কুয়েট শিক্ষার্থীদের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন চলছে, একজন হাসপাতালে
Published: 23rd, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরণ অনশন করছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ১৭ নেতা-কর্মী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই অনশন কর্মসূচির ১৪ ঘণ্টা পেরিয়েছে। ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় অনশনরত একজন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন শুরু করেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের এই নেতা-কর্মীরা। এর আগে বিকেল থেকে প্রতীকী অনশন চলছিল।
আজ বুধবার বেলা ১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ১৪ ঘণ্টা পরও অনশনকারীরা সেখানে অবস্থান করছেন। তাঁরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আমরণ অনশন করছেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ১৭ নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে আছেন ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব মহির আলম। আরও আছেন লিমন মাহমুদ, রেজওয়ান আহমেদ, সাকিব আহমেদ, সাব্বির উদ্দিন, আহনাফ রহমান, আনিকা তাহসিনা, সায়লা আক্তার প্রমুখ।
অনশনরত অবস্থায় আজ সকালে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন সাদাত অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব রেজওয়ান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’
এ বিষয়ে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আরেক যুগ্ম সদস্যসচিব সাকিব আহমেদ বলেন, ‘আমরা কুয়েটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আমরণ অনশন শুরু করেছি। ইতিমধ্যে আমাদের একজন অসুস্থ হয়ে গেছেন।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক কর্মসূচি থেকে মঙ্গলবার রাত ১০টার মধ্যে কুয়েটের উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে কুয়েট উপাচার্যকে না সরানো হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ‘কুয়েট বাঁচাতে শাহবাগ ব্লকেডের’ ঘোষণা দেওয়া হয়।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কুয়েটের উপাচার্য পদত্যাগ না করায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু শিক্ষার্থী রাত ১০টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তাঁরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীদের অবরোধে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন তাঁরা।
কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি ঘিরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। আগামী ২ মে থেকে আবাসিক হল খুলে দেওয়া এবং ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
আরও পড়ুনকুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শাহবাগে ‘ব্লকেড’, যান চলাচল বন্ধ১৪ ঘণ্টা আগেকিন্তু গত ১৫ এপ্রিল কুয়েটের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
গত রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন। পদত্যাগ না করায় গত সোমবার বিকেলে কুয়েট ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আজ কুয়েট ক্যাম্পাসে গেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি ক্যাম্পাসে পৌঁছান।
আরও পড়ুনকুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে২ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনকুয়েটে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন শুরু, চলছে আলোচনা২১ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক য় ট র উপ চ র য আমরণ অনশন র পদত য গ র ভ স কর য র অনশন শ র অনশন চ শ হব গ অবস থ আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
একাধিক সুযোগ পেয়েও কেন রাজনীতিতে জাড়াননি প্রীতি জিনতা
বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিনতা এখন অভিনয়ে অনিয়মিত। অভিনয়ে তাকে দেখা না গেলেও নিজের ক্রিকেট দলের হয়ে মাঠে তাকে প্রায়ই দেয়া যায়। মাঝে গুঞ্জন উঠেছিলে রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন তিন। অবশ্য এবিষয়ে টুঁশব্দও করেননি এই অভিনেত্রী।
এদিকে মাস তিনেক আগে কংগ্রেসের পক্ষ অভিযোগ তোলা হয়েছিল, প্রীতি জিনতার ১৮ কোটি টাকার ঋণ নাকি মকুফ করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। শুধু তাই নয়, প্রীতি নাকি তার সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বিজেপির হাতে সঁপে দিয়েছেন- এমন অভিযোগও ওঠে। এরপর বলিউড নায়িকার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা শুরু হয়।
সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে প্রীতি জিনতাকে একজন জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি ভবিষ্যতে বিজেপিতে যোগ দেবেন? আপনার গত কয়েক মাসের টুইট দেখে তো তেমনটাই মনে হচ্ছে। জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীদের এটাই একটা সমস্যা। সবাই এত বিচার করতে বসে যান সবকিছু নিয়ে। আমি যেমনটা আগে বলেছি, মন্দিরে, মহাকুম্ভে যাওয়া কিংবা নিজের পরিচয় নিয়ে আমি গর্বিত। তার মানে এই নয় যে এসমস্ত কারণে আমি বিজেপিতে যোগ দেব।’
প্রীতি বলেন, ‘ভারতের বাইরে থাকার ফলে আমি দেশের প্রকৃত মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেছি এবং আর পাঁচজন ভারতীয়র মতোই গর্ববোধ করি আমার দেশকে নিয়ে।’
রাজনীতিতে না আসার কারণ গত ফেব্রুয়ারি মাসেও জানিয়েছিলেন প্রীতি জিনতা। সেসময় তিনি বলেন, ‘রাজনীতি আমার দ্বারা হবে না। বিগত কয়েক বছরে একাধিক রাজনৈতিক দল আমাকে টিকিট দিতে চেয়েছে। এমনকি রাজ্যসভার আসনের প্রস্তাবও এসেছিল। তবে আমি বিনম্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ, আমার ইচ্ছে নেই। আর আমাকে ‘সৈনিক’ বললেও অতিরঞ্জিত হবে না। কারণ, আমি একজন আর্মি পরিবারের সন্তান। আমার বাবা সৈনিক এবং আমার দাদাও। আর্মি পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমাদের মানসিকতা খানিক আলাদা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেদের উত্তর ভারতীয়, দক্ষিণ ভারতীয় কিংবা হিমাচলী বা বাঙালি বলে ভাবি না, আমাদের পরিচয় শুধুমাত্র ভারতীয়। আর হ্যাঁ, দেশভক্তি আমাদের রক্তে।’ সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।