সেন্টমার্টিন দ্বীপে মধ্যরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কয়েকটি রিসোর্ট পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। দ্বীপে কোনও ফায়ার সার্ভিস না থাকায় আগুনে এমন ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি দ্বীপের বাসিন্দাদের।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দ্বীপের পশ্চিম সৈকতের গলাচিপা এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।  

তিনি জানান, গভীর রাতে হঠাৎ করে দ্বীপের পশ্চিম সৈকতের গলাচিপার শায়রী রিসোর্টে আগুন লাগে। এরপর মুহূর্তেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। এতে শায়রী, বিচ ভ্যালি ও কিংশুক রিসোর্ট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সব মিলিয়ে ৩০টি কক্ষ আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

দ্বীপের বাসিন্দা নুর মুহাম্মদ বলেন, আগুন থেকে প্রথমে শায়রী রিসোর্টে আগুন লাগে। পরে সেখান থেকে আরও দুটি রিসোর্টে আগুন লাগে। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনসহ এগিয়ে এসে কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং বিজিবি সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি উল্লেখ করে সেন্টমার্টিন দায়িত্বে থাকা টেকনাফ ২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, আগুন লাগার খবর শুনে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হয়। দেড় ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা জানা যায়নি।

দ্বীপের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, দ্বীপে আগুন নেভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস না থাকার কারণে আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। দ্বীপের মানুষ সব কিছু থেকে বঞ্চিত। সরকারের উচিত অন্তত মানুষের কথা চিন্তা করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

এশিয়ার একাংশে ঝড়-বন্যা-ভূমিধস কেন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বড় একটি অংশজুড়ে ঘূর্ণিঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতে গত কয়েক দিনে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। সরকারি তথ্যমতে, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডেই ১ হাজার ২৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

পরপর দুটি ঘূর্ণিঝড় ও একটি টাইফুন এ বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় শহর ও গ্রাম কাদায় তলিয়ে গেছে। উদ্ধার তৎপরতায় কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কায় বন্যা ও ভূমিধসে ১১ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। গত ২৮ নভেম্বর দেশটির প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের মহাপরিচালক সম্পথ কোটুওয়েগোডা বলেন, ‘দেশটি নজিরবিহীন এক মানবিক সংকট মোকাবিলা করছে।’

তবে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল। আল-জাজিরার প্রতিবেদক জেসিকা ওয়াশিংটন জানিয়েছেন, তিনি উত্তর সুমাত্রা প্রদেশজুড়ে সর্বত্র ভূমিধস দেখেছেন। উত্তর সুমাত্রার ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি তাপানুলি। ওই এলাকা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আগেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবর সংগ্রহ করেছি। সাধারণত নির্দিষ্ট একটি জায়গায় ভূমিধস সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু এবার আমরা যেসব গ্রাম পেরিয়ে এসেছি, সব জায়গায় ভূমিধস হয়েছে।’

কেন এমন বন্যা ও ভূমিধস

ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির খবর ছড়িয়ে পড়তেই অনলাইনে এর কারণ খুঁজতে শুরু করে মানুষ। দেখা যায়, মানুষ জানতে চাইছে ঠিক কোন কারণে এতগুলো দেশে একসঙ্গে এমন চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া দেখা দিয়েছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ভারী বৃষ্টিপাত এবং মারাত্মক গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন জনগোষ্ঠী সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বন্যার কবলে পড়েছে।

কয়েকটি দেশে সর্বশেষ বন্যা পরিস্থিতি ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আরও খারাপ আকার ধারণ করেছিল। এর মধ্যে রয়েছে টাইফুন ‘কোটো’ যা ফিলিপাইনে তীব্র আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের সৃষ্টি করে। ঘূর্ণিঝড় ‘সেনিয়ার’ ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রায় মারাত্মকভাবে আঘাত হানে। আর ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়া’ শ্রীলঙ্কায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটায়।

ভিয়েতনামের পুরো না ত্রাং শহর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ