প্রথমবারের মতো গিয়েছিলেন বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে। সেই রোমাঞ্চের সঙ্গে পারফরম্যান্সও ছিল ভালো। লাহোর কালান্দার্সের হয়ে পিএসএলে ৫ ম্যাচ খেলে নেন ৯ উইকেট। অথচ আজ বিকেলে দেশে ফিরে রিশাদ হোসেনকে বর্ণনা করতে হলো মাঠের বাইরের ভিন্ন এক অভিজ্ঞতার কথা।  

কয়েক দিন ধরে ভারত–পাকিস্তান পাল্টাপাল্টি আক্রমণের মধ্যে হামলা হয় রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের পাশেও। এ ঘটনার পর পিসিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পিএসএল খেলতে যাওয়া বিদেশি ক্রিকেটাররা দেশে ফেরার ইচ্ছার কথা জানান।

এরপরই পিএসএল স্থগিতের ঘোষণা আসে। পাকিস্তান থেকে বিশেষ বিমানে দুবাইয়ে আনা হয় বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটারকে, সেখান থেকে আজ বিকেলে ঢাকায় পৌঁছান নাহিদ রানা ও রিশাদ। বিমানবন্দরে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে রিশাদ বলেন, ‘আসলে প্রথম যে পরিস্থিতি আমরা দেখেছি, শুনতে পেয়েছি, শোনার পর একটু আতঙ্কিত হয়েছিলাম সবাই, ভয় কাজ করছিল। সবাই সাপোর্ট করছিল দেশ থেকে, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকেও। বিসিবি থেকেও অনেক খোঁজখবর নিয়েছে।’

নাহিদ রানা একটু ঘাবড়ে যায় এবং একটু চুপচাপ ছিল। আমি ওকে বলছি টেনশনের কিছু নেই, আমরা দুজন আছি। আল্লাহ তো আছেই।রিশাদ হোসেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটার

একে দেশের বাইরে, তার ওপর যে দেশে খেলতে গেছেন, সেই দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে যাচ্ছে! পাকিস্তান থেকে পরিবারকেও সাহস জোগাতে হয়েছে রিশাদদের। ‘চেষ্টা করছি ভালো রাখার জন্য (পরিবারকে), পজিটিভ কথা বলার জন্য যেন টেনশন না করে’—বলেছেন বাংলাদেশ দলের এই লেগ স্পিনার।

বিমানবন্দরে কথা বলছেন রিশাদ হোসেন.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

একটি দল ভোটের প্রয়োজনে আ.লীগের নাম মুখে নেয় না: সালাউদ্দিন আহমেদ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “দেশে এমন একটি রাজনৈতিক দল আছে, যারা ভোটের প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের নামও মুখে নেয় না।”

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কর্মসূচির ষষ্ঠ দিনের এ আয়োজনে অংশ নেন ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী।

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “একটি রক্তস্নাত পথ অতিক্রম করে আমরা আজকের অবস্থানে এসেছি। অতীতের বেদনাবিধুর সংগ্রাম ভুললে চলবে না; আওয়ামী লীগের কুকীর্তিও ভুলে গেলে চলবে না। অথচ, একটি দল তাদের ভোটের জন্য এসব কথা মুখেও নিতে চায় না।”

গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরার লক্ষ্যে ঘোষিত তফসিলকে বিএনপি স্বাগত জানিয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা। সেই গণতান্ত্রিক লক্ষ্যেই তফসিলকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সংলাপ, আলোচন ও সহিষ্ণুতার মধ্য দিয়ে বিএনপিকে সংগ্রাম করতে হয়েছে।”

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, “যারা পিআর ভোট কিংবা গণভোটের দাবি তুলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছিল, তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষ শক্তি।”

বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাকেই সবচেয়ে বড় অর্জন মনে করে বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিন আহমেদ।

সংলাপ ও গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমেই বিজয় অর্জিত হয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেউ বলে ‘নো পিআর নো ইলেকশন’; কেউ বলে, ‘আগে গণভোট’; আবার কেউ বলে, ২০২৯ সালে নির্বাচন হওয়া উচিত। এরা নাকি গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি! তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা আলাদা। বিএনপির গণতন্ত্র হলো গণমানুষের গণতন্ত্র।

তিনি জানান, বিএনপি সব শ্রেণির মানুষের রাজনীতি করে। ধর্মীয় বিভাজন নয়, নাগরিক পরিচয়ই হবে সবার মূল পরিচয়—এ নীতিতেই দল বিশ্বাসী।

বেআইনি গ্রেপ্তারের ভয় থেকে মানুষ মুক্ত হবে, এ আশা ব্যক্ত করে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা ইমাম-মুয়াজ্জিন সম্মেলনেও বলেছি; এখনো বলছি, অন্যায়ের বিচার অবশ্যই হবে।”

ছাত্রদলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতের রাজনীতি হবে মেধা, যোগ্যতা ও নৈতিকতার ভিত্তিতে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনা করেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।

উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসর উদ্দীন নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমানসহ অন্য নেতাকর্মীরা। 

বিকেলে একই মঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

ঢাকা/মোহাম্মদ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ