পুলিশের কোনো কর্মকর্তা অপরাধে জড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হয়
Published: 17th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, পুলিশ বাহিনীতে কোনো কর্মকর্তা কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলে যথাযথ অনুসন্ধান করে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সম্প্রতি অনেকগুলো জেলার পুলিশ সুপারসহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
বৃহস্পতিবার পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো.
বিবৃতিতে বলা হয়, বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেনের একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ভিডিও পর্যালোচনায় দেখা যায়, এম সারোয়ার হোসেন ১৬ এপ্রিল পুলিশ সুপার তৌহিদুল আরিফ সম্পর্কে কম-বেশি ১০ কোটি টাকার দুর্নীতি উল্লেখ করেন। এমনকি পুলিশ মহাপরিদর্শক পুলিশে কর্মরত কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেন না বলে তিনি (এম সারোয়ার হোসেন) বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইন অনুযায়ী সাক্ষ্য–প্রমাণ ছাড়া কারও বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে এ রকম বক্তব্য উপস্থাপন করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মানহানির শামিল। একজন স্বনামধন্য আইনজীবী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত একজন কর্মকর্তাকে যথাযথ অনুসন্ধান ব্যতিরেকে দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসার বলায় আমাদের হতাশ করেছে। পুলিশ বাহিনীর প্রধানকে জড়িয়ে এ ধরনের অসত্য বক্তব্য প্রদান কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের বক্তব্য পুলিশ বাহিনীর মনোবলকে দুর্বল করা ও সুনাম জনসমক্ষে হেয় করার শামিল।’
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছে। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা সব সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষায় এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করছেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ