৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন প্রক্রিয়ায় মার্কিন ভিসা আবেদন
Published: 4th, February 2025 GMT
৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ভিসা আবেদনের নতুন প্রক্রিয়া চালু করা হবে বলে জানিয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাস। নতুন প্রক্রিয়া চালুর কারণে মার্কিন ভিসা আবেদনের ওয়েবসাইট (www.ustraveldocs.com) আগামীকাল বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত কার্যকর থাকছে না।
সোমবার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন দূতাবাস।
পোস্টে বলা হয়, 'আমরা নতুন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের পর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে আবারও ওয়েবসাইটের কার্যক্রম চালু করব।’
তবে যাদের মার্কিন ভিসার জন্য পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট রয়েছে, তাদেরকে নির্দিষ্ট তারিখ ও সময় অনুযায়ী অ্যাপয়েন্টমেন্টে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস।
পাশাপাশি, আজ মঙ্গলবার থেকে মার্কিন দূতাবাস অভিবাসন ছাড়া অন্যান্য ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লট সংক্রান্ত তথ্য প্রতি মঙ্গলবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় ঘোষণা করবে বলেও পোস্টে উল্লেখ করা হয়।
দূতাবাস এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য এই লিংকে ক্লিক করার আহ্বান জানিয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনে কি কাজ হবে
ভুয়া মামলা থেকে নিরপরাধ মানুষকে পরিত্রাণ দিতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের যে বার্তা দিলেন, সেটা ইতিবাচক। কিন্তু এই উদ্যোগের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি জটিল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া।
সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধিতে বলা আছে, কমিশনার, এসপি বা এসপি পদমর্যাদার কোনো পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো মামলার বিষয়ে যদি ‘মনে করেন’, তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রাথমিক প্রতিবেদন চাওয়া যৌক্তিক, তাহলে তিনি তা চাইতে পারবেন। প্রতিবেদন প্রস্তুত হলে তখন তা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেবেন। ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখেন, মামলায় কোনো আসামিকে বিনা অপরাধে জড়ানো হয়েছে, যাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ কোনো প্রমাণ নেই, তখন তিনি (ম্যাজিস্ট্রেট) সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে (বিনা অপরাধে জড়ানো ব্যক্তি) মুক্তি দিতে পারবেন।
এখানে ‘মনে করার’ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির (পুলিশ কর্মকর্তা) সম্পূর্ণ ইচ্ছাধীন। তিনি মনে করলে মামলার তদন্ত চলাকালে প্রাথমিক প্রতিবেদন চাইবেন, না মনে করলে চাইবেন না। আইনি বিধান এখানে বাধ্যতামূলক নয়। দু–একটি ভুয়া মামলা হলে হয়তো এই বিধান কার্যকর হতে পারে। কিন্তু যেখানে হাজার হাজার ভুয়া মামলা করা হয়েছে এবং একটি মামলায় শতাধিক কিংবা তার বেশি ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, সেখানে আইন প্রয়োগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার মর্জির ওপর ছেড়ে দেওয়া কতটা সমীচীন, তা–ও ভেবে দেখার বিষয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতসহ বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ১ হাজার ৪৯৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা ৫৯৯টি। অন্যান্য ৯০০টি। এসব মামলায় ১০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যা মামলার মধ্যে অনেকগুলোর তদন্তে অগ্রগতি আছে বলেও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। তবে ৪০টি মামলা পর্যালোচনা করে ঢালাওভাবে আসামি করাসহ নানা অসংগতি খুঁজে পেয়েছে। এসব মামলায় ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের চেয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
ডেইলি স্টার–এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৬৬ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ফৌজদারি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, সংস্কৃতিসেবীদের বিরুদ্ধেও ঢালাও হত্যা মামলা হয়েছে। পেশাজীবীদের কেউ দুর্নীতি করলে, কেউ স্বৈরাচারী সরকারের অপকর্মে সহায়তা করলে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা হতে পারত। কিন্তু সবাইকে গয়রহ হত্যা বা হত্যাচেষ্টা মামলায় ফাঁসানো কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নিজেও স্বীকার করেছেন, ‘আগে ভুয়া মামলা করত পুলিশ। তারা ১০টা নাম আর ৫০টা বেনামি আসামি দিত। এখন পাবলিক (জনগণ) দিচ্ছে ১০টা নাম, ৫০টা ভুয়া নাম।’
পুলিশ মামলা দেয়নি বলে সরকার দায় এড়াতে পারে না। একই ঘটনায় একাধিক মামলা, এমনকি একই ঘটনায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে মামলা হওয়ার রহস্য কী? কেউ যদি ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের জন্য মামলা করে থাকেন, সরকারের কর্তব্য হলো তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া—দুটিই ফৌজদারি অপরাধ এবং এর জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। বিচারক যদি মনে করেন, আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা, ভিত্তিহীন, তুচ্ছ, বিরক্তিকর বা হয়রানিমূলক এবং আসামির প্রতি চাপ সৃষ্টি করতে মামলাটি করা হয়েছে, তাহলে তিনি ওই মামলাকে মিথ্যা মামলা হিসেবে গণ্য করতে পারেন।
আওয়ামী লীগ আমলে আলোচিত ছিল গায়েবি মামলা। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে তার স্থান নিয়েছে ঢালাও মামলা। কেবল ফৌজদারি কার্যবিধি অল্প কিছু সংশোধন করে নিরীহ মানুষকে রক্ষা করা যাবে না; বরং সরকার উচ্চপর্যায়ে কমিটি করে মামলাগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যেভাবেই হোক, মামলার হয়রানি থেকে যেমন নিরপরাধ মানুষ রেহাই দিতে হবে, তেমনি প্রকৃত অপরাধীদের বিচারও নিশ্চিত করতে হবে।