মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চরে ডাকাত সন্দেহে চারজনকে আটক করে ‘গণপিটুনি’ দিয়েছে স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এসময় তাদের কাছ থেকে ছুরি, চাকু উদ্ধার করে পুলিশ। 

রবিবার (১৬ মার্চ) ভোর রাতের দিকে এ চারজনকে আটক করে ‘গণপিটুনি’ দেওয়া হয়।

স্থানীয়দের থেকে জানা গেছে, রবিবার ভোররাতের দিকে এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর গোলচত্বরে একটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে এ চারজন নামেন। এসময় তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয়রা তাদের নাম পরিচয় জানতে চান। এক পর্যায়ে চার আগুন্তুকের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা মনে হয় স্থানীয়দের। উত্তেজিত হয়ে চারজনের একজন হঠাৎ করেই ছুরি বের করে আঘাত করার চেষ্টা করে। এসময় আশেপাশের লোকজন চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে চারজনকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। এরপর পুলিশকে খবর পুলিশ এসে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। 

আটককৃতরা হলেন, বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাটের কাচনা এলাকার মৃত সিরাজ মীরের ছেলে সোহরাব মীর (২৫), নুরু মীরের ছেলে মেহেদী মীর (২৪), ভান্ডারখোলা এলাকার মৃত শাহজাহান শেখের ছেলে বশির শেখ (২৮) এবং নগরকান্দি এলাকার কবির শেখের ছেলে রাজু শেখ (২৮)।

স্থানীয় রাকিব নামে একজন বলেন, “একটা অ্যাম্বুলেন্সে করে এরা পাঁচ্চর গোলচত্বরে আসে। চারজন বের হলে তাদের সাথে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এসময় লোকজন চলে এলে পালিয়ে যেতে পারেনি। তবে অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে ওই সময় অন্যরা পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সে আরও ডাকাত সদস্য ছিল। দেশীয় অস্ত্রও থাকতে পারে।”

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

রতন শেখ বলেন, “ভোর রাত ৪টা ২০ মিনিটের দিকে পাঁচ্চর গোলচত্বর এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ডাকাতদল ডাকাতি করতে আসছে সন্দেহে স্থানীয় জনসাধারণ গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে ডিউটিরত এসআই সালাউদ্দিন এসআই মিরাজ সংগীয় ফোর্স আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে। তাদের কাছ থেকে ছুরি জব্দ করা হয়। আহতাবস্থায় চারজনকে পুলিশ হেফাজতে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।”

ঢাকা/বেলাল/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণপ ট ন চ রজনক শ বচর

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেরপুরে পুলিশের উপর হামলা: থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ৪
  • ১৩ ঘণ্টা পর রংপুরের রেল যোগাযোগ সচল
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
  • হেরোইন বিক্রির অভিযোগে ধামরাইয়ে গ্রেপ্তার ৩
  • টেকনাফে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ২