এলডিসি উত্তরণের কর্মকৌশল বাস্তবায়নে ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন
Published: 26th, March 2025 GMT
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে (এলডিসি) উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে রূপান্তর প্রক্রিয়াকে মসৃণ করার পরিকল্পনা বা স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্র্যাটেজি (এসটিএস) বাস্তবায়নে ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে সরকার। সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে এ কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে এলডিসি উত্তরণকে মসৃণ ও টেকসই করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এসটিএস কর্মকৌশল অনুমোদন ও প্রকাশ করা হয়েছে। এই কর্মকৌশল বাস্তবায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তার জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ছয় সদস্যের বিশেষ কমিটির প্রধান করা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী) আনিসুজ্জামান চৌধুরীকে। অপর পাঁচ সদস্য হলেন—বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি অনুবিভাগ) মো.
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়েছে, আগামীকাল উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ এই কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন কমিটির প্রধান আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
কমিটির কার্যক্রম বিষয়ে জানতে চাইলে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণে আমাদের সামনে খুবই কম সময় রয়েছে। এর ফলে স্বল্প সময়ে ঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। এ কারণে এসটিএস কীভাবে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেটি দেখভাল করবে এই কমিটি। এসটিএস বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে অনেকগুলো উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দায়িত্বও বণ্টন করা হয়েছে। ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি এসব উপকমিটিকে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এলডিসি থেকে উত্তরণের দিন ঠিক আছে ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর। ১৯৭৫ সালে এলডিসি তালিকায় যুক্ত হয় বাংলাদেশ। এলডিসিভুক্ত দেশ হওয়ার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য-সুবিধাসহ নানা সুবিধা পায় বাংলাদেশ। এলডিসি থেকে উত্তরণের পর এই সুবিধা আর থাকবে না। তাই ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকেরা এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। ব্যবসায়ীদের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শুরুতে সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছিল। ১১ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে) আনিসুজ্জামান চৌধুরী সাংবাদিকদের এমন ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন।
তবে ১৩ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সময়সীমা না পিছিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এলডিসি থেকে উত্তরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস য র ব শ ষ উপদ ষ ট কম ট র মন ত র সরক র এলড স
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।
২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।
ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।