ঢাকার শেওড়াপাড়ায় চাপাতি ঠেকিয়ে তরুণীর চেইন ও ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১, দুজনকে খুঁজছে পুলিশ
Published: 18th, April 2025 GMT
ঢাকার পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় ইস্ট ওয়েস্ট স্কুলের পাশের গলিতে চাপাতি ঠেকিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় শাকিল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ভোররাতে গাজীপুর সদর উপজেলার পুবাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ বলেছে, শাকিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত চাপাতিটি ঢাকায় তাঁর মণিপুরের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ছিনতাই করা আড়াই হাজার টাকাও পাওয়া গেছে। তাঁর মোটরসাইকেলটিও পুবাইল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার শাকিল ও তাঁর সহযোগীরা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দলের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁরা মিরপুর এলাকায় মোটরসাইকেলে করে এসে চাপাতি ঠেকিয়ে নগদ টাকা ছিনতাই ও মারামারি করতেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে চাপাতি ঠেকিয়ে এক তরুণীর কাছ থেকে রুপার চেইন ও ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে ছিনতাইকারীরা। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ওসি সাজ্জাদ রোমন জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে তিন ছিনতাইকারী মোটরসাইকেলে এসে রিকশাযাত্রী এক তরুণীকে চাপাতি ঠেকিয়ে তাঁর ভ্যানিটি ব্যাগ ও তাঁর গলা থেকে একটি রুপার চেইন ছিনিয়ে নেয়। ভ্যানিটি ব্যাগে আড়াই হাজার টাকা ও তিনটি ক্রেডিট কার্ড ছিল। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ছিনতাইকারীরা গা ঢাকা দেয়। গ্রেপ্তার শাকিল মোটরসাইকেলের চালক ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে ছিনতাই করে নেওয়া আড়াই হাজার টাকা ও ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়েছে।
শাকিলের তথ্যের ভিত্তিতে আরেক ছিনতাইকারী শ্যামলকে ধরতে সাভারের কাউনদিয়া এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছিল বলে জানান ওসি। পুলিশের উপস্থিতিতে টের পেয়ে শ্যামল পালিয়ে যান বলে তিনি জানান। শ্যামল ও তাঁর সহযোগীকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
ভিডিওতে দেখা যায়, একটি রিকশায় দুজন যাত্রী একটি গলির মুখে এসে দাঁড়ান। যাত্রীদের একজন তরুণ, আরেকজন তরুণী। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে রিকশার সামনে থামে। তাদের একজনের মাথায় হেলমেট ছিল। অন্য দুজনের একজনের গায়ে কালো শার্ট ও অপরজনের গায়ে সাদা টি-শার্ট। মুহূর্তেই সাদা টি-শার্ট ও কালো শার্ট পরা দুজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে যায়। সাদা শার্ট পরা ব্যক্তি কোমর থেকে একটি চাপাতি বের করে। সে রিকশায় বসে থাকা তরুণীকে চাপাতি দিয়ে কোপ দেওয়ার অঙ্গভঙ্গি দেখায় এবং তরুণীর কাছ থেকে ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। কালো শার্ট পরা লোকটি তরুণীর গলা থেকে একটি রুপার চেইন ও একটি কালো রঙের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় মোটরসাইকেলটি ঘুরিয়ে রাস্তার পাশে রাখা হয়। মোটরসাইকেলের চালক (হেলমেট পরা) ও তার দুই সহযোগী গলির পাশের একটি বাসার দিকে যায়।
আরও পড়ুনরাজধানীর শেওড়াপাড়ায় চাপাতি ঠেকিয়ে ছিনতাই, ভিডিও ভাইরাল১৫ ঘণ্টা আগেভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কিছুক্ষণ পর তিন ছিনতাইকারী একসঙ্গে এগিয়ে এসে মোটরসাইকেলে ওঠে। এ সময় রিকশায় তরুণীর সহযাত্রী তরুণটি এগিয়ে এসে কালো রঙের ব্যাগটি ফেরত চাইলে সেটি তাঁর দিকে ছুড়ে মারে ছিনতাইকারীরা। এরপর তারা মোটরসাইকেলে উঠে চলে যায়। তখন একজন নিরাপত্তারক্ষী একটি লাঠি হাতে ঘটনাস্থলে আসেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখাতে হামলা, নির্দেশদাতা এখনো পলাতক
চট্টগ্রাম নগরে কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার প্রাইভেট কার থামিয়ে হামলার ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে বান্দরবান থেকে কাজী মো. ইমন হোসেন (২৩) ও মো. সুজন (২৪)–কে গ্রেপ্তার করে ডিবি (পশ্চিম)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, এক ব্যক্তির নির্দেশে কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এ হামলা চালান। সেই নির্দেশদাতা এখনো পলাতক।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশীদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, হামলার সময় ওই ব্যক্তির মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কাস্টমস কর্মকর্তাকে ভয় দেখানোই ছিল হামলার লক্ষ্য। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
৪ ডিসেম্বর সকালে নগরের ডবলমুরিং থানার সিডিএ আবাসিক এলাকায় কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বদরুল আরেফিন ভাড়ায় নেওয়া প্রাইভেট কারে করে যাচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে তিন ব্যক্তি তাঁদের গাড়ি থামিয়ে চাপাতি দিয়ে গাড়ির কাচে কোপ দেন। গাড়ির কাচ ভাঙার পাশাপাশি হামলাকারীরা একজন আরেকজনকে বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’। তবে দুই কর্মকর্তা দ্রুত গাড়ি সরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন।
কাস্টমস কর্মকর্তাদের ধারণা, সম্প্রতি বিভিন্ন অনিয়ম, রাজস্ব জালিয়াতি ও নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি আটকে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জড়িত চক্র হামলা চালাতে পারে। কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের নিষিদ্ধ পপি বীজ ও ঘন চিনি, প্রায় ৩০ কোটি টাকার নিষিদ্ধ সিগারেট এবং মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা বিপুল পরিমাণ প্রসাধনী জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযানে দুজন কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। প্রসাধনী জব্দের পর মো. আসাদুজ্জামানকে ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়।
হামলার নির্দেশদাতার পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে তারা। তবে হামলায় ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. তারেক মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, নিষিদ্ধ পপি বীজ, ঘন চিনি ও মিথ্যা ঘোষণায় আসা প্রসাধনী জব্দের কারণে একটি সিন্ডিকেট ক্ষুব্ধ। গত দুই মাসে এসব সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকি আসছে।
আরও পড়ুনগাড়ি থামিয়ে কাচে চাপাতির কোপ, একজন বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’০৪ ডিসেম্বর ২০২৫