বিল সই করতে ভারতের রাষ্ট্রপতিকেও তিন মাস সময় বেঁধে দিলেন সুপ্রিম কোর্ট
Published: 12th, April 2025 GMT
বিল সই করার ক্ষেত্রে রাজ্যপালের মতো ভারতের রাষ্ট্রপতিকেও সময় বেঁধে দিলেন সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য বিধানসভায় পাস হওয়া কোনো বিল বিবেচনার জন্য রাজ্যপাল যদি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠান, তা হলে রাষ্ট্রপতি তা অনির্দিষ্টকাল ফেলে রাখতে পারবেন না। তিন মাসের মধ্যে তাঁকে বিলে সম্মতি বা অসম্মতি দিতে হবে। কোনো কারণে সম্মতি দিতে দেরি হলে তার কারণ জানাতে হবে। রাজ্য সরকারকে সেই কারণ জানাতে রাষ্ট্রপতি ভবন বাধ্য থাকবে।
তিন মাস সময়সীমার মধ্যে রাষ্ট্রপতি বিল–সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত না নিলে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারবে। নজিরবিহীন রায়ে বলা হয়েছে, অনির্দিষ্টকাল ধরে সিদ্ধান্ত না জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ‘পূর্ণাঙ্গ ভেটো’ প্রয়োগ করতে পারেন না।
তামিলনাড়ু রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপাল মামলার যে রায় গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছেন, সেই রায়ে রাজ্যপালের মতো রাষ্ট্রপতির ক্ষেত্রেও এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন গতকাল শুক্রবার রাতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে বি পর্দিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবন তাঁদের রায়ে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল এন রবির কড়া সমালোচনা করেছিলেন। রাজ্যপাল রবির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০২৩ সালে বিধানসভায় পাস হওয়া ১০টি বিলে সই না করে রাজ্যপাল আটকে রেখেছেন। রাজ্যপালের ওই আচরণ ‘বেআইনি’। ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে বলেছিলেন, ‘কোনো সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো কাজ না করলে আদালত হস্তক্ষেপে বিরত থাকবে না।’ সেই রায়েই রাষ্ট্রপতির ক্ষেত্রেও সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
ভারতীয় সংবিধানের ২০১ অনুচ্ছেদে বিলে সই করার বিষয়ে রাষ্ট্রপতির জন্য কোনো সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি তিনটি কাজ করতে পারেন। বিলে সম্মতি দিতে পারেন, বিলটি নাকচ করে দিতে পারেন অথবা বিলটি পুনর্বিবেচনার জন্য সুপারিশসহ ফেরত পাঠাতে পারেন।
সুপ্রিম কোর্ট এই প্রথম সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বললেন, রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি কেউই অনির্দিষ্টকাল সিদ্ধান্ত না নিয়ে থাকতে পারেন না। তামিলনাড়ু মামলায় দেখা গেছে, রাজ্যপাল রবি বিলে সম্মতি না দিয়ে তিন থেকে সাড়ে তিন বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির সম্মতি পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন বলে জানিয়েছেন। রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি কেউই সিদ্ধান্ত না নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ভেটো প্রয়োগ করতে পারেন না।
বিচারপতি পর্দিওয়ালা ও বিচারপতি মহাদেবন তাঁদের রায়ে বলেছেন, সই করার আগে যেকোনো বিল সঠিকভাবে ‘বিবেচনা’ করা অবশ্যকর্তব্য। সেই বিবেচনা কঠোর সময়সীমার মধ্যে বেঁধে ফেলা কঠিন। সিদ্ধান্ত নিতে রাষ্ট্রপতির সময় লাগতেই পারে। আদালতও তা জানেন। কিন্তু তা ‘নিষ্ক্রিয়তা’র অজুহাত হতে পারে না। কোনো যুক্তি ও ব্যাখ্যা ছাড়া বিলের সম্মতিতে বিলম্ব করা সাংবিধানিক নীতি লঙ্ঘন করে। তা ছাড়া ওই বিলম্ব যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পক্ষেও ক্ষতিকর। রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতি অকারণ বিলম্ব করতে পারেন না। তাঁরাও গোটা ব্যবস্থার অংশ।
ওই ১০টি বিলই দ্বিতীয়বার বিবেচনা করে রাজ্যপালের কাছে তামিলনাড়ু সরকার পাঠিয়েছিল। রাজ্যপাল তা পাঠিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতির কাছে। তা সত্ত্বেও সম্মতি না মেলায় রায় দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিলেন, পুনর্বিবেচনার পরেও বিলে সম্মতি না আসায় ধরে নিতে হবে বিলগুলো সম্মতি পেয়েছে। এই মন্তব্যের পর বিনা সম্মতিতেই ওই ১০টি বিল তামিলনাড়ুতে আইনে পরিণত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন বলেছেন, এই রায় ঐতিহাসিক। ভারতের রাজ্যগুলোর জন্য এ এক বিরাট জয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ষ ট রপত র ক ব চ রপত সময়স ম র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৪৭তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার্থীদের জন্য পিএসসির যত নির্দেশনা
আগামী শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার আসনব্যবস্থা, সময়সূচি ও শিক্ষার্থীদের জন্য নানা নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়েছে।
পিএসসি জানিয়েছে, ৪৭তম বিসিএসে অংশ নিতে মোট ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪৭ জন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছেন। ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ৪৭তম বিসিএসে মোট শূন্য ক্যাডার পদের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৮৭। আর নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা ২০১। এই বিসিএস থেকে মোট ৩ হাজার ৬৮৮ জনকে (ক্যাডার ও নন–ক্যাডার মিলিয়ে) নিয়োগ দেওয়া হবে। এই বিসিএসে কিছু নতুন পদ যুক্ত হয়েছে।
সময়সূচি ও কেন্দ্র১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে পরীক্ষা। পরীক্ষাকেন্দ্র ৮টি। ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ।
আরও পড়ুনইউনিমেট-শাবানা মাহমুদ-দেখার হাওর-বেন গুরিয়ান বিমানবন্দর-কী, জেনে নিন১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫পরীক্ষার্থীদের করণীয়১। পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। ৯টা ৩০ মিনিটের পর কোনো পরীক্ষার্থী হলে প্রবেশ করতে পারবেন না। পরীক্ষার্থীদের হলের নাম ও কক্ষ নম্বর আগেই মেসেজের মাধ্যমে তাঁদের মুঠোফোন নম্বরে প্রেরণ করা হবে।
২। সকাল ৯টা ৩০ থেকে ৯টা ৫৫ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তরপত্র বিতরণ করা হবে। উত্তরপত্রের ৪টি সেট থাকবে, যেমন সেট # ১, ২, ৩ ও ৪। সকাল ১০টায় পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে।
আরও পড়ুন১২ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫৩। পরীক্ষাকেন্দ্রে বইপুস্তক, সব ধরনের ঘড়ি, মুঠোফোন, ক্যালকুলেটর, সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্যাংক কার্ড/ক্রেডিট কার্ডসদৃশ কোনো ডিভাইস, গহনা ও ব্যাগ আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বর্ণিত নিষিদ্ধ সামগ্রীসহ কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে পারবেন না।
৪। পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীরা কানের ওপর কোনো আবরণ রাখবেন না, কান খোলা রাখতে হবে। কানে কোনো ধরনের হিয়ারিং এইড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শপত্রসহ কমিশনের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
৫। পরীক্ষায় মোট ২০০টি এমসিকিউ টাইপ প্রশ্ন থাকবে। পরীক্ষার্থী প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য ১ নম্বর পাবেন, তবে ভুল উত্তর দিলে প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ০.৫০ নম্বর করে কাটা হবে।
আরও পড়ুন৪৭ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি: শেষ মুহূর্তে আত্মবিশ্বাসই আসল প্রস্তুতি১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫৬। প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন থেকে শ্রুতলেখক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কমিশনের মনোনীত শ্রুতলেখক ছাড়া অন্য কেউ শ্রুতলেখক হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রার্থীদের জন্য শ্রুতলেখকদের ক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টার পরীক্ষার জন্য ১০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টার পরীক্ষার জন্য ৫ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে।
পরীক্ষাকেন্দ্র ও নির্দেশনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন।
আরও পড়ুন৪৩তম বিসিএসের প্রশাসনে প্রথম শানিরুলকে ভাইভায় যেসব প্রশ্ন করা হয়েছিল ২৯ মে ২০২৪