কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নার্সের ভুলে দুই রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নার্সকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে দুই রোগীর মৃত্যু হয় বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক ডা.

হেলিশ রঞ্জন সরকার। 

অভিযোগ উঠেছে, অপারেশন থিয়েটারে প্রয়োগের জন্য নির্ধারিত অ্যানেসথেসিয়ার ইনজেকশন অপারেশনের জন্য ওয়ার্ডের বেডে থাকা দুই রোগীকে পুশ করেন নার্স।

আরো পড়ুন:

‘খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশ গেছেন, আর হাসিনা পালিয়ে’ 

ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল 
তত্ত্বাবধায়ককে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অ্যাম্বুলেন্সচালক আটক

মারা যাওয়া রোগীরা হলেন- জেলার কটিয়াদী উপজেলার ধুলদিয়া গ্রামের ফালু মিয়ার ছেলে মো. মনিরুজ্জামান মল্লিক (৩২) ও নিকলী উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম (২২)।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, মনিরুজ্জামান হার্নিয়ার অপারেশনের জন্য গত ৭ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন। খাদ্য নালিতে ছিদ্র থাকায় পেটে ব্যথা নিয়ে জহিরুল ইসলাম গত ১২ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন। আজ বুধবার তাদের অপারেশন হওয়ার কথা ছিল।

মারা যাওয়া রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, অপারেশনের আগে প্রস্তুতি হিসেবে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাদিরা বেগম ওয়ার্ডের বেডে দুই রোগীকে ইনজেকশন পুশ করেন। এর ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই দুজন ব্যথায় কাতরাতে শুরু করেন। পরে তাদের মৃত্যু হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, ‘নরকিউ’ নামে অ্যানেসথেসিয়ার ইনজেকশনটি অপারেশন থিয়েটারে পুশ করার কথা ছিল, কিন্তু নার্স ওই ইনজেকশনটি ওয়ার্ডের দুই রোগীকে পুশ করেন। মারাত্মক এই ভুলের কারণে দুই রোগীর মৃত্যু হয়। তাদের মৃত্যুর খবরে আত্মীয় স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে বিক্ষোভ-মিছিল হয় হাসপাতালে। এতে স্থানীয় লোকজনও অংশ নেন। বিক্ষুব্ধরা হাসপাতালে ভাঙচুর করে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

মারা যাওয়া মনিরুজ্জামানের ভাই আব্দুর রহমান জুয়েল বলেন, “নার্স ক্ষমার অযোগ্য ভুল করেছেন। তার কারণেই আমার ভাই মারা গেছেন। যে ইনজেকশন অপারেশন থিয়েটারে দেওয়ার কথা, সেটি ওয়ার্ডেই পুশ করেন নার্স। একই ভুল করা হয় আরেক রোগীর ক্ষেত্রেও। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এর দায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও এড়াতে পারে না।” 

মারা যাওয়া জহিরুলের চাচাতো ভাই মো. মোজাফ্ফর বলেন, “আমার ভাই আর্থিক সমস্যার কারণে প্রাইভেট হাসপাতালে না গিয়ে সরকারি হাসপতালে ভর্তি হয়।ভুল চিকিৎসার কারণে আমার ভাইকে হারিয়েছি। আমি ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। যেন এমন মর্মান্তিক ঘটনা আর না ঘটে।”

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. হেলিশ রঞ্জন সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “ইতোমধ্যে অভিযুক্ত নার্সকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. অজয় সরকারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নার্সের শাস্তির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।”

তিনি আরো বলেন, “অপারেশন থিয়েটারে রোগীদের চেতনানাশক ইনজেকশন দেওয়ার কথা ছিল। নার্স নাদিরা বেগম সার্জারি ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়েই রোগীদের ভুল ইনজেকশন পুশ করেন। যার কিছুক্ষণের মধ্যেই রোগীদের মৃত্যু হয়। তিনি যা করেছেন, সেটা ভুল করে করলেও অন্যায় করেছেন।”

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “ঘটনাটি জানতে পেরে হাসপাতালে যাই। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করি। আমরা মারা যাওয়া দুিই রোগীর পরিবারকে আশ্বস্ত করেছি অভিযোগ দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প শ কর ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কনটেন্ট ক্রিয়েটর থেকে অভিনেতা, রাকিন আবসারকে কতটা জানেন

‘শৈশবে আম্মু চাইতেন, আমি পাইলট হই, আব্বু চাইতেন, আর্মি অফিসার হই। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল, অভিনয়। আমি সব সময় অভিনয়টাই করতে চেয়েছি। যেহেতু অভিনয়ে যেতে পারিনি, ফলে কনটেন্ট ক্রিয়েশন (নির্মাণ) শুরু করি,’ বললেন রাকিন আবসার। ২০১১ সাল থেকে কনটেন্ট নির্মাণ করেন তিনি। নিজেই অভিনেতা, নিজেই প্রযোজক। কমেডি করে পরিচিতি পেয়েছেন বেশি। ২০১৫ সালের পর থেকে অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে থাকেন। তাঁকে চিন্তা করেও কোনো কোনো চরিত্র লেখা হয়েছে। অডিশনও দিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত আর কোনো চরিত্রই করা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে সেপ্টেম্বরে ওয়েব সিনেমা ‘প্ল্যান বি’-তে মূল চরিত্রে রাকিনকে দেখা গেল। ২৮ সেপ্টেম্বর বায়োস্কোপ প্লাসে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন নাহিদ হাসনাত। রাকিন জানালেন, ‘আমাকে চিন্তা করেই চরিত্রটি লেখা হয়েছিল। তিন দিনে সিনেমাটির দৃশ্যধারণ শেষ হয়েছে।’

কনটেন্ট নির্মাণ থেকে সিনেমায়
বেশ কয়েকজন ভারতীয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরই বলিউডে ক্যারিয়ার গড়েছেন। কনটেন্ট ক্রিয়েটর প্রজক্তা কলি নেটফ্লিক্সের সিরিজ ‘মিসম্যাচ’, ধর্মা প্রডাকশনের ‘যুগ যুগ জিও’ সিনেমায় আলোও কেড়েছেন। অভিনয়কে ক্যারিয়ার হিসেবেও নিয়েছেন কেউ কেউ। তবে আমাদের এখানকার চিত্রটা আলাদা। রাকিন বলেন, ‘দেশে কনটেন্ট ক্রিয়েশন থেকে কেউ সচরাচর অভিনয়ে ক্যারিয়ার গড়েনি। হলেও খুব রেয়ার। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা অভিনয় করতে পারে, সেটা অনেকে জানে কিন্তু মেইনস্ট্রিম ইন্ডাস্ট্রিতে জিনিসটা এখনো গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেনি।’

রাকিন আবসার। শিল্পীর সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ