আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের বিশাল মেঘ পৌঁছে গেছে এশিয়ায়। এই মহাদেশের দেশ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে দেখা যাচ্ছে আগ্নেয়গিরি থেকে সৃষ্ট মেঘ। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। আগ্নেয়গিরি থেকে সৃষ্ট ওই মেঘ লোহিত সাগর পেরিয়ে ওমান ও ইয়েমেন হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে।

আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার ওই আগ্নেয়গিরির নাম হায়লি গুব্বি। প্রায় ১২ হাজার বছর ধরে সেটি সুপ্ত অবস্থায় ছিল। গত রোববার সকাল থেকে সেটিতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। অগ্ন্যুৎপাতের সময় সৃষ্টি হওয়া ছাইয়ের মেঘ বায়ুমণ্ডলের কয়েক হাজার ফুট পর্যন্ত ওপরে উঠে যায়।

আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের মেঘের কারণে ভারতের বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। অনেক ফ্লাইট বিলম্ব হয়েছে অথবা যাত্রার দিক বদল করা হয়েছে। ভারতের যেসব এলাকার আকাশে এই মেঘের উপস্থিতি দেখা গেছে, উড়োজাহাজকে সেসব এলাকা এড়িয়ে যেতে বলেছে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

অগ্ন্যুৎপাতের সময় নির্গত ছাইয়ের মেঘ উড়োজাহাজের ইঞ্জিনের ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে, বিমানবন্দরকে দূষিত করে তুলে পারে এবং দৃষ্টিসীমা কমিয়ে দিতে পারে। তবে অনেক উঁচুতে থাকায় দিল্লির বায়ুমানের ওপর এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা কম। এরপরও আজ মঙ্গলবার শহরটির বায়ুমান ছিল ‘খুব খারাপ’।

আরও পড়ুনইথিওপিয়ায় ১২ হাজার বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত১০ ঘণ্টা আগে

ভারতের আবহাওয়া বিভাগের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের সাড়ে ৮ থেকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে উচ্চতায় এই ছাইয়ের মেঘের প্রভাব পড়েছে। মেঘের কারণে কিছু সময়ের জন্য স্যাটেলাইটের কার্যকারিতা ও উড়োজাহাজ চলাচলের ওপর প্রভাব পড়বে। গতকাল সোমবার রাতে মেঘটি উত্তর ভারত হয়ে এগিয়ে আসে। সেটি চীনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ছাইয়ের মেঘ সৃষ্টি হওয়ার ঘটনা বিরল। ২০১০ সালে আইসল্যান্ডের এইজাফজাল্লাজোকুল আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের সময় এমন মেঘ সৃষ্টি হয়েছিল। এর ফলে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের আকাশসীমার কিছু অংশ পুরোপুরি বা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উড়োজাহাজ চলাচলে সবচেয়ে বড় বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল।

আরও পড়ুন১২ হাজার বছর পর কেন ইথিওপিয়ার হায়লি গুব্বিতে অগ্ন্যুৎপাত হলো, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

১৩ বছর ধরে টিউশন মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে কেয়ারটিউটরস অ্যাপ

এখন থেকে ১৩ বছর আগে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের হাতে কেয়ারটিউটরস নামে টিউশনের সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক একটি মাধ্যম গড়ে ওঠে ঢাকায়। অনলাইনের পাশাপাশি সম্পূর্ণ অ্যাপভিত্তিক টিউশন ব্যবস্থাপনার ইকোসিস্টেমে পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সেবাগ্রহীতার সংখ্যাও পৌঁছেছে ৫ লাখের ওপরে।

কেয়ারটিউটরস অ্যাপ ইকোসিস্টেম তৈরি করে যেখানে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অ্যাপটি টিউটর ও সেবাগ্রহীতাদের যাচাই করে। এ ছাড়া অ্যাপ থেকেই টিউটররা প্ল্যাটফর্ম চার্জের পেমেন্ট করতে পারেন। এতে রয়েছে অ্যাটেনডেন্স ট্র্যাকিং, যা অভিভাবকদের বাসার বাইরে থেকেও টিউটরের আসা–যাওয়ার হালনাগাদ তথ্য দেয়। কনফারমেশন লেটারের মাধ্যমে টিউশন চুক্তি ডিজিটাল সাইন করে নিশ্চিত করা যায়। টিউটররা টিউশন হালনাগাদ সরাসরি অ্যাপে জানাতে পারেন এবং রিয়েল-টাইম নোটিফিকেশনের মাধ্যমে নতুন টিউশন, অ্যাপ্লাই স্ট্যাটাস, প্রোফাইল ভিউ বা সার্ভিস হালনাগাদ সম্পর্কে জানতে পারেন। একইভাবে অভিভাবক-শিক্ষার্থীরাও এসব নোটিফিকেশন পান।

দেশে অনলাইন টিউশন খোঁজার প্ল্যাটফর্ম কেয়ারটিউটরস ১৩ বছরের পূর্তি উপলক্ষে সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে কেয়ারটিউটরসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘আমাদের স্বপ্ন ছোট নয়, আকাশছোঁয়া। দেশের সেরা টিউটর খোঁজার প্ল্যাটফর্ম হওয়া এখন আমাদের অঙ্গীকার।’

কেয়ারটিউটরসের অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস—দুই প্ল্যাটফর্মেই পাওয়া যায়। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি এ পর্যন্ত ৩ লাখের বেশিবার নামানো হয়েছে, যেখানে ৪ হাজার ৫৮০-এর বেশি ব্যবহারকারী রেটিং ও রিভিউ দিয়েছেন। আইওএস অ্যাপের ডাউনলোডের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং ৬৬৬-এর বেশি ব্যবহারকারী রিভিউ প্রদান করেছেন। এর দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮-১০ হাজারের মধ্যে রয়েছে।

অ্যাপের বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে এটি বিষয়, ক্লাস, এলাকা ও বাজেট অনুসারে উপযুক্ত টিউটর খোঁজার সুবিধা দেয়, যাতে অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা মাত্র কয়েকটি ক্লিকে পছন্দমতো পরিষেবা পেতে পারেন।

এ ছাড়া টিউটরদের এক ক্লিকে টিউশনে অ্যাপ্লাই করার সুযোগ আছে এখানে। বিস্তারিত প্রোফাইল ও রেটিং সিস্টেম থাকায় অভিভাবকেরা টিউটরের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও রিভিউ দেখে সিদ্ধান্ত নেন। লোকেশনভিত্তিক ফিল্টারিংয়ের মাধ্যমে টিউটররা নিজের এলাকার টিউশনগুলো সহজেই খুঁজে পান এবং নিজের যোগ করা লোকেশনে টিউশন পোস্ট হলেই নোটিফিকেশন পান।

কেয়ারটিউটরসে অনলাইন ও হোম টিউশন—দুই সুবিধাই আছে। অভিযোগ কিংবা পরামর্শের ক্ষেত্রে ‘মেসেজ টু সিইও’ অপশন ব্যবহার করে সরাসরি প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে জানানো যায়। আবার ‘এক্সক্লুসিভলি ইয়োরস’ সুবিধার মাধ্যমে ৪০টির বেশি কোম্পানির বিশেষ ছাড় সুবিধা উপভোগ করা যায়।

কেয়ারটিউটরস পাওয়া যাবে এই ওয়েব ঠিকানায়। দেশের সব বিভাগীয় শহরসহ সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় সেবা প্রসারিত করেছে। কেয়ারটিউটরসে ৪ লাখ ৫০ হাজারের বেশি টিউটর যুক্ত। যাঁরা একাডেমিক, ছবি আঁকা, ধর্মীয় শিক্ষা, ভাষা, দক্ষতা উন্নয়নসহ ১৩টি শ্রেণিতে পড়ান। মাসুদ পারভেজ জানান, আগামী বছরগুলোতে নতুন সুবিধা যুক্ত করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও টিউটরদের আরও ভালো অভিজ্ঞতা দেওয়ার লক্ষ্যে কেয়ারটিউটরস কাজ করে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ