স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত হবে মিডিয়া হান্ট প্রতিযোগিতা
Published: 15th, January 2025 GMT
গণমাধ্যম, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় নতুন প্রতিভা খুঁজে পেতে স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ১০ দিনব্যাপী ‘মিডিয়া ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতা ২০২৫’ আয়োজন করা হয়েছে।
জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতা আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে শুরু হবে। চলবে আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।
প্রতিযোগিতায় যারা সর্বোচ্চ মেধা ও দক্ষতার প্রদর্শন করতে পারবেন, তাদেরকে স্টেট ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে চার বছরব্যাপী অনার্স কোর্সে শতভাগ স্কলারশিপে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হবে। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলেই মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে ১০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত ওয়েভারে ভর্তির সুযোগ থাকবে।
প্রতিযোগিতাটি সম্পূর্ণ অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। দেশের যেকোন অঞ্চল থেকে প্রতিযোগীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা হলো- এইচএসসি পাশ হতে হবে। এছাড়া গণমাধ্যম, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে আগ্রহী কিংবা মূল ধারার গণমাধ্যমে সাংবাদিক/মফস্বল সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত হতে হবে।
নিউজ রিপোর্টিং, ডিজিটাল মিডিয়া, কন্টেন্ট ক্রিয়েশন, ভিডিও প্রোডাকশন, ফটোগ্রাফি এবং সোশ্যাল মিডিয়া কৌশল ইত্যাদি বিষয়ের ওপর দক্ষতার ভিত্তিতে প্রতিযোগিদের স্কলারশিপ প্রদান করা হবে। তবে যারা এ বিশেষ অফারে ভর্তি হবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ওয়েভার পাবেন না।
এ বিষয়ে বিভাগটির বিভাগীয় প্রধান মো.
বিস্তারিত তথ্য স্টেট ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া পেইজে পাওয়া যাবে। এছাড়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণের এ লিংকে প্রবেশ করতে হবে।
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ট ট ইউন ভ র স ট
এছাড়াও পড়ুন:
জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের আরও শক্তিশালী অংশীদারত্ব প্রয়োজন: বিশ্বব্যাংক
সরকারি, বেসরকারি ও কমিউনিটি পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক ও অংশীদারত্বমূলক কার্যক্রম বৃদ্ধির মাধ্যমে জলবায়ু সংকটের বুদ্ধিদীপ্ত সমাধান করতে পারে বাংলাদেশ। যা শুধু জলবায়ু ঝুঁকিই কমাবে না বরং টেকসই সমাধান দেবে।
সোমবার বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ‘ফ্রম রিস্ক টু রেজিলিয়েন্স: হেলপিং পিপল অ্যান্ড ফার্মস অ্যাডাপ্ট ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রতিবেদনে প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, এই অংশীদারত্বমূলক কাজকে অগ্রাধিকার দিলে পরিবার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি শক্তিশালী হবে, দীর্ঘ মেয়াদে যার অগ্রগতি হবে আরও স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক।
বেসরকারি খাতের সম্পদ ও বিনিয়োগ উপযুক্ত স্থানে সরিয়ে নেওয়া হলে জলবায়ু সংকটজনিত ক্ষয়ক্ষতি এক-তৃতীয়াংশ কমানো সম্ভব বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। বাজেট সংকটের মধ্যেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো অর্থায়নে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি, পরিবহন ও ডিজিটাল নেটওয়ার্কের উন্নয়ন ও নমনীয় সামাজিক সুরক্ষা কাঠামো প্রবর্তনের মাধ্যমে বেসরকারি খাতকে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জনসংখ্যার আধিক্য, উচ্চ তাপমাত্রা ও অবস্থানগত কারণে দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সর্বোচ্চ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম, আর এই অঞ্চলে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০৩০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলের ৯০ শতাংশ মানুষ চরম উচ্চ তাপের ঝুঁকিতে থাকবে ও প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে থাকবে। ইতিমধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে পানি ও মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন প্রভাবিত হচ্ছে।
দেশের ২৫০টি উপকূলীয় গ্রামে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সবচেয়ে জরুরি জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো। দীর্ঘ মেয়াদে ৫৭ শতাংশ পরিবার পর্যাপ্ত দুর্যোগ-সুরক্ষা অবকাঠামোর অভাবকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছে; ৫৬ শতাংশ পরিবার বলেছে, আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তারা প্রয়োজনীয় অভিযোজন করতে পারছে না।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শুধু পরিবেশগত নয়, বরং মানবিক। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভুগছে দরিদ্র ও কৃষিনির্ভর পরিবারগুলো।
জরিপে দেখা যায়, আগামী ১০ বছরে আবহাওয়াজনিত ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে দক্ষিণ এশিয়ার তিন-চতুর্থাংশ পরিবার ও প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে ৬৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এবং ৮০ শতাংশ পরিবার কোনো না কোনোভাবে অভিযোজনমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের উন্নত প্রযুক্তি বা অবকাঠামোর বদলে কম খরচের সাধারণ সমাধানের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের বাঁধ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণসহ বিভিন্ন সরকারি বিনিয়োগ দুর্যোগের সময় অনেক প্রাণ বাঁচিয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সঠিকভাবে পরিকল্পিত সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি এবং হালনাগাদ তথ্য দুর্যোগের সময় দরিদ্র মানুষের বড় সহায়ক হতে পারে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে সরকারি উদ্যোগের পরিধি সীমিত। এ অবস্থায় জলবায়ু অভিযোজনে বেসরকারি খাতকে সামনে এনে একটি সমন্বিত নীতিপ্রকল্প প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসমে বলেন, ‘বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা বারবার নতুনভাবে পরীক্ষিত হচ্ছে। অভিযোজন ব্যাপক হলেও ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে, ফলে আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন। দুর্যোগ সহনশীলতা গড়ে তুলতে আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থা, সামাজিক সুরক্ষা, জলবায়ুবান্ধব কৃষি এবং ঝুঁকিভিত্তিক অর্থায়ন বাড়াতে হবে। শহরাঞ্চলেও পরিকল্পিত হস্তক্ষেপ জরুরি।’
জলবায়ু অভিযোজনে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছেন প্রতিবেদনটির সহ-লেখক ও বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ সিদ্ধার্থ শর্মা। তার মতে, পরিবার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যে অভিযোজন করছে, কিন্তু সংকটের প্রকৃতি এতটাই জটিল ও বিস্তৃত যে সরকার ও বেসরকারি খাতকে আরও সমন্বিত ও জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রতিবেদনটি আরও বলছে, বাংলাদেশ অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের জন্য শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে পারে। আগাম সতর্কবার্তা ও সাইক্লোন সেন্টারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের সুফল ইতিমধ্যে মিলেছে; প্রাণহানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। সঠিক বিনিয়োগ ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারলে স্থানীয় অভিযোজনে সাফল্য আরও বাড়ানো সম্ভব বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে নতুন প্রযুক্তিনির্ভর অভিযোজন কৌশল গ্রহণ করতে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি রাস্তাঘাট নির্মাণ, স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছে, যা কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে এবং মানবসম্পদের সুরক্ষা দেবে।