ফরিদপুরে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ, ক্লাস বর্জন
Published: 12th, May 2025 GMT
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে ক্লাস বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের সহযোগিতায় প্রধানশিক্ষকসহ অবরুদ্ধ অন্যান্য শিক্ষককে উদ্ধার করেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।
সোমবার উপজেলার ময়না এ.সি বোস ইনস্টিটিউশনে এ ঘটনা ঘটে। ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোখলেসুর রহমান অরুণের পদত্যাগ চেয়ে গত দুই মাস ধরে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, সোমবার সকালে স্কুলের শিক্ষকরা শিক্ষক মিলনায়তনে গেলে ওই কক্ষের প্রবেশপথে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিচার চেয়ে মিছিল এবং স্কুল বাউন্ডারির টিনের বেড়া ভাঙচুর করে তারা। পরে অবরুদ্ধ শিক্ষকরা স্থানীয় ময়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হক মৃধা ও থানা পুলিশকে জানালে তারা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের উদ্ধার করেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মৃধা আবুল হাশেম ও সহকারী শিক্ষক মো.
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তালা খুলে দেওয়ার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জোর করে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাক্কাধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেম মৃধা অসুস্থ হয়ে মেঝেতে পড়ে যান। পরে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান অরুণ বলেন, ঘটনার সময় তিনি স্কুলে গেলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের রুমে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় শিক্ষকদের অবরুদ্ধ রেখে ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়না ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক মৃধা বলেন, কয়েকজন শিক্ষকের ফোন পেয়ে তিনি ওই স্কুলে যান। এ সময় ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের একটি দল আসে। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তালা খুলে দিলে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা শিক্ষকরা বের হয়ে আসেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, স্কুলে একটু ঝামেলা হয়েছিল পরে ঠিক হয়ে গেছে।
গত ২৪ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে তারা।
বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র র পদত য গ অবর দ ধ শ ক ষকর এ সময় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
এক দিনে তাপমাত্রা কমলো ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঠান্ডা বাতাসে স্বস্তি জনজীবনে
টানা ছয় দিন ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় তাপপ্রবাহের পর সোমবার সকাল থেকে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা পেতে শুরু করেছেন দেশবাসী। এতে এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেছে। ফলে মুক্তি মিলেছে তীব্র তাপদাহ থেকে। ঠান্ডা বাতাস বইতে থাকায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে জনজীবনে।
এদিকে তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি মিললেও ঢাকাসহ ২১ জেলায় বজ্রপাতের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বজ্রপাত হলে ঘরের মধ্যে থাকা, ভ্রমণ এড়িয়ে চলা ও গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়াসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে যেসব এলাকায় হঠাৎ তাপমাত্রা কমে গেছে, সেখানকার মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রহমান জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গতকাল বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হয়েছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় তাপমাত্রা নামতে শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবারও বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, খুলনা বিভাগ বাদ দিয়ে দেশের প্রায় সর্বত্র ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে গেছে। রাজশাহীতে এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে কমেছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ২১ জেলায় বজ্রপাতের আভাস রয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে পরবর্তী ৪ ঘণ্টার মধ্যে বিভিন্ন জেলায় অস্থায়ীভাবে প্রতি ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বা তার বেশি বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি এবং বজ্রপাত হতে পারে। জেলাগুলো হলো– রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, নরসিংদী, রংপুর, গাইবান্ধা, শেরপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, রাঙামাটি ও বান্দরবান।
বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু
বরগুনার আমতলীতে মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কহিনুর নামে এক গৃহবধূ প্রাণ হারিয়েছেন। উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ ডালাচারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিন দক্ষিণ গুলিশাখালী গ্রামে বজ্রপাতে শামীম চৌকিদার নামে একজন আহত হয়েছেন। সকালে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মোহাম্মদ ফিরোজ নামে এক কৃষক মারা গেছেন। এ ছাড়া গতকাল হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার সুজনপুর গ্রামে বজ্রপাতে আজগর আলী নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।