শিবচরে ডাকাত সন্দেহে চারজনকে গণপিটুনি
Published: 16th, March 2025 GMT
মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চরে ডাকাত সন্দেহে চারজনকে আটক করে ‘গণপিটুনি’ দিয়েছে স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এসময় তাদের কাছ থেকে ছুরি, চাকু উদ্ধার করে পুলিশ।
রবিবার (১৬ মার্চ) ভোর রাতের দিকে এ চারজনকে আটক করে ‘গণপিটুনি’ দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের থেকে জানা গেছে, রবিবার ভোররাতের দিকে এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর গোলচত্বরে একটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে এ চারজন নামেন। এসময় তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয়রা তাদের নাম পরিচয় জানতে চান। এক পর্যায়ে চার আগুন্তুকের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা মনে হয় স্থানীয়দের। উত্তেজিত হয়ে চারজনের একজন হঠাৎ করেই ছুরি বের করে আঘাত করার চেষ্টা করে। এসময় আশেপাশের লোকজন চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে চারজনকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। এরপর পুলিশকে খবর পুলিশ এসে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটককৃতরা হলেন, বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাটের কাচনা এলাকার মৃত সিরাজ মীরের ছেলে সোহরাব মীর (২৫), নুরু মীরের ছেলে মেহেদী মীর (২৪), ভান্ডারখোলা এলাকার মৃত শাহজাহান শেখের ছেলে বশির শেখ (২৮) এবং নগরকান্দি এলাকার কবির শেখের ছেলে রাজু শেখ (২৮)।
স্থানীয় রাকিব নামে একজন বলেন, “একটা অ্যাম্বুলেন্সে করে এরা পাঁচ্চর গোলচত্বরে আসে। চারজন বের হলে তাদের সাথে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এসময় লোকজন চলে এলে পালিয়ে যেতে পারেনি। তবে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে ওই সময় অন্যরা পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সে আরও ডাকাত সদস্য ছিল। দেশীয় অস্ত্রও থাকতে পারে।”
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ঢাকা/বেলাল/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণপ ট ন চ রজনক শ বচর
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ
বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন আর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস,ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে দিনব্যাপী এই আয়োজনে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়।
কলেজ প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন সব জায়গায় করা হয়েছে রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই পার করেছে এক আনন্দমুখর সময়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।
আলোচনা পর্বের বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। নিয়মিত অধ্যয়ন, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তোমরাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শুধু শিক্ষার নয়, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। নবীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন শুধু ভালো ফলই না করে, বরং সৎ, ন্যায়ের পক্ষে ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, আবৃত্তি, রম্য বিতর্ক ও ফ্যাশন শো যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে। দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রি আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় কবিতা ‘বোঝাপড়া’।
একাদশ শ্রেণির ঊর্মি ও মাহী পরিবেশন করে দ্বৈত নৃত্য, যা উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখরিত করে তোলে সমগ্র অনুষ্ঠানস্থল।
ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা পরিবেশন করেন রম্য বিতর্ক “আমার দেশে আমিই সেরা” যেখানে রসিকতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপে হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঊর্মি ও তিশার দ্বৈত নৃত্য অনুষ্ঠানে বিশেষ নজর কাড়ে।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শো। এ বছরের থিম ছিল— “সমাজে প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অবস্থান”। শিক্ষার্থীরা পোশাক ও উপস্থাপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন সমাজের প্রান্তিক নারীদের সংগ্রাম, আত্মমর্যাদা ও জীবনের বাস্তব চিত্র।
পোশাকের নকশা, রঙ ও ভাবনায় ফুটে ওঠে নারীর শক্তি, সাহস ও সমতার বার্তা। দর্শক ও অতিথিরা প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সচেতন চিন্তাধারা।
নবীন শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম মালিহা বলেন, “আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কলেজের পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং সিনিয়রদের ভালোবাসা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মনে হচ্ছে আমি সত্যিই নতুন জীবনের এক সুন্দর অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি।”
আরেক নবীন শিক্ষার্থী তাবাসসুম তিথি বলেন, “আজ আমাদের কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো। নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং এত সুন্দর আয়োজনের অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”
পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বিএনসিসি ও গার্ল গাইডের সদস্যরা।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবেরা তাহমিনা, অতিথি হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর ড. সেলিনা আক্তার, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানসহ মহিলা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।