আবু জাহেল ছিলন ইসলামের অন্যতম শত্রু। তার বাবার নাম হিশাম ইবনুল মুগীরা। মায়ের নাম আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.)। আবু জাহেলের বাবা হিশাম ছিল পৌত্তলিক। রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর নবুয়াত লাভের আগেই হিশাম ইন্তেকাল করে।

আসমা বিনতে মুখাররাবার প্রথম বিয়ে হয় হিশাম ইবনে মুগীরার সঙ্গে। এই স্বামীর ঘরে তাঁর দুটি ছেলে জন্ম নেয়। একজন আবু জাহেল, আরেকজন আল-হারিস। আল-হারিস ইবনে হিশাম ছিলেন রাসুলের সাহাবি। তবে প্রথম দিকে তিনিও তাঁর ভাইয়ের মতো ইসলামের বিরোধিতা করেন। বদর ও উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.

)–এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। মক্কা বিজয়ের পর হারিস ইবনে হিশাম ইসলাম গ্রহণ করে সাহাবি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন। এর পর ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত প্রায় সবগুলো যুদ্ধে ইসলামের পক্ষে অংশ নেন। আসমার প্রথম স্বামী হিশাম ইবনে মুগীরা ইন্তেকাল করলে দেবর আবু রাবীয়া ইবনুল মুগীরার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।

আরও পড়ুনঅন্যের গোপন দোষ সন্ধান করতে নিষেধ করেছে ইসলাম০১ নভেম্বর ২০২৩

আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.) ইসলাম গ্রহণ করে রাসুলের সাহাবি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন। অথচ তাঁর গর্ভজাত ছেলে ছিল ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু! তিনি ইসলাম গ্রহণ করে তাঁর ছেলের সঙ্গে না থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে যান।

ইসলাম গ্রহণ করার কারণে আবু জাহেল অন্য সাহাবিদের ওপর নির্যাতন করত। দ্বিতীয় বিয়েতে আসমা (রা.)–র গর্ভে দুই ছেলে এবং এক মেয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা হলেন আইয়্যাশ ইবনে আবি রাবীয়া (রা.), আবদুল্লাহ (রা.), উম্মে হুজাইর।

আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.) মদিনায় বসবাস করেন। তাঁর এক ছেলে আবদুল্লাহ থাকতেন ইয়েমেনে। তিনি ইয়েমেন থেকে মায়ের জন্য আতর পাঠাতেন। আসমা সেই আতর ঘরে থাকাকালে নিজে ব্যবহার করতেন। কিছু আতর বিক্রি করতেন। মদিনার নারীদের কাছে তাঁর আতর প্রসিদ্ধ ছিল। তখনকার যুগে সবচেয়ে ভালো আতর আসত ইয়েমেন থেকে। সে জন্য মদিনার নারীরা ভালো আতর কেনার জন্য আসমা (রা.)–র বাসায় যেতেন।

আরও পড়ুনপাপ-পুণ্যের হিসাব কখন লেখা হয়২৬ জুলাই ২০২৩

আসমা ছিলেন একদিকে আবু জাহেলের মা, আরেকদিকে সাহাবি আইয়্যাশ ইবনে আবী রাবীয়া, হারিস ইবনে হিশাম (রা.)–রও মা। আবু জাহেল সারা জীবন ইসলামের বিরোধিতা করে গেল, এমনকি সাহাবিদের বিরুদ্ধে বদর যুদ্ধ করতে গিয়ে মৃত্যুবরণও করল; অথচ তার মা আসমা, ছেলে ইকরিমা, মেয়ে জুয়াইরিয়া ও আল-হুনফাসহ পরিবারের কয়েকজন ইসলাম গ্রহণ করেন।

আরও পড়ুনআমরা যে কোরআন পড়ি, সেটি তাঁরই সংকলন করা৩০ অক্টোবর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক মাধ্যমে বন্ধ হয়ে গেল ১৬ বছরের কম বয়সীদের লাখো অ্যাকাউন্ট

অস্ট্রেলিয়ায় আজ বুধবার দিনের প্রথম প্রহরে কার্যকর হয়েছে নতুন একটি আইন। দেশটিতে এর আওতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৬ বছরের কম বয়সীদের লাখো অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেছে।

শিশু-কিশোরদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কেন্দ্রিক সহিংসতা ও আসক্তির হাত থেকে রক্ষা করতে নতুন এ আইন কার্যকর করেছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।

নতুন এ আইনের আওতায় অস্ট্রেলিয়ার ১৬ বছরের কম বয়সী শিশু–কিশোরেরা এখন থেকে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স, স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক, ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় নিজেরা অ্যাকাউন্ট খুলতে এবং সেসব ব্যবহার করতে পারবে না।

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ এ আইন প্রণয়নের ঘোষণা দেন। পরে সেটি দেশটির পার্লামেন্টে পাস হয়। সে সময় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন, আইন লঙ্ঘন করলে শিশু–কিশোরদের কোনো ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে না।

ব্যবহারকারীর বয়স অন্তত ১৬ বছর—এটা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তিসংগত ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব প্ল্যাটফর্মের। কাজেই সবচেয়ে গুরুতর বিচ্যুতির জন্য তাদের সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৪৯ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৩ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার) জরিমানা দিতে হবে।

আইনটির সমর্থকেরা বলছেন, এটি শিশুদের আসক্তিকর অ্যালগরিদমের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে, যে অ্যালগরিদম সহিংসতা, পর্নোগ্রাফি ও ভুল তথ্যের মতো ক্ষতিকর কনটেন্ট তাদের সামনে এনে দেয়।

এমনও বলা হচ্ছে, এটি সাইবার হেনস্তা (বুলিং) এবং অনলাইনে শিশুদের যৌন ও অন্যান্য শোষণ কমাবে। এ ছাড়া এটি শিশুদের বাইরে খেলতে বাধ্য করবে, তাদের ঘুম ভালো হবে, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হবে।

আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য নিষিদ্ধ হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার০৭ নভেম্বর ২০২৪

অন্যদিকে নতুন আইনের সমালোচনাকারীদের মতে, নিষেধাজ্ঞা কাজে প্রয়োগ করবে যে প্রযুক্তি, তার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ আছে। পাশাপাশি ভয় আছে, এটা নাজুক শিশুদের কোণঠাসা, একাকী করে ফেলতে পারে। অন্যদেরও অনলাইনের অন্ধকার এবং কম নিয়ন্ত্রিত অংশের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

আরও পড়ুনশিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করে অস্ট্রেলিয়ায় প্রস্তাব পাস২৮ নভেম্বর ২০২৪আরও পড়ুনসামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শিশুদের দূরে রাখতে পারবেন কি০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ