ইসলামের শত্রু আবু জাহেলের মা আসমা (রা.) সাহাবি ছিলেন
Published: 11th, January 2025 GMT
আবু জাহেল ছিলন ইসলামের অন্যতম শত্রু। তার বাবার নাম হিশাম ইবনুল মুগীরা। মায়ের নাম আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.)। আবু জাহেলের বাবা হিশাম ছিল পৌত্তলিক। রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর নবুয়াত লাভের আগেই হিশাম ইন্তেকাল করে।
আসমা বিনতে মুখাররাবার প্রথম বিয়ে হয় হিশাম ইবনে মুগীরার সঙ্গে। এই স্বামীর ঘরে তাঁর দুটি ছেলে জন্ম নেয়। একজন আবু জাহেল, আরেকজন আল-হারিস। আল-হারিস ইবনে হিশাম ছিলেন রাসুলের সাহাবি। তবে প্রথম দিকে তিনিও তাঁর ভাইয়ের মতো ইসলামের বিরোধিতা করেন। বদর ও উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.
আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.) ইসলাম গ্রহণ করে রাসুলের সাহাবি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন। অথচ তাঁর গর্ভজাত ছেলে ছিল ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু! তিনি ইসলাম গ্রহণ করে তাঁর ছেলের সঙ্গে না থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে যান।
ইসলাম গ্রহণ করার কারণে আবু জাহেল অন্য সাহাবিদের ওপর নির্যাতন করত। দ্বিতীয় বিয়েতে আসমা (রা.)–র গর্ভে দুই ছেলে এবং এক মেয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা হলেন আইয়্যাশ ইবনে আবি রাবীয়া (রা.), আবদুল্লাহ (রা.), উম্মে হুজাইর।
আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.) মদিনায় বসবাস করেন। তাঁর এক ছেলে আবদুল্লাহ থাকতেন ইয়েমেনে। তিনি ইয়েমেন থেকে মায়ের জন্য আতর পাঠাতেন। আসমা সেই আতর ঘরে থাকাকালে নিজে ব্যবহার করতেন। কিছু আতর বিক্রি করতেন। মদিনার নারীদের কাছে তাঁর আতর প্রসিদ্ধ ছিল। তখনকার যুগে সবচেয়ে ভালো আতর আসত ইয়েমেন থেকে। সে জন্য মদিনার নারীরা ভালো আতর কেনার জন্য আসমা (রা.)–র বাসায় যেতেন।
আরও পড়ুনপাপ-পুণ্যের হিসাব কখন লেখা হয়২৬ জুলাই ২০২৩আসমা ছিলেন একদিকে আবু জাহেলের মা, আরেকদিকে সাহাবি আইয়্যাশ ইবনে আবী রাবীয়া, হারিস ইবনে হিশাম (রা.)–রও মা। আবু জাহেল সারা জীবন ইসলামের বিরোধিতা করে গেল, এমনকি সাহাবিদের বিরুদ্ধে বদর যুদ্ধ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণও করল; অথচ তার মা আসমা, ছেলে ইকরিমা, মেয়ে জুয়াইরিয়া ও আল-হুনফাসহ পরিবারের কয়েকজন ইসলাম গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুনআমরা যে কোরআন পড়ি, সেটি তাঁরই সংকলন করা৩০ অক্টোবর ২০২৩উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫