মধ্যনগরে অনির্দিষ্টকালের ১৪৪ ধারা জারি
Published: 22nd, February 2025 GMT
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর বাজারে অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল রায়। শনিবারও (২২ ফেব্রুয়ারি) এই আইন জারি রয়েছে সেখানে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার মধ্যনগর থানা কর্তৃক এক আসামিকে গ্রেপ্তার করাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর বাজারসহ আশেপাশের এলাকায় স্থানীয় দুটি গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে মধ্যনগর বাজারে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে আক্রমণ সংঘটিত হয়। পরবর্তীতে অপর পক্ষের লোকজন মধ্যনগর বাজারে অবস্থিত বিপক্ষ গ্রুপের একটি অফিসে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। এ নিয়ে যে কোনো সময়ে আইনশৃঙ্খলা অবনতিসহ সাধারণ জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান রয়েছে। জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে ১৪৪ ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মধ্যনগর বাজারসহ আশেপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব প্রকার সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরায় বিএনপির ২ পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ১৪৪ ধারা জারি
১৪৪ ধারা জারি করায় অন্যস্থানে বিএনপির সমাবেশ
উল্লেখ্য যে, ১৪৪ ধারা জারিকৃত সময়ে উক্ত এলাকায় পাঁচ বা ততোধিক লোকের একত্রে জটলা, সমাবেশ কিংবা যে কোনো ধরনের অস্ত্রবহন ও সন্দেহজনক ঘোরাফেরা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
মধ্যনগর থানার ওসি সজীব রহমান বলেন, “মধ্যনগরের একটি ওয়ার্ডের যুবলীগের সহ-সভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় বিএনপির একটি পক্ষের নেতা শহিদ মিয়া গ্রেপ্তারকৃতকে নিজের কর্মী দাবি করে থানায় এসে শোরগোল শুরু করেন। পরে থানা থেকে বের হয়ে মিছিল করেন তিনি ও তার সমর্থকরা। এসময় তারা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাঈয়ুম মজনুর অফিস ভাঙচুর করেন। তখন দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। আমরা খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। পরে মজনুর লোকজন শহিদের অফিস ভাঙচুর করে।”
তিনি আরো বলেন, “উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবার পরামর্শে বাজার ও আশপাশের এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।”
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১৪৪ ধ র ১৪৪ ধ র ব এনপ র এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
বাংলাদেশে পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। নিজের এই ধারণার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘কারণ, এত কষ্ট, এত ত্যাগ কখনোই বাংলাদেশের মানুষ কোনো সংস্কারের জন্য বা রাষ্ট্র মেরামতের জন্য করে নাই।’
আজ বুধবার বিকেলে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইন উপদেষ্টা। সহকারী অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশের প্রাথমিক খসড়ার ওপর মতবিনিময় সভার আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
‘আমরা অনেক ধরনের সুযোগ পেয়েছি, কোনো সুযোগেরই আমরা সদ্ব্যবহার করতে পারি নাই’ মন্তব্য করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘এইবার আমার মনে হয় এত ত্যাগ, এত রক্তক্ষয়ের পর এবার যে আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের সুযোগ এসেছে, আমাদের যে একটু সুশাসন প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার যে সুযোগ এসেছে, এবার যদি আমরা সেই সুযোগটা মিস করি...আমার মনে হয় আগামী কয়েক দশকে আমরা এই সুযোগ পাব না। কাজেই এই সুযোগ আমাদের কোনোভাবেই মিস করা চলবে না।’
মতবিনিময় সভায় সহকারী অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশের প্রাথমিক খসড়ার ওপর আলোচনায় অংশ নেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। এ সময় খসড়াটির নানা সংকট ও করণীয় বিষয়ে তুলে ধরা হয়। তার জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আরও কনসাল্টেশন (পরামর্শ) করব। আরও মতামত দেব। আমি খুবই খুশি হয়েছি আমাদের এই আইনটাকে একদম তুলাধোনা করে দেওয়া হয়েছে। এটা ভালো হয়েছে। আমাদের জন্য একটা ইনসেন্টিভ তৈরি হয়েছে। আমরা আরও ভালো করার চেষ্টা করব।’
খসড়াটি চূড়ান্ত করতে আরও পরামর্শ নেওয়া হবে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘একটা খুব ভালো সাজেশন আসছে পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে কনসাল্টেশন। এটা পলিটিক্যাল পার্টির জন্য খুবই রেলেভান্ট (প্রাসঙ্গিক), অবশ্যই করব। আপনাদের সবার সহযোগিতায় ইনশা আল্লাহ আমরা একটা ভালো আইন করতে পারব এবং আমাদের প্রত্যাশা আছে এই সরকারের আমলে অন্তত কিছু নিয়োগ যদি আমরা অ্যাটর্নি সার্ভিসে দিয়ে দিতে পারি—সে চেষ্টা করব।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সব সময় শুনতাম যে নিম্ন আদালতে বা উচ্চ আদালতে যে দুর্নীতি হয় বা অনিয়ম হয় এখানে অনেক পক্ষ থাকে। শুধু যে আপনার সাপোর্ট স্টাফরা বা জাজরা করে, সেটা না। এক শ্রেণির আইনজীবীরা, সরকারি আইনজীবীদেরও ভূমিকা থাকে। আমি কিছু রিসার্চ করেও শুনেছি যে অল্প, অত্যন্ত অল্প টাকা পান উনারা। বিশেষ করে যাঁরা পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসে আসেন, তারপরও এটা হওয়ার প্রচণ্ড আগ্রহ থাকে সবার। কারণ, এমন অভিযোগ শুনেছি, এগেইন বলছি অভিযোগ অন্যভাবে নিয়েন না। সরকারি উকিল হয়ে উনারা দেখা যায়, প্রতিপক্ষের পক্ষে কাজ করে টাকা নেন এরকম কিছু উদাহরণ আছে। সবাই না। অনেকে তো আছেন, অনেক ভালো প্র্যাকটিস করেছেন বা করছেন।’
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল প্রসিকিউটোরিল অ্যাসিস্ট্যান্ট এহসানুল হক সমাজী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী তানিম হোসেন শাওন, আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া, বিজিবির পাবলিক প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন, জেলা ও দায়রা জজ আদালত ঢাকার পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ইকবাল হোসেন, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের প্রমুখ।