রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া কুশাহাটা এলাকার পদ্মা নদীতে জেলে মিরাজ শেখের বড়শিতে বোয়াল ধরা পড়েছে। আজ শনিবার সকালে ১৬ কেজি ওজনের মাছটি ধরা পড়ে।

পরে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট মাছের আড়তে আনা হলে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বোয়ালটি কিনে অর্ধলক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন। ডাকে অংশ নিয়ে ওই ব্যবসায়ী মাছটি কিনে নেন।

স্থানীয় কয়েকজন মৎস্যজীবী জানান, বর্তমানে নদীতে জালে খুব একটা মাছ ধরা পড়ছে না। জেলেরা বিকল্প হিসেবে জালের পাশাপাশি বড়শি দিয়েও মাছ শিকার করছেন। শনিবার সকালে পাবনা জেলার কাছাকাছি রাজবাড়ী জেলার সীমান্তবর্তী দৌলতদিয়া কুশাহাটা এলাকার স্থানীয় মিরাজ শেখ পদ্মা নদীতে হাজারি বড়শি ফেলেন। ওই বড়শি তুলতে গিয়ে দেখতে পান, বড় এক বোয়াল মাছ ধরা পড়েছে। পরে মাছটি বিক্রির জন্য তিনি নিয়ে আসেন দৌলতদিয়া ঘাট মাছবাজারের কেছমত মোল্লার আড়তঘরে। সেখানে বোয়ালটি ওজন দিয়ে দেখতে পান, মাছটি ১৬ কেজির মতো। পরে প্রকাশ্যে ডাকে তোলা হলে ফেরিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা ৩ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে মোট ৪৯ হাজার ৬০০ টাকায় এটি কিনে নেন।

দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী মো.

চান্দু মোল্লা জানান, সকালে ফেরিঘাটে আসার পর তিনি জানতে পারেন, কুশাহাটায় একটি বড় বোয়াল মাছ ধরা পড়েছে। পরে মাছবাজারে কেছমত মোল্লার আড়তঘরে বোয়ালটি দেখে ডাকে অংশ নেন। এ সময় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে তিনি ৪৯ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে বোয়ালটি কেনেন। এরপর তিনি তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওসহ প্রচার করেন। একই সঙ্গে তিনি পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ঢাকার এক ব্যবসায়ী ওই বোয়ালটি কিনে নেন। এ সময় কেজিপ্রতি ৫০ টাকা লাভে ৩ হাজার ১৫০ টাকা কেজি দরে মোট ৫০ হাজার ৪০০ টাকায় বোয়ালটি বিক্রি করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটে মাঝেমধ্যে বোয়াল, কাতলা, বাগাড়–জাতীয় বড় বড় মাছের দেখা মেলে। তবে অনেক দাম হওয়ায় আমাদের দেখে মানসিক সান্ত্বনা নেওয়া ছাড়া এর স্বাদ ভোগ করার ক্ষমতা বা সামর্থ্য নেই। এ ধরনের মাছ টাকাওয়ালাদের জন্য আল্লাহ তৈরি করেছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ‘ভাসানী ব্রিগেডে’র

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর সমর্থিত প্যানেল ‘মাওলানা ভাসানী ব্রিগেড’। এ ছাড়া শিক্ষকদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রতিবাদ, পূর্বঘোষিত তারিখ ২২ ডিসেম্বরেই নির্বাচন আয়োজন, ক্যাম্পাসের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর সংস্কার এবং পক্ষপাতমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে প্যানেলটি।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের সামনে এসব দাবি তুলে ধরেন প্যানেলের প্রার্থীরা। এ সময় তাঁরা জানান, জকসু নির্বাচন, প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন, ভূমিকম্প ও দুর্যোগকালীন ছুটি, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা—এমন প্রতিটি বিষয়ই আজ আলোচনার দাবি রাখে। গত ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের মানুষ একটি বিপজ্জনক ভূমিকম্প অনুভব করেন। প্রশাসনের উচিত ছিল নিরাপত্তাবিধানে ক্যাম্পাসে যেসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, সেসব ভবনকে ভূমিকম্প–সহনশীল করতে সংস্কার করা এবং প্রয়োজনীয় উদ্ধার কার্যক্রম চালু করে আবার একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন তার চরম অযোগ্যতা ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় রেখেছে।

ভাসানী ব্রিগেডের প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, গত ২৩ নভেম্বর আয়োজিত কনসার্টে ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা এবং সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদপ্রার্থী তাকরিম আহমেদ অর্থ সহযোগিতার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। একই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী গত ২৪ নভেম্বর খাবার বিতরণ করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, গত ২৪ নভেম্বর দূরপাল্লার শিক্ষার্থীদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বাস সরবরাহ করে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল। দুই কার্যক্রমই আচরণবিধির লঙ্ঘন।

মাওলানা ভাসানী ব্রিগেড প্যানেল থেকে জিএস পদপ্রার্থী ইভান তাহসীভ বলেন, জকসু হতেই হবে এবং সময়মতোই হতে হবে। কেননা জকসু শিক্ষার্থীদের বৃহত্তর ক্ষমতায়ন হিসেবে কাজ করবে। অনেক অপশক্তি আছে, যারা ক্যাম্পাসের গণতান্ত্রিক রূপায়ণ সত্যিকার অর্থেই চায় না। সেই শক্তিকে প্রতিহত করতেই সময়মতো একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হওয়াটা জরুরি।

অভিযোগের বিষয়ে ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভূমিকম্প পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিষয়ে দৃষ্টি দিয়েছি। সে জন্য আমরা দূরপাল্লায় যাতায়াতের জন্য বাসের ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি মানবিক দৃষ্টি থেকে আমরা দিয়েছিলাম। এটা কোনো প্যানেলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। সেটা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।’

ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমত, ওই পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় সকালে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছিলাম। দ্বিতীয় বিষয় হলো নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম বাস দেওয়া যাবে কি? তারা আমাদের জানিয়েছিল ক্যাম্পাসের ভেতরে দেওয়া যাবে না। তৃতীয় বিষয় হলো আমরা আচরণবিধি মেনে বাস দিয়েছিলাম। আমরা নিয়ম মেনে ক্যাম্পাসের বাইরে বাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। এ ক্ষেত্রে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হওয়ার কথা নয়।’

জকসুর নির্বাচন কমিশনার মো. আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেসব প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে, তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই কয়েক দিনে যেসব অভিযোগ আমরা পেয়েছি, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্যানেলে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি। অবশ্যই এর জবাব তিন দিনের মধ্যে দিতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ