ধর্ষণের বিচার দাবিতে মধ্যরাতে জাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
Published: 9th, March 2025 GMT
৮ বছরের শিশু ধর্ষণসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় বিচারের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ-মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (৯ মার্চ) রাত পৌনে দুইটায় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় জমায়েত করে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রায় আধাঘণ্টা বিক্ষোভ শেষে রাত তিনটার দিকে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘ধর্ষকদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘তুমি কে-আমি কে, আছিয়া-আছিয়া’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘হলে হলে খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে’, ‘চব্বিশ এর বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এসময় ইংরেজী বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতী বলেন, “গত কয়েকদিন যাবত দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের মতো নৃশংস ঘটনা ঘটলেও সরকারের নিরব ভূমিকা আমাদের পীড়া দেয়৷ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব ধর্ষকদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে কঠোর কর্মসূচি দিব এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ব্লকেড দিব।”
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, “গত পরশু মাগুরাতে আট বছরের শিশু পর্যন্ত ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। শনিবার গাজীপুরে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে সে দৃশ্য নিজের স্মার্টফোনে ধারণ করেন এক ইয়াবা আসক্ত তরুণ। এসব ঘটনার দৃশ্যমান বিচার না হওয়ার কারণে ক্রমান্বয়ে ধর্ষণের মত অপরাধ বেড়ে চলেছে।”
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, “চব্বিশে আমরা এতগুলো প্রাণ, এতগুলো রক্ত দিয়েছি এই অনিরাপদ বাংলাদেশ দেখার জন্য না।”
ঢাকা/হাবীব/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপি নেতা অমিত
যশোরের চৌগাছায় ধর্ষণের শিকার ৭ বছরের সেই শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। একই সঙ্গে শিশুটির আইনি সুবিচার পেতে জেলার জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার যশোর জেনারেল হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে গিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিশুটির চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি কথা বলেন।
বুধবার যশোরের চৌগাছায় বাড়ির পাশে শিশুটিকে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী দাদা। এরপর শিশুটিকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির মা থানায় অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে (৫৫) আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শিশুটির মা হাসপাতালে জানান, তার মেয়েটি বুধবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলা করছিল। এসময় শিশুটিকে একা পেয়ে মিজানুর জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে কান্না করছিল। তার কাছ থেকে ঘটনা শুনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। তার চিকিৎসা চলছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন সাফায়েত বলেন, শিশুটিকে আশাঙ্কাজনক অবস্থায় আনা হয়। তার শরীরের ক্ষত স্থানে অপারেশন করা হয়েছে। এখন শিশুটিকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। এখন শঙ্কামুক্ত।
চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, শিশুটির শরীরে প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, রিপোর্ট পাওয়ার পর আসল ঘটনা জানা যাবে। ঘটনার পরেই অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিকে বিচারক কারাগারে প্রেরণ করেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে যান বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এ সময় তার সঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) যশোরের নেতৃবৃন্দ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিএনপি নেতা অমিত শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন এবং শিশুটির পরিবার আইনি বিচার পেতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দদের নির্দেশনা দেন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, শিশুটির সঙ্গে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। শিশুটির বাবা বিদেশ থাকে। এই পরিবারে কোন পুরুষ সদস্য নেই। তাছাড়া তারা গরীব। ঘটনাটি জানার পর বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে আমরা শিশুটিকে দেখতে যাই।