সময়সূচি থেকে পিছিয়ে যাওয়া যাবে না
Published: 10th, April 2025 GMT
সরকারি চাকরিতে পরীক্ষার জট খুলতে বাংলাদেশ কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে পিএসসির ঘাড়ে চারটি বিসিএস পরীক্ষার জট পড়েছে। এর মধ্যে ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগ শাসনামলে। আর বর্তমান পিএসসি কর্তৃপক্ষ ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এই পরীক্ষা নিয়েও নতুন জটিলতা শুরু হয়েছে। আবেদনকারীদের একাংশ পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।
প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত নভেম্বরে। এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আগামী ২৭ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু ইতিমধ্যে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে পিএসসির সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তাঁদের কয়েকজন প্রতিনিধি কমিশনের পদাধিকারীদের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন।
পরীক্ষা পেছানো ও বাতিলের দাবিতে আন্দোলন সাম্প্রতিক একধরনের ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে, যার শুরু হয়েছিল গত বছর এইচএসসির অসমাপ্ত পরীক্ষা বাতিলের মধ্য দিয়ে।
পিএসসি আগামী দিনে প্রতিবছর একটি বিসিএস পরীক্ষা শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু আগের তিনটি পরীক্ষা বকেয়া রেখে সেটি করা সম্ভব হবে না। আগের জট খুলেই নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। একটি বিসিএস পরীক্ষার কয়েকটি ধাপ। প্রথমে ১০০ নম্বরে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়, যেখানে তিন থেকে চার লাখ আবেদনকারী অংশ নিয়ে থাকেন। এর মধ্য থেকে ১০ থেকে ১২ হাজার লিখিত পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হন এবং মৌখিক পরীক্ষার পর শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত তালিকা করা হয়। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে যে লোকবল প্রয়োজন, পিএসসির তা নেই। তাদের নির্ভর করতে হয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর।
পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিটি বিসিএস এক বছরের মধ্যে শেষ করার কথা বলেছেন। এ ছাড়া বিসিএস পরীক্ষার পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আনাসহ পিএসসি নিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সরকারের কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, তাতে দেড় বছরের মধ্যে বিসিএস পরীক্ষা শেষ করে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে বিসিএস পরীক্ষা শেষ করতে হবে এক বছরের মধ্যে। বাকি প্রায় ছয় মাসে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ ও নিয়োগ শেষ করতে হবে। এ জন্য প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা বছরের কোন সময়ে হবে, তারও একটি বার্ষিক পঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডার নির্ধারণের কথা বলেছে কমিশন।
যেকোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমস্যা হলো তিন বিসিএসের জট। পিএসসি এই জট যত দ্রুত খুলতে পারবে, তত নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ হবে। এই প্রেক্ষাপটে পিএসসির উচিত হবে ৪৪ বিসিএসের বাকি প্রক্রিয়া অবিলম্বে শেষ করো। এরপর পর্যায়ক্রমে তাদের ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএসের পরীক্ষা শেষ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ৪৭ বিসিএসের কার্যক্রমও শুরু করতে হবে। মুষ্টিমেয় প্রার্থীর আবদারের মুখে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পেছানো ঠিক হবে বলে আমরা মনে করি না। যেকোনো একটি পরীক্ষা পেছানোর প্রভাব পরবর্তী প্রতিটি পরীক্ষায় পড়বে। যেখানে সরকারি চাকরিতে বহু পদ খালি আছে, সেখানে পরীক্ষা পেছানোর অর্থ হবে চাকরিপ্রার্থীদের অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়ে দেওয়া। অতএব, পরীক্ষার সময়সূচির বিষয়ে তারা অনড় থাকবে আশা করি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব স এস র পর ক ষ র প এসস র শ ষ কর বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউনূস-তারেক বৈঠক ‘টার্নিং পয়েন্টে’, অনিশ্চয়তা কাটছে
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি একটি ‘টার্নিং পয়েন্টে’ পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘চতুর্দিকে একটা অনিশ্চয়তা ছিলো এবং অনেকে অনেক কথা বলছিলো বিভিন্নভাবে। আজকে এই দুই নেতা প্রমাণ করলেন যে বাংলাদেশের মানুষ এখনও প্রয়োজনের সময় ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।’
আজ শুক্রবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমান। ওই বৈঠক শেষে দুই পক্ষের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারেক রহমানের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সব প্রস্তুতি শেষ করা গেলে ২০২৬ সালে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও (ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে) নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
এই বক্তব্য আসার পর বিকেলে গুলশানে বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘বৈঠকটির পরে যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত নির্বাচনের সময়সীমা উপযুক্ত নয় বলে সেটিকে এগিয়ে আনার বিষয়ে তারেক রহমানের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টা সম্মত হয়েছেন এবং তারা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন।’
এখন প্রয়োজন অতীতের কথা ভুলে গিয়ে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নির্বাচন দিয়ে জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই বৈঠকে সফল হওয়ার মাধ্যমে তারেক রহমান তার রাষ্ট্রনায়কোচিত গুণ প্রমাণ করেছেন।’