তিন সপ্তাহে ১ লাখ আফগানকে ফেরত পাঠাল পাকিস্তান
Published: 22nd, April 2025 GMT
তিন সপ্তাহে ১ লাখের বেশি আফগান নাগরিক পাকিস্তান ছেড়েছেন। আজ মঙ্গলবার পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কথা জানিয়েছে। ইসলামাবাদ বসবাসের অনুমতি ব্যাপক হারে বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর পাকিস্তান ছেড়েছেন এসব আফগান।
‘সন্ত্রাসী ও অপরাধী’ আখ্যা দিয়ে ১ এপ্রিল থেকে আফগানদের ব্যাপক হারে দেশ থেকে বিতাড়নের কাজ শুরু করে পাকিস্তান সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এপ্রিলে ১ লাখ ৫২৯ জন আফগান নিজ দেশে ফিরে গেছেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রতিবেশী দেশটির তালেবান সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে আফগানদের বিতাড়ন করছে পাকিস্তান সরকার। সম্প্রতি সীমান্ত এলাকায় হামলা বেড়ে যাওয়ার জন্য তালেবান সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে আসছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তান ছাড়ার সময়সীমা শেষ হতে যাওয়ায় এপ্রিলের শুরু থেকেই সীমান্ত অভিমুখে আফগান পরিবারগুলোর গাড়িবহর দেখা যায়। মানবাধিকার সংকটে জর্জরিত একটি দেশে ফিরছে পরিবারগুলো।
আফগান নাগরিকদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা করতে এক দিনের সফরে কাবুলে যান পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। এরপর গত শনিবার প্রতিবেশী দেশটির ‘একতরফা এই পদক্ষেপের’ নিন্দা জানান আফগানিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দ।
এর আগে পাকিস্তানে ‘অবৈধভাবে’ অবস্থানরত আফগান নাগরিকদের গত বছরের নভেম্বরের মধ্যে দেশটি ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার। বেঁধে দেওয়া ওই সময়সীমার মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি আফগান ফিরে যান।
আরও পড়ুনপাকিস্তান ছাড়লেন ১ লাখ ৪০ হাজার আফগান ০১ নভেম্বর ২০২৩পাকিস্তানে প্রায় ৪০ লাখ আফগান বসবাস করছেন। সরকারের আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, তাঁদের মধ্যে ১৭ লাখই অনিবন্ধিত।
সম্প্রতি আফগান অভিবাসীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয় ইসলামাবাদ। দেশটির অভিযোগ, সীমান্তে হামলা বেড়ে যাওয়া, জঙ্গি হামলা, চোরাচালান এবং অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে আফগান নাগরিকেরা জড়িত। তবে আফগানিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
আরও পড়ুনআফগান অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু পাকিস্তানের ০৬ অক্টোবর ২০২৩.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রম আইনের সংশোধন কবে হবে, তা বলছে না শ্রম মন্ত্রণালয়
শ্রম আইন সংশোধনের অধ্যাদেশ কবে হবে, সে বিষয়ে আর সময়সীমার কথা বলছে না শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। গত নভেম্বর মাসে এই মন্ত্রণালয় বলেছিল, ২০২৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এ অধ্যাদেশ হবে। মার্চ শেষে এপ্রিলও শেষ হচ্ছে আজ বুধবার।
সচিবালয়ে আজ ‘মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আইন সংশোধনীর ক্ষেত্রে সময়সীমা থাকার পক্ষে নন তিনি। শ্রমিক–মালিকদের স্বার্থ রক্ষাসহ শিগগিরই তা করা হবে। বিষয়টি এখন কোন প্রক্রিয়ায় আছে, তা বলতে রাজি হননি শ্রম উপদেষ্টা।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। তিনি আরও বলেন, ‘একসময় স্লোগান ছিল দুনিয়ার মজদুর, এক হও।’ এখন তা বদলে গেছে। এখন হবে ‘দুনিয়ার মালিক-শ্রমিক, এক হও’। এখন ভালো মালিকেরা শ্রমিকদের সন্তানের মতো মনে করেন।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ১০১টি ধারা ও উপধারা সংশোধন হবে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১০ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডির বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
আইএলওর বৈঠকে যোগ দিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে যে দলটি জেনেভা সফর করে, সেখানে শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হুমায়ুন কবীর, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন সরকার ও শ্রম উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম ছিলেন।
এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর তৎকালীন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রমসচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান আইএলওর গভর্নিং বডির বৈঠক থেকে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মার্চের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন হবে। উপদেষ্টা তখন এ–ও বলেছিলেন, আগের সরকারের আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) নেতৃত্বাধীন দলকে আইএলও পর্ষদে অপদস্থ করা হয়েছিল। অথচ এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। বাংলাদেশের পদক্ষেপগুলো নিয়ে বরং প্রশংসা করা হয়েছে। কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথাও বলেছিল।
জানা গেছে, শ্রম অধিকার বাস্তবায়নে ঘাটতির অভিযোগ এনে জাপানসহ ছয়টি দেশের পক্ষ থেকে আইএলওতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। মামলাগুলো চলমান।
আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিক রয়েছে। এদিকে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদকে (টিসিসি) শ্রমিকপক্ষ জানিয়েছে, আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে প্রধানত পোশাক খাতের শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মে দিবস আর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ–স্কুল পর্যায়ে রচনা ও প্রবন্ধ লেখার ওপরে বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হবে।
এ ছাড়া শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রকাশিত বা প্রচারিত মানসম্মত সংবাদ বা স্থিরচিত্র যাচাই করে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের দেওয়া হবে পুরস্কার।