বগুড়ার শেরপুরে খাসি বলে ঘোড়ার মাংস বিক্রির সময় দুই ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ওই এলাকায়।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার শাহ বন্দেগী ইউনিয়নের ধর্মকাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ধড়মোকাম এলাকার মৃত সৈয়দ আহমেদের ছেলে তৌহিদ আহমেদ (৩০) ও ফুলতলা এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে সালমান হোসেন (২৪)। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ধরমোকাম গ্রামের রাস্তা দিয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় একই গ্রামের তৌহিদ আহমেদের বাড়িতে কাটাকাটির শব্দ পেয়ে ভেতরে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায় ঘোড়া জবাই করে মাংস কাটছে। এ সময় চিৎকার দিয়ে এলাকাবাসীকে ডাকলে ৪-৫ জন পালিয়ে গেলেও সালমান ও তৌহিদকে ধরে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে জবাই করা ঘোড়াসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”

ঢাকা/এনাম/ইমন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে, পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকরা

তিন সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বিদ্যালয়ে এসেছেন মরিয়ম খাতুন। শ্রেণিকক্ষে দাঁড়িয়ে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দেখভাল করছিলেন তিনি। দ্বিতীয় শ্রেণিতে চলছিল মৌখিক পরীক্ষা। সে পরীক্ষা নিচ্ছিলেন তাহমিনা আক্তার নামের আরেক অভিভাবক। তৃতীয় শ্রেণিতে লিখিত পরীক্ষা নিচ্ছিলেন প্রধান শিক্ষক মো. আমজাদ হোসেন। 

প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা যখন পরীক্ষার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন, তখন অফিস কক্ষে বসে কর্মবিরতি পালন করছিলেন চার সহকারী শিক্ষক। 

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে এমন চিত্র দেখা যায় ঢাকার ধামরাইয়ের ডেমরান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

সরেজমিনে ধামরাইয়ের আরো কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘুরে দেখা গেছে, সহকারী শিক্ষকরা পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি কর্মসূচির অংশ হিসেবে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন। কয়েকটি স্কুলে প্রধান শিক্ষককে পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও অভিভাবকদেরকেও পরীক্ষা নিতে দেখা যায়। আবার শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের দেখভালও করতে দেখা যায় তাদেরকে।

ডেমরান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির কক্ষে হইচই করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের শান্ত করতে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে দেখা যায় অভিভাবক মরিয়ম খাতুনকে। তার দুই কন্যা ও এক পুত্র পড়ে এ বিদ্যালয়ে। 

মরিয়ম খাতুন বলেন, শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন না। তারা ক্লাসে যাচ্ছেন না। বাচ্চারা ক্লাসে হৈ-হুল্লোড় করছে। শিক্ষক না থাকায় বাধ্য হয়ে আমাদেরকেই আসতে হচ্ছে।

একই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছিলেন তাহমিনা আক্তার। তার ছেলে পড়ে এই শ্রেণিতে। 

তাহমিনা আক্তার বলেন, পরীক্ষা নেওয়ার কেউ নেই। তাই, এভাবে নিজেই পরীক্ষা নিচ্ছি প্রধান শিক্ষককে জানিয়ে। 

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে চলছিল লিখিত পরীক্ষা। সেখানে প্রশ্নপত্র বিতরণ ও পরিদর্শকের কাজ করছিলেন প্রধান শিক্ষক মো. আমজাদ হোসেন। 

তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে। তাই, শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে একাই সব চালিয়ে যাচ্ছি।

কর্মবিরতিরত শিক্ষকরা জানান, সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেড করা, ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড দেওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান জটিলতার অবসান এবং সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করার দাবি তাদের। এসব দাবি না মানলে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে। 

সহকারী শিক্ষক শামীমা আক্তার বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত। অবিলম্বে আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাই। 

সুমাইয়া আক্তার নামে অপর এক সহকারী শিক্ষক বলেন, আমরা সারা বছর বাচ্চাদের পড়াই। কিন্তু, আমরা যথাযথ সুবিধা পাচ্ছি না। তাই, এই কর্মবিরতি। দ্রুত আমাদের দাবি না মানা হলে এই কর্মসূচি চলবে।

ধামরাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোবাখখারুল ইসলাম মিজান বলেছেন, আমরা শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে চেষ্টা করছি। কর্মবিরতির বিষয়েও খোঁজ রাখা হচ্ছে। 

ঢাকা/সাব্বির/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ