বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিনের একটি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় ৩ মাস ধরে আটকে আছে সমাজকর্ম বিভাগের পরীক্ষা।

মঙ্গলবার (৬ মে) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন বিভাগটির প্রভাষক মোস্তাকিম রহমান। 

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ফেসবুক পোস্টে মোস্তাকিম রহমান বলেন, “শিক্ষক হিসেবে নাকি উপাচার্যের পদত্যাগ চাওয়া যাবে না, তাই আমি চাচ্ছি না পদত্যাগ।”

আরো পড়ুন:

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ববির প্রশাসনিক ভবনে তালা

ববি উপাচার্যের পদত্যাগের ১ দফা দাবি শিক্ষার্থীদের

তিনি সমাজকর্ম বিভাগের দুটি গুরুতর সমস্যা তুলে ধরে পোস্টে বলেন, “একটি ব্যাচ সব ক্লাস শেষ করে ৩ মাস ধরে শুধু উপাচার্যের একটি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে ৩ মাসেও উপাচার্য স্বাক্ষর দেননি। অন্যদিকে, আরেক ব্যাচের ফলাফল জমা দিতে দুই সপ্তাহ সময় লেগেছে, একটি মাত্র স্বাক্ষরের জন্য।”

তিনি আরো বলেন, “ভর্তি কার্যক্রম শুরুর জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি পাঠানো হলেও (যেখানে উপাচার্য এখন রেজিস্ট্রারের দায়িত্বও পালন করছেন) এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি। আগামী ৩ মাসেও যদি স্বাক্ষর না হয়, তাহলে এই ব্যাচটিও পরীক্ষায় বসতে পারবে না, যদিও তাদের সব ক্লাস প্রায় শেষ।”

ক্ষোভ প্রকাশ করে এই শিক্ষক বলেন, “আমার শিক্ষার্থীদের অপরাধ কী? এই ৩ মাসের একাডেমিক ক্ষতি উপাচার্য কি পুষিয়ে দিতে পারবেন? উপাচার্য যদি শিক্ষার্থীদের ক্ষতির দায় নিতে না পারেন, তাহলে তাকে ঢাকায় বসিয়ে রেখে ধুয়ে পানি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখছি না।”

তিনি আরো বলেন, “অন্যান্য বিভাগেও সমস্যা ভয়াবহ এবং পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার পেছনে এই একজন ব্যক্তিকেই দায়ী করা যায়।”

লেখার শেষ অংশে তিনি লেখেন, “শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক দাবির পক্ষে আছি।”

ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল উপ চ র য র পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ ঘণ্টা পরও খোলা হয়নি শাহ আমানত হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের তালা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আজ সোমবার দুপুরেও তা খোলা হয়নি। উল্টো আজ শিক্ষার্থীরা প্রধ্যক্ষের কক্ষের নামফলকও সরিয়ে ফেলেন। গতকাল রোববার সকালে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান আলোচনার প্রস্তাবও দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ ও অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আলোচনায় বসবেন না বলে হল সংসদের নেতারা জানিয়েছেন।

আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌ ধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলের গৃহশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে হলে যান। তিনি হল সংসদের প্রাকর্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল সংসদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হননি।

প্রাধ্যক্ষ দেখা করতে চাইলেও হল সংসদের সদস্যরা তাতে রাজি হননি বলে জানান শাহ আমানত হল সংসদের ভিপি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, দাপ্তরিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয়—এ জন্য হলের আরেকটি অফিস কক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি গৃহশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে হলে গিয়েছিলাম আলোচনায় বসতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আসেননি। পরে সহউপাচার্যের (একাডেমিক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেন এবং উপাচার্য চীন সফর শেষে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, গতকাল হল সংসদের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। তিনি সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রাধ্যক্ষ এসে জানিয়েছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করতে চান। কিন্তু উপাচার্য ও সহউপাচার্য (প্রশাসনিক) অনুপস্থিত থাকায় আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্য দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গতকাল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে হল সংসদের প্রতিনিধিরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর কক্ষে তালা দেন। অভিযোগে বলা হয়—হল স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, দরজা-জানালার মেরামত হয়নি, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু হয়নি এবং সাইকেল স্ট্যান্ডসহ মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এসব অভিযোগ তাঁরা সহ–উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনেক কাজই বাজেট ও প্রশাসনিক অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি নিয়মিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ