পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের দাদার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে আটোয়ারী উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের রাখল দেবীহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
জানাজায় কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, সারজিস আলমের পরিবারের সদস্যসহ এক হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন।
জানাজায় দাদার সঙ্গে নানা স্মৃতিচারণ করে সারজিস বলেন, দুনিয়াতে আমরা কেউ চিরস্থায়ী নই। আমরা ছোটখাট বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করি। কিন্তু দিন শেষে আমাদের সেই ছোটখাট বিষয়ও আর থাকে না। কয়েক গজ কাপড় আর কয়েক হাত মাটির নিচেই যেতে হবে। তিনি জানাজা নামাজ থেকেও শিক্ষা নিতে আহ্বান জানান। দাদার জন্য সবার দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে বার্ধক্যজনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সারজিস আলমের দাদা মারা যান।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা ও তারেকের ফেরা নিয়ে বিতর্ক
বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি অসুস্থ, কিন্তু এবারের অসুস্থতা যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা খুব সংকটাপন্ন। দীর্ঘদিন তাঁর অসুস্থতার কারণে তাঁর পুত্র তারেক রহমান কার্যত দলের প্রধান হলেও তিনি এখনো দলের চেয়ারপারসন। খালেদা জিয়ার বর্তমান অসুস্থতা এক অসাধারণ রাজনৈতিক সংস্কৃতির নজির তৈরি করেছে।
শেখ হাসিনার পতনের পর তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করা রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের বিরুদ্ধে বিতর্কে নেমেছে। বর্তমান পটভূমিতে সবাই চায় তার রাজনৈতিক বয়ান যতটা সম্ভব প্রতিষ্ঠিত করতে। দীর্ঘদিন একটা স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের অধীন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা–কর্মীদের মধ্যেও একধরনের স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা দেখা গেছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই দলগুলোর মধ্যকার পারস্পরিক বিতর্ক গণতান্ত্রিক পরিবেশের সীমা ছাড়িয়ে রীতিমতো কলহে রূপ নিয়েছে। একে অপরের প্রতি প্রতিদ্বন্দ্বীর মতো আচরণ না করে ক্ষেত্রবিশেষে শত্রুর মতো আচরণ করছে।
কিন্তু এমন রাজনৈতিক পটভূমিতেও প্রতিটি রাজনৈতিক দল বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি তাদের সম্মান দ্ব্যর্থহীনভাবে দেখিয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান হওয়ার পরও এমন জাতীয় অভিভাবকত্বের জায়গা অর্জন করতে পারা বাংলাদেশের মতো দেশে এক অভাবনীয় ঘটনা। সেটি হওয়ারই কথা।
আরও পড়ুনখালেদা জিয়ার দেশে ফেরা এবং ‘নিয়তির সন্তান’ তারেক রহমান০৯ মে ২০২৫শেখ হাসিনার প্রতিষ্ঠিত স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর লড়াই করেছে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন দলটি। এর মাশুল দলের অসংখ্য নেতা–কর্মীর মতো দিয়েছেন খালেদা জিয়া স্বয়ং। অত্যন্ত খারাপ শারীরিক অবস্থায়ও দীর্ঘদিন তিনি অন্যায়ভাবে জেলে আটক ছিলেন। যে অসুস্থতার কারণে তিনি আজ মৃত্যুর মুখোমুখি, সেটি বেড়ে যাওয়ার পেছনে হাসিনা সরকারের ষড়যন্ত্র ক্রিয়াশীল ছিল—এ অভিযোগও আছে।
অথচ সরকারের সঙ্গে কিছু সমঝোতা মেনে নিলে অনেক আগেই বিদেশে গিয়ে সুচিকিৎসা নিয়ে জীবিত একমাত্র সন্তানের সঙ্গে বাকি জীবন সুন্দরভাবে কাটাতে পারতেন। কিন্তু সেই পথে না গিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে ভয়ংকর মাশুল দিয়েছেন তিনি, কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তাঁর এ আপসহীনতা এখন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নিয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার পটভূমিতে আলোচনায় এসেছে তাঁর বেঁচে থাকা একমাত্র সন্তান তারেক রহমান কেন দেশে ফিরছেন না। একটি রাষ্ট্রে, সমাজে ঘটে চলা প্রতিটি বিষয়ই রাজনৈতিক। আর সেটি যদি হয় দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল, যে দলটি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনে আগামী নির্বাচনে বিজয় লাভ করবে বলেই ধারণা করা হয়, সেই দলটির প্রধান নেতৃত্বের অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে তাঁর সন্তানের ফিরে আসা নিয়ে প্রশ্ন ঘিরে, রাজনীতি হওয়াটা স্বাভাবিক।
খালেদা জিয়া যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সেই এভারকেয়ার হসপিটালের সামনে দলটির অনেক নেতা-কর্মী অবস্থান করছেন৷