কুষ্টিয়ায় ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে যুবক নিহত
Published: 15th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়ায় ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে আবুল কাশেম শান্ত (২০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন তার বন্ধু সিয়াম (২১)।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া বিআরবি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শান্ত দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের বাহিরমাদী গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সন্ধ্যায় শান্ত ও তার বন্ধু মোটরসাইকেলে ঘুরতে যাওয়ার পথে কুষ্টিয়া শহরের বটতৈল এলাকায় বিপরীত দিকে আসা কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগের একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই শান্ত নিহত হন এবং তার বন্ধু সিয়ামকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শান্তর মরদেহ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ট্রাকটি জব্দ করে পুলিশে দেয়।
দুর্ঘটনার বিষয়ে কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানার (ওসি) সৈয়দ আল মামুন জানান, দুর্ঘটনায় নিহত শান্তর মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ট্রাকটি জব্দ করা হলেও চালক পালিয়ে গেছেন।
ঢাকা/কাঞ্চন/ইমন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশজুড়ে ‘সতর্কতা’
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
প্রসিকিউশনের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে এই রায় ঘোষণা হওয়ার কথা। রায় ঘোষণা আদালত থেকে সরাসরি সম্প্রচার করে দেশের মানুষকে দেখানোর সুযোগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আরো পড়ুন:
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুন
শেখ হাসিনার মামলার রায়: ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার দাবি ফখরুলের
রায় ঘোষণা ঘিরে আগে ও পরে যাতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কোথাও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নাশকতা না ঘটাতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সব স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে জোরদার তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ, র্যাব ও যৌথ বাহিনী।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানী ঢাকা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও মাদারীপুর জেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এই তথ্য দিয়েছেন।
বিজিবি জানায়, সাম্প্রতি রাজধানীতে ককটেল বিস্ফোরণ এবং বিভিন্ন মহাসড়কসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটায় সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিজিবি দায়িত্ব পালন করছে, যা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। ট্রাইব্যুনাল চত্বর ও এর আশপাশের এলাকায় সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে বহু স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। আইনজীবীদেরও পরিচয় যাচাই করে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে নিদর্শনা দেওয়া হয়েছে।
মোতায়েন থাকবে বিজিবি ও ডিএমপির সাঁজোয়া যান। রায়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিরতা, নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে পুলিশ, র্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, রাজনৈতিক কার্যালয় এবং কৌশলগত মোড়গুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করেছে।
মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, যৌথ অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ, র্যাবের সঙ্গে বিজিবি এবং সেনাবাহিনী সদস্যরা যৌথভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে কাজে করে যাচ্ছে। ঢাকার প্রবেশপথ, আবাসিক হোটেল, মেস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে বিশেষ তল্লাশি ও চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে।
নজরদারি করা হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। গ্রুপ ও মেসেঞ্জার পর্যবেক্ষণ করছেন গোয়েন্দারা। একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জেলা, উপজেলা শহরগুলোতেও। এসব স্থানে পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে এসব স্থানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, নগরীতে ককটেল, বোমা বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ কিম্বা নাশকতা করলে গুলি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রায়কে ঘিরে রাজধানীতে দুষ্কৃতকারীদের করার কিছু নেই। রাজধানীবাসীরও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাশকতার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং অভিযান চালিয়ে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তেমন কিছু হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা বা সংঘাতের আশঙ্কা থাকায় মাঠ প্রশাসনকে যেকোনো উস্কানিমূলক তৎপরতা প্রতিরোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জনগণকে গুজবে কান না দিতে এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে বিভিন্ন যানবাহনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দল আগুন দিয়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। ১৭ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীতে শঙ্কার কিছু নেই। নাশকতাকারীদের দমনে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরাও মাঠে কাজ করছেন।
পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানের পাশাপাশি এলিট ফোর্স র্যাবও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকায় বাড়ানো হয়েছে টহল, বসানো হয়েছে তল্লাশি চেক পোস্ট। পাড়া-মহল্লা, অলিগলি, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ স্পর্শকাতর স্থানে বাড়ানো হয়েছে র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা। সে ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ভেদ করে কোনো দুষ্কৃতকারী বিশৃঙ্খলা করতে পারবে না বলে মনে করছেন র্যাব কর্মকর্তারা।
ঢাকা/এমআর/রাসেল