপাতত’ ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপন জারিসহ অন্যান্য দাবি বাস্তবায়নে আজ থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছে শিক্ষকদের আরেকটি অংশ। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে এ কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। এই সংগঠনের নেতারা বলছেন, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে। প্রথমে ৩০ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছিল অংশটি।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ একজন নেতা মোহাম্মদ শাসছুদ্দীন সারা দেশে কর্মবিরতি পালনের কথা জানিয়ে আজ প্রথম আলোকে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের বেতন আপাতত ১১তম গ্রেড করাসহ অন্যান্য দাবি মানলে তাঁরা কর্মবিরতি স্থগিত করবেন। না হয় কর্মবিরতি চলবে। এমনকি আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষাও এই কর্মসূচি আওতায় থাকবে।
ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকার বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালনের খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য সব বিদ্যালয়েই এই কর্মবিরতি হচ্ছে না। এ প্রতিবেদক আজ বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখতে পান শিক্ষার্থীরা মাঠে এদিক-ওদিন দৌড়াদৌড়ি করছে, খেলছে। প্রধান শিক্ষক নূরজাহান হামিদা প্রথম আলোকে বলেন, আজ তাঁদের বিদ্যালয়ে এ শিক্ষাবর্ষের শেষ ক্লাসের দিন। এ জন্য ‘ক্লাস পার্টির’ আয়োজন করা হয়েছে।
সেখান থেকে পরে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় অবস্থিত আইডিয়াল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে কয়েকজন সহকারী শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরাও জানালেন, এ বিদ্যালয়েও আজ ‘ক্লাস পার্টি’। রোববার বার্ষিক পরীক্ষার কাজ (সহশিক্ষা কার্যক্রম) এবং ক্লাস চলবে।
আরও পড়ুনসারা জীবন পড়ান, অবসরে এসে নিজের টাকা পেতে ভোগান্তিতে শিক্ষকেরা১ ঘণ্টা আগেপ্রসঙ্গত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মূল বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে ১ ডিসেম্বর থেকে।
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ কোটির বেশি। শিক্ষক রয়েছেন পৌনে ৪ লাখের বেশি। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি, বর্তমানে কর্মরত ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন। শিক্ষাবর্ষের শেষ পর্যায়ে এসে শিক্ষকদের কর্মবিরতির এ কর্মসূচি বার্ষিক পরীক্ষার ওপর প্রভাব পড়তে পারে।
বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে আছেন (শুরুর মূল বেতন ১১ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১০ম করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে সহকারী শিক্ষকেরা এ মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান ও বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন।
আন্দোলন চলাকালেই অর্থ বিভাগের সচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ওই বৈঠকের পর সরকার থেকে বলা হয়েছিল, সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম করার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবটি জাতীয় বেতন কমিশনে পাঠানো হয়েছে, যা বেতন কমিশনের বিবেচনাধীন।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক শিক্ষকদের তিন দাবি : একাংশের কর্মবিরতি চলছে, আরেকাংশের আজ শুরু৩৮ মিনিট আগেকমিশনের সুপারিশ পাওয়ার পর অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে। আর শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠালে অর্থ বিভাগ বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। এ ছাড়া শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান বিধিমালার আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে। এরপর কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছিলেন শিক্ষকেরা। যদিও এর ভিত্তিতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা নিয়ে শিক্ষকেরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন। এখন আবার কর্মবিরতি শুরু করছেন শিক্ষকেরা।
আরও পড়ুনহার্ভার্ড–অক্সফোর্ডসহ বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফ্রি অনলাইন কোর্স, যেভাবে আবেদন৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র ষ ক পর ক ষ সরক র সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ কর্মবিরতিতে, আরেকাংশের শুরু কাল
সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করছে সহকারী শিক্ষকদের একাংশ। তারা সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করছে।
অন্যদিকে ‘আপাতত’ ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপন জারিসহ অন্যান্য দাবি বাস্তবায়নে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাচ্ছে শিক্ষকদের আরেকটি অংশ। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে আন্দোলন করে আসা এই অংশ প্রথমে ৩০ নভেম্বর থেকে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছিল। এখন তাতে পরিবর্তন এনেছে। তাঁরা বলছেন দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে।
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির বেশি। শিক্ষক রয়েছেন পৌনে চার লাখের বেশি। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি, বর্তমানে কর্মরত ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন। আগামী ১ ডিসেম্বর প্রাথমিক বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষাবর্ষের শেষ পর্যায়ে এসে কর্মবিরতির এ কর্মসূচি বার্ষিক পরীক্ষার ওপর প্রভাব পড়তে পারে।
বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৩তম গ্রেডে আছেন (শুরুর মূল বেতন ১১ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১০ম করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে সহকারী শিক্ষকেরা এ মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান ও বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন।
আন্দোলন চলাকালেই অর্থ বিভাগের সচিব এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ওই বৈঠকের পর সরকার থেকে বলা হয়েছিল, সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১তম করার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবটি জাতীয় বেতন কমিশনে পাঠানো হয়েছে, যা বেতন কমিশনের বিবেচনাধীন।
কমিশনের সুপারিশ পাওয়ার পর অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে। আর শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠালে অর্থ বিভাগ বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। এ ছাড়া শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান বিধিমালার আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে। যদিও এর ভিত্তিতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা নিয়ে শিক্ষকেরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন এবং সাধারণ শিক্ষকেরা শিক্ষকনেতাদের দোষারোপ করেন।
এরই মধ্যে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের ব্যানারে একটি অংশ প্রথমে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে। এরপর ২৫ নভেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করে; যা চলবে কাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। দাবি আদায় না হলে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনসহ আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকনেতারা।