ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় কিশোরগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ (পুতুল) ১২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘মামলাটি তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এর আগে, গতকাল বিকেলে তহমুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুবক কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তহমুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ সদরের উত্তর লতিবাবাদ এলাকার আবু তাহের ভূঁইয়ার ছেলে।

আরো পড়ুন:

সিরাজগঞ্জে স্কুলছাত্রকে যৌন নির্যাতন, অভিযুক্ত বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার

খুলনার সাবেক এমপিসহ ১০৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা 

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ সদর থানায় ১১টি মামলাসহ জেলায় প্রায় অর্ধশত মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় চার হাজার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১০ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে। এই প্রথম কোনো মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আসামি করা হলো। মামলায় আবদুল হামিদ ৩ নম্বর আসামি। ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে; ২ নম্বরে আছেন শেখ রেহানা।

মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনে সংগঠিত ছাত্র-জনতার গড়ে ওঠা ঐক্য-আন্দোলনকে দমন করতে দেশ-বিদেশে অবস্থান করা ১ নম্বর থেকে ২০ নম্বর আসামি সারা দেশে গণহত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক তারা কিশোরগঞ্জে যাতে কোনো আন্দোলন হতে না পারে, সে জন্য ২১ থেকে ৪০ নম্বর আসামিদের নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য ৪১ থেকে ১২৪ নম্বর আসামিরা শটগান, বন্দুক, পিস্তল, ককটেল, বোমা ও দেশি অস্ত্র এবং অর্থ সরবরাহ করে আন্দোলন দমাতে এবং গণহত্যার নির্দেশ দেন। গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরের স্টেশন রোড এলাকায় ছাত্র–জনতার মিছিলে আসামিরা হামলা চালান। তারা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়ে মামলার বাদীসহ সাক্ষীদের আহত করেন। এ ছাড়া আসামিরা গ্রেনেড, ককটেল ও বোমা নিক্ষেপ করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন।

মামলার বাদী তহমুল ইসলাম জানান, তিনি বিএনপির একজন কর্মী। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের তালিকায় তার নাম রয়েছে। আহত অবস্থায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি এখন কিছুটা সুস্থ হওয়ায় মামলা করেছেন।

ঢাকা/রুমন/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবদ ল হ ম দ ক শ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

রাশিয়ার সাবমেরিনকে ‘খুঁড়িয়ে চলা’ বলে উপহাস করলেন ন্যাটোপ্রধান

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুতে সমুদ্রের তলদেশ থেকে রাশিয়ার একটি সাবমেরিনের ভেসে ওঠার ঘটনা নিয়ে বিদ্রূপ করেছেন। গতকাল সোমবার তিনি বলেন, সাবমেরিনটি ভাঙাচোরা অবস্থায় টেনে টেনে চলছিল।

তবে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ এমন কিছু হওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, সাবমেরিনটি কোনো কারিগরি সমস্যার কারণে যে পানির ওপর উঠে আসতে বাধ্য হয়েছে, বিষয়টা এমন নয়।

কৃষ্ণ সাগরে মোতায়েন রুশ নৌবহর ব্ল্যাক সি ফ্লিট কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইংলিশ চ্যানেলে নৌযান চলাচলের নিয়ম মেনে চলতে নভোরোসিস্ক নামের সাবমেরিনটি ফ্রান্সের উপকূলে পানির ওপর ভেসে উঠেছিল। ডিজেলচালিত সাবমেরিনটিতে গুরুতর ত্রুটি দেখা দেওয়ার দাবিটি অস্বীকার করেছে তারা।

তবে নেদারল্যান্ডস কর্তৃপক্ষ সপ্তাহান্তে বলেছে, সাবমেরিনটিকে উত্তর সাগরের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

কৃষ্ণ সাগরে মোতায়েন রুশ নৌবহর ব্ল্যাক সি ফ্লিট কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইংলিশ চ্যানেলে নৌযান চলাচলের নিয়ম মেনে চলতে নভোরোসিস্ক নামের সাবমেরিনটি ফ্রান্সের উপকূলে পানির ওপর ভেসে উঠেছিল। ডিজেলচালিত সাবমেরিনটিতে গুরুতর ত্রুটি দেখা দেওয়ার দাবি অস্বীকার করেছে তারা।

ন্যাটো মহাসচিব রুতে স্লোভেনিয়ায় দেওয়া এক বক্তৃতায় সাবমেরিনটিকে ‘ভাঙাচোরা’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কার্যত এখন ভূমধ্যসাগরে রাশিয়ার নৌবাহিনীর উপস্থিতি নেই বললেই চলে। একমাত্র যা আছে—একটি ভাঙাচোরা রুশ সাবমেরিন, যা টহল শেষে হোঁচট খেতে খেতে ঘরে ফিরছে।

রুতে আরও বলেন, ‘১৯৮৪ সালের টম ক্ল্যান্সির উপন্যাস “দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর”-এর চেয়ে এখনকার পরিস্থিতি কতটাই আলাদা। এখনকার বাস্তবতা দেখে মনে হচ্ছে, সবচেয়ে কাছের এলাকায় থাকা যন্ত্রের কারিগরকে খুঁজে বের করাই যেন অভিযান।’

আরও পড়ুনসাবমেরিন শক্তিতে কারা এগিয়ে, ইরানের কাছে কতটি আছে০৪ আগস্ট ২০২৫

গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভিসিএইচকে-ওজিপিইউ নামের একটি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, নভোরোসিস্ক সাবমেরিনের জ্বালানি চুইয়ে পড়ছে, যা বিস্ফোরণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছে। ওই চ্যানেলে এর আগে কিছু তথ্য ফাঁস করা হয়েছিল। তাদের দাবি, এগুলো রাশিয়ার নিরাপত্তাসংক্রান্ত তথ্য।

ন্যাটোর মেরিটাইম কমান্ড ৯ অক্টোবর একটি ছবি প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ফরাসি নৌবাহিনীর একটি জাহাজ থেকে ব্রিটানি উপকূলের কাছে একটি রুশ সাবমেরিনের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।

ন্যাটোর মেরিটাইম কমান্ড ৯ অক্টোবর একটি ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ফরাসি নৌবাহিনীর একটি জাহাজ থেকে ব্রিটানি উপকূলের কাছে একটি ভাসমান রুশ সাবমেরিনের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।

সাবমেরিনটির নাম উল্লেখ না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ন্যাটোর মেরিটাইম কমান্ড লিখেছে, ‘আমাদের জোটকে রক্ষা এবং আটলান্টিকজুড়ে নৌ নিরাপত্তাবিষয়ক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য ন্যাটো সব সময় প্রস্তুত আছে।’

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়ার সাবমেরিনের লড়াই: সাগরের তলদেশে কার শক্তি বেশি০২ আগস্ট ২০২৫

গত শনিবার নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের নৌবাহিনী নভোরোসিস্ক সাবমেরিন পাহারা দিয়ে উত্তর সাগরে নিয়ে এসেছে। এটির সঙ্গে থাকা সহায়ক একটি জাহাজকেও একইভাবে আনা হয়েছে।

কৃষ্ণ সাগরে মোতায়েন রাশিয়ার ব্ল্যাক সি নৌবহর কর্তৃপক্ষ গতকাল জানিয়েছে, সাবমেরিনটি ভূমধ্যসাগরে কাজ শেষ করার পর পূর্বনির্ধারিত সূচি মেনে এক নৌবহর থেকে আরেক নৌবহরের দিকে যাচ্ছিল।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস বলেছে, সাবমেরিনটি ২০১৪ সাল থেকে সচল আছে। ক্যালিবার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম সাবমেরিনগুলোর একটি এটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ