ফরচুন বরিশালের ‘গোপন অস্ত্র’ হিসেবে আর্বিভূত হয়েছেন পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আলী। ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে ৩২ বছর বয়সী পেসারকে একাদশে রাখে বরিশাল টিম ম্যানেজমেন্ট। ৫ উইকেট নিয়ে বাজিমাত করেন তিনি। এর মধ্যে এক ওভারে ৪ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েন ডানহাতি এই পেসার। 

পাকিস্তানের হয়ে ৪টি টেস্ট খেলেছেন তিনি। ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দলেও। যে কারণে তার নামের পাশে টেস্ট ক্রিকেটার তকমা লেগে গেছে। যদিও মোহাম্মদ আলী ঘরোয়া পর্যায়ে টেস্ট, ওয়ানডে, টি-২০ সবই খেলেছেন। 

ম্যাচ শেষে সংবাদ মাধ্যমকে প্রশ্নের জবাবে আলী জানান, টেস্টই মূল ক্রিকেট। টেস্ট ক্রিকেট বা চার দিনের ক্রিকেট খেললে সাদা বলের ক্রিকেট সহজ হয়ে যায়, ‘টেস্ট ক্রিকেট সবচেয়ে কঠিন। যারা টেস্ট বা চার দিনের ক্রিকেট খেলেন টি-২০ তাদের জন্য অনেকটা সহজ হয়ে যায়। টি-২০ ক্রিকেটে বৈচিত্র থাকতে হয়। কন্ডিশন যাই হোক ভালো জায়গায় বোলিং করতে হয়। যারা টেস্ট খেলেন তাদের জন্য সংক্ষিপ্ত সংস্করণ সহজ হয়ে যায়।’

আলীকে টেস্ট ক্রিকেটার বলা হলেও সাদা বলের ঘরোয়া ক্রিকেটেও ভালো করেছেন তিনি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে পাঁচ উইকেট আছে তার। টি-২০ ফরম্যাটে প্রথমবার ৫ উইকেট পেলেও পূর্বে ৩বার চার উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে তার। আলী সেটাই মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘লাল বলের ক্রিকেটার সাদা বলে ভালো করবে না এমনই ভাবা হয়। কিন্তু সাদা বলের ভালো করা আমার জন্য নতুন নয়। পাকিস্তানে সুযোগ পাই বা না পাই তাও আমি চেষ্টা করি উপভোগ করতে।’   

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল র জন য উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধে ঢাবির ১৯৫ শহীদের ইতিহাস জানাতে ছাত্রদল নেতার ভিন্নধর্মী উদ্যোগ

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আত্মত্যাগের ইতিহাস শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের এক নেতা।

রোববার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত পুরো ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যাকাণ্ডের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন তিনি।

এই কর্মসূচির উদ্যোগ নেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু হায়াত মো. জুলফিকার। তিনি ক্যাম্পাসের টিএসসি প্রাঙ্গণ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সম্মুখভাগ, হাকিম চত্বর, মধুর ক্যানটিন, কলাভবন প্রাঙ্গণ, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, আইন অনুষদ প্রাঙ্গণ, মোতাহার হোসেন ভবন, বিজ্ঞান গ্রন্থাগার, কার্জন হল এলাকা, দোয়েল চত্বর, চারুকলাসহ প্রতিটি আবাসিক হলসংলগ্ন এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদদের নাম ও পরিচয় লেখা ছোট ছোট প্ল্যাকার্ড স্থাপন করেন।

এ বিষয়ে জুলফিকার প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা অনুযায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ হন। দেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁদের এই আত্মত্যাগ ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ত্যাগ ও অবদান অনেকাংশে তরুণ প্রজন্মের আড়ালে চলে যাচ্ছে। এ বাস্তবতা উপলব্ধি করেই শহীদদের নাম-পরিচয় ও তাঁদের আত্মোৎসর্গের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই তিনি এ উদ্যোগ নেন।

আবু হায়াত মো. জুলফিকার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের শহীদেরা কেবল ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ কোনো নাম নন; তাঁরা আমাদের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার ভিত্তি। তাঁদের আত্মত্যাগকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের ইতিহাস সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের অবশ্য কর্তব্য।’

মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শহীদের ইতিহাস জানানোর ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের কাজ যেন অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষার্থী শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতিসত্তা, চেতনা ও প্রেরণার এক অমলিন উৎস। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে আমাদের প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে ১৯৭১ সালে ১৯৫ জন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা–কর্মচারী প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন।’

শাহরিয়ার তানজিল বলেন, ‘এই আত্মত্যাগ আমাদের জন্য যেমন গভীর বেদনার, তেমনি এটি সাহস, দায়িত্ববোধ ও অনুপ্রেরণার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্ল্যাকার্ড স্থাপনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও শহীদদের স্মরণ করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ