স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় প্রাথমিক আবেদনের মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রতি বছর আয় করে প্রায় ২ কোটি টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তথ্য দিয়েছে, গত ৫ বছরে এ খাত থেকে ৮ কোটি ৮৬ লাখ ২৭ হাজার ৯৩৫ টাকা আয় হয়েছে। বিশাল অঙ্কের এই আয়ের ‘যৌক্তিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

তাদের দাবি, দেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক সিলেকশনের জন্য টাকা নেওয়া হয় না। শুধু রাবিতে এ পদ্ধতি চালু আছে। এ ফি নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। শুধু টাকা আয়ের উদ্দেশ্যেই এই সিলেকশন পদ্ধতি। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক আবেদন জমা পড়ে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০টি, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ৪ লাখ ১৪ হাজার ১৪টি, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৩ লাখ ৯৮ হাজার, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৩ লাখ ৫ হাজার এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯০৩টি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৫৫ টাকা দিয়ে প্রাথমিক আবেদন করতে হয়।

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক আবেদন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় হয় ১ কোটি ৯৬ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা; ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ২ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ৭৭০ টাকা; ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা; ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ১ কোটি ৬৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা; ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৭৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৬৫ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পদ্ধতি অনুযায়ী, নির্দিষ্ট জিপিএ-ধারী শিক্ষার্থীদের প্রথমে ৫৫ টাকা দিয়ে প্রাথমিক আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক সিলেকশনের পর যারা ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন, কেবল তারাই ইউনিটভিত্তিক চূড়ান্ত আবেদন ফি জমা দেবেন। বিগত বছরগুলোতে প্রতি ইউনিটে ৭২ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারতেন। তবে এ বছর এক ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারবেন ৯২ হাজার শিক্ষার্থী। কিন্তু প্রাথমিক আবেদন পড়ে তার তিন-চার গুন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও প্রায় লাখো শিক্ষার্থীকে দিতে হয় ৫৫ টাকা করে।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আহমিদুর রহমান তামিম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাবিতে আবেদন ফি বেশি। তারপর আবার প্রাথমিক আবেদনে ৫৫ টাকা নেওয়ার কোনো মানেই হয় না। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই। আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে তো এ নিয়ম নেই। এ পদ্ধতি তুলে দেওয়া উচিত।”

তামিমের বাবা মো.

মমিনুর রহমানও একই মত দেন। বলেন, “যেহেতু চূড়ান্ত সিলেকশন আছে, তাই প্রাথমিক সিলেকশন থাকার যৌক্তিকতা দেখছি না। এটা মূলত অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কৌশল।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক ড. মো. সাইফুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “প্রাথমিক সিলেকশন পদ্ধতি আসলে তুলে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ আমাদের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ার সক্ষমতা নেই। একটা নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার ক্যাপাসিটি আছে। ফলে সিলেকশন রাখার বিকল্প নেই।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যদি কম আবেদন পড়ে, তাহলে এটা সম্ভব। কিন্তু আমাদের আবেদন তো পড়ে অনেক। সেখান থেকে বাছাই করে নেওয়া হয়। জিপিএ-এর যে লিমিট দেওয়া থাকে, সে পর্যন্ত কখনো যায় না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “প্রাথমিক সিলেকশন ছাড়া তো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সম্ভব নয়। আমাদের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে আসন সীমাবদ্ধ। প্রাথমিক আবেদন তুলে কতজন আবেদন করবে, এটা তো বোঝা সম্ভব নয়। এ ছাড়া বারবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়াও সম্ভব না। এখন যে প্রক্রিয়ায় সিলেকশন করা হয়, সেটা আমার কাছে মনে হয় বেস্ট ওয়ে। তবে যে ফি নেওয়া হয়, সে বিষয়ে কথা বলার জায়গা আছে। আমি এ বিষয়ে কথা বলব।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী/এনএইচ

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ফরাসি সরকারের ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স মেডেল-গোল্ড’ পেলেন বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা

ফ্রান্স সরকার প্রথমবারের মতো একজন বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তাকে সম্মানসূচক ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স মেডেল-গোল্ড লেভেল’ প্রদান করেছে। আজ বুধবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকায় নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত জিন-মার্ক সেরে-শার্লেট মঙ্গলবার তাঁর বাসভবনে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আজহারুল ইসলামকে এ সম্মাননা তুলে দেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এই পদক পান। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনিই এ সম্মানে ভূষিত হলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজহার ২০২২-২৩ সালে কর্নেল পদে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের ফোর্স হেডকোয়ার্টারে ডেপুটি চিফ অব স্টাফ (সাপোর্ট) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে তিনি বিভিন্ন দেশের ১৩ হাজারের বেশি শান্তিরক্ষীর লজিস্টিকস ও সাপোর্ট কার্যক্রম দক্ষভাবে সমন্বয় করেন।

২০২২ সালে ফরাসি বাহিনীর ‘বারখান’ অভিযান মালি থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ নাইজার ও চাদে পুনর্বিন্যাসের ফলে মালির উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি ক্যাম্পের দায়িত্ব জাতিসংঘ মিশনের হাতে আসে। এই জটিল ও সংবেদনশীল পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়ায় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজহারের নেতৃত্বাধীন লজিস্টিকস টিম নিরলসভাবে কাজ করে ফরাসি কন্টিনজেন্টের নিরাপদ প্রস্থান এবং জাতিসংঘ সদস্যদের সুশৃঙ্খল মোতায়েন নিশ্চিত করে।

২০২৩ সালে মালি থেকে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশন সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হলে মাত্র ছয় মাসের মধ্যে তাঁর নেতৃত্বাধীন লজিস্টিকস টিমের পেশাদারত্ব, নিষ্ঠা, দলগত সমন্বয় ও সূক্ষ্ম পরিকল্পনার ফলে সব জাতিসংঘ সদস্য ও তাঁদের ব্যবহার করা অস্ত্র সরঞ্জাম নিরাপদে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়।

আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষা অপারেশনে তাঁর এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ ফরাসি সরকার তাঁকে এ সম্মাননা দিয়েছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজহার একজন অভিজ্ঞ শান্তিরক্ষী হিসেবে সুদান, আইভরি কোস্ট, সোমালিয়া, সর্বশেষ মালিসহ বিভিন্ন দেশে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশের ৪০ শতাংশের বেশি কিশোর-কিশোরীর সক্রিয়তা কম
  • হোয়াইট হাউসের কাছে গুলিবিদ্ধ ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের একজন মারা গেছেন
  • মুক্ত দেশ না হয়েও চীন কীভাবে উদ্ভাবনে এগিয়ে
  • ৪৫তম বিসিএস: নন-ক্যাডারের ফল প্রকাশ, ৫৪৫ প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ
  • ইমরান খান সুস্থ আছেন—গুজব উড়িয়ে বলল পাকিস্তান
  • ফরাসি সরকারের ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স মেডেল-গোল্ড’ পেলেন বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ১ লাখের বেশি হতে পারে: জার্মানির শীর্ষ গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য
  • নারী হত্যার শাস্তির আলাদা বিধান রেখে ইতালির পার্লামেন্টে বিল পাস
  • ‘আমার বেটাকে বাঁচান’, চিকিৎসা খরচ মেটাতে হাত পাতছেন তাঁরা
  • ঘনিষ্ঠজনের হাতেই প্রতি ১০ মিনিটে খুন হন একজন নারী: জাতিসংঘ