ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত দাখিলে তদন্ত কর্মকর্তাকে তাগিদ আদালতের
Published: 27th, November 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোপত্র দ্রুত দাখিলে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তাগিদ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্ধারিত তারিখে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট ত্বকী হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১১–এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক চন্দ্র মজুমদারকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১ লিখিতভাবে অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য সময় চেয়েছিল।
আদালতে হাজিরা দেন জামিনে থাকা আসামি আজমেরী ওসমানের সহযোগী তায়েব উদ্দিন, মামুন মিয়া, ইয়ার মোহাম্মদ পারভেজ, রিফাত বিন ওসমান, শাফায়েত হোসেন, কাজল হাওলাদার, আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামশেদ চৌধুরী। তবে ইউসুফ হোসেন আইনজীবীর মাধ্যমে সময় প্রার্থনা করলে আদালতে তা মঞ্জুর হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ত্বকী হত্যা মামলায় দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগপত্র দাখিল হয়নি। আমরা বিশেষভাবে অভিযোগত্র দাখিলের দাবি জানালে আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দ্রত অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম খান প্রথম আলোকে জানান, আদালতে আসামিরা হাজিরা দিয়েছেন। আদালত আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন। বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দ্রুত অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের নভেম্বরে আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলনে জানায়, ওসমান পরিবারের নির্দেশে টর্চার সেলে আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। সে সময় বলা হয়েছিল, অচিরেই আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র এখনো আদালতে পেশ করা হয়নি। বিচারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ ধারাবাহিকভাবে মোমশিখা প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ কর মকর ত ক ওসম ন র তদন ত আজম র
এছাড়াও পড়ুন:
‘অনলাইন সহিংসতা প্রতিরোধে শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়তে হবে’
নারী ও কন্যা শিশুর বিরুদ্ধে অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় কার্যকর আইন সংস্কার, প্রযুক্তিনির্ভর সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং বিস্তৃত ডিজিটাল সাক্ষরতা কর্মসূচি গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরকে টেকসই করতে হলে নিরাপত্তা ও জবাবদিহির শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে হবে। অনলাইন অভিযোগ গ্রহণ ও তদন্ত ব্যবস্থাকে আরো আধুনিক ও শক্তিশালী করা, সাইবার তদন্ত সক্ষমতা বাড়ানো এবং দায়িত্বশীল ডিজিটাল নাগরিকত্ব নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক সচেতনতা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।
ইউএনওপস বাংলাদেশ, এটুআই, আইসিটি বিভাগ, বিআইআইএসএস এবং বাংলাদেশস্থ মালদ্বীপ হাইকমিশনের যৌথ আয়োজনের এই কর্মসূচি ‘নারী ও কন্যাশিশুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে চলমান ১৬ দিনের ক্যাম্পেইনের অংশ।
গোলটেবিল বৈঠকে সাইবারস্টকিং, অনলাইন হয়রানি, ডিপফেক, ছবি ও ভিডিও বিকৃতি এবং ইমেজবেইজড অ্যাবিউজসহ বিভিন্ন ডিজিটাল সহিংসতার ঝুঁকি, ক্ষতি ও প্রতিকার কাঠামো নিয়ে আলোচনা করেন সরকারের নীতিনির্ধারক, কূটনীতিক, আইনজীবী, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, বেসরকারি খাত, সিভিল সোসাইটি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউএনওপস বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধারণ বলেছেন, ডিজিটাল সহিংসতা শুধু প্রযুক্তিগত সমস্যা নয়। এটি উন্নয়ন, সুশাসন ও মানবাধিকার—এই তিন অঙ্গনেই চ্যালেঞ্জ। তাই, সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজকে যৌথভাবে কাজ করে এ সম্মিলিত প্রতিকার কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
এটুআইএর প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রফিক বলেছেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আমাদের জন্য সুযোগ ও উন্নতির এক বিরাট পরিসর তৈরি করেছে। তবে, এই পরিসর কখনোই ভয় বা সহিংসতার ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে না। নারীদের নিরাপদ অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করে আমরা সমতাভিত্তিক ডিজিটাল ভবিষ্যৎ কল্পনাও করতে পারি না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাসনুভা শেলীসহ বিভিন্ন স্টেক হোল্ডার এবং দপ্তর সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এএএম/রফিক