নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রিমান্ড আদেশ দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

তাজাম্মুল হক প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম মিজানুর রহমান। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার আদালতে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপপরিদর্শক মো. শাহিনুর রহমান অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

৭ মে রাতে রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার নারিন্দা এলাকার একটি মেস থেকে সাদাপোশাকে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মিজানুর রহমানকে আটক করে বলে জানা গেছে। ঘটনার পরপরই পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশপাশের থানায় খোঁজ নিয়েও তাঁর সন্ধান পাননি। পরে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ কয়েকটি সূত্র থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়।

মামলার কাগজপত্র থেকে জানা গেছে, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২১ মার্চ ধানমন্ডি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত এবং সংগঠনটির পক্ষে প্রচারণা, সদস্য সংগ্রহ ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, পুলিশ মিজানুরের ব্যবহৃত মুঠোফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করেছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হিজবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এতে আরও বলা হয়েছে, আসামি মুক্তি পেলে চিরতরে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাঁকে হেফাজতে রাখা প্রয়োজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হক বলেন, ‘প্রথমে তাঁর অবস্থান নিশ্চিত না হওয়ায় উদ্বিগ্ন ছিলাম। পরে জানতে পারি, তাঁকে রাষ্ট্রবিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।’

অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের বড় ভাই সাজু রহমান বলেন, ‘মিজানকে ৭ মে রাত ১১টার দিকে নারিন্দার মেস থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন দিন তাঁর কোনো খোঁজ পাইনি। পরে জানতে পারি, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা তাঁর ন্যায়বিচার চাই।’

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাশৈনু বলেন, ‘আমি এখানে যোগদানের আগে মামলাটি হয়েছে। মামলাটি ধানমন্ডি থানায় নথিভুক্ত হলেও এর তদন্ত করছে কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন ধ নমন ড তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে পরকীয়া প্রেমিকের হাতে নারী খুন

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামে তৃপ্তি রাণী (৪০) নামের এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে তৃপ্তি রানী মাঠে ঘাস কেটে বাড়িতে ফেরার পথে শংকর নামের এক স্থানীয় যুবক তৃপ্তি রানীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।

আরো পড়ুন:

প্রথম স্ত্রীকে তালাক না দেওয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যা

যে কারণে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে গলায় ফাঁস দিলেন স্বামী

তৃপ্তি রানী উপজেলার কৃষ্ণবাটি দক্ষিণ পাড়ার অবনিশ মল্লিকের স্ত্রী। অভিযুক্ত শংকর নিহতের প্রতিবেশী। হত্যাকাণ্ডের পরে সে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। 

তৃপ্তি রানী পরকীয়ার জের ধরে হত্যার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

কৃষ্ণবাটি এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য সাধন দাস বলেছেন, তৃপ্তির স্বামী অবনিশ ভ্যানচালক। এই দম্পতির একটি সন্তান আছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির পাশের এক নারীর সঙ্গে মাঠ থেকে ঘাস কেটে বাড়ি ফিরছিলেন তৃপ্তি। পথে শংকর তাদের গতিরোধ করে। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শংকর তৃপ্তিকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে হাতে থাকা ধারাল অস্ত্র দিয়ে তৃপ্তির ঘাড়ে ও মাথায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তখন তৃপ্তির সঙ্গে থাকা নারী বাধা দিতে গেলে তাকেও হত্যার ভয় দেখায় শংকর। 

সাধন দাস বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত তৃপ্তি রাণীকে মনিরামপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে স্বজনরা তৃপ্তিকে নিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যায় নড়াইলে পৌঁছালে পথেই তৃপ্তির মৃত্যু হয়। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তৃপ্তির সঙ্গে শংকরের পরকীয়া নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন ছিল। একপর্যায়ে শংকর তৃপ্তিকে ঘরে তুলতে চান। তখন তৃপ্তি শংকর কাছে তার ভিটাবাড়ি দাবি করেন। শংকর তাতে রাজি না হওয়ায় তাদের দুজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে তৃপ্তিকে খুন করেছে শংকর। 

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেছেন, পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে শংকর নামের এক ব্যক্তি বৃহস্পতিবার দুপুরে তৃপ্তি রানীকে কুপিয়ে আহত করে। ঢাকায় নেওয়ার পথে তৃপ্তি মারা যান। গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত শংকর পলাতক আছে। 

ঢাকা/রিটন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ