একাত্তরকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। একাত্তরকে বাংলাদেশের ভিত্তিমূল উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, যদি কোনো গোষ্ঠী বা কোনো পক্ষ একাত্তরকে বাইপাস করে রাজনীতি করতে চায়, তাদের রাজনীতিটা বুমেরাং হবে।

এনসিপি যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির আত্মপ্রকাশ সামনে রেখে আজ মঙ্গলবার দুপুরে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথাগুলো বলেন। রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন ট্রেড সেন্টারে এনসিপির যুব উইংয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘একাত্তরকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ নেই। একাত্তর আমাদের ভিত্তিমূল। আমরা চব্বিশে সেটা রিক্লেইম করেছি। এই ভিত্তিমূল আমাদের থাকতে হবে। যদি কোনো গোষ্ঠী বা কোনো পক্ষ একাত্তরকে বাইপাস করে রাজনীতি করতে চায়, তাদের রাজনীতিটা বুমেরাং হবে।’

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, ‘আমরা যে আমাদের সোনার বাংলা বা গোল্ডেন বাংলা বলে থাকি, সেই কাঙ্ক্ষিত বাংলাকে কিন্তু আমরা এখনো পাইনি। আমাদের জাতীয় সংগীত আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি। আমরা চাই যে আমাদের স্বপ্নে সুন্দর যে বাংলাটা রয়েছে, সোনার যে বাংলাটা রয়েছে, সত্যিকার সেই সোনার বাংলাটা হয়ে উঠুক। যারা জাতীয় সংগীতের প্রতি অবমাননা করছেন, বুঝে না বুঝে, আমরা তাদের বলব, বাংলাদেশের গণমানুষের যে রাজনীতি ও আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে, সেখানে অংশগ্রহণ করে আপনাদের মূলধারার রাজনীতিতে আসা উচিত। আমাদের এনসিপির পক্ষ থেকে আমরা এ ধরনের কার্যকলাপগুলোর বিরোধিতা করছি। বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দনের যে জায়গাগুলো, আকাঙ্ক্ষার জায়গাগুলো, সেখানে আঘাত না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে।’

সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনায় ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জাহেদুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা ও যুগ্ম সমন্বয়ক (যুব) তারিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। তাঁরা জানান, আগামী শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় যুবশক্তির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন স র দ দ ন প টওয় র এনস প র আম দ র র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি ও জামায়াত ‘ফিফটি, ফিফটি’ ভোট চান আওয়ামী লীগের নেতা

বিএনপি ও জামায়াত যেন ‘ফিফটি, ফিফটি’ ভোট পায়, এমনটা চেয়েছেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের আওয়ামী লীগের এক নেতা। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের বেকিমোড়ার পাড় বাজারে ধারণ করা ভিডিওটি গত বৃহস্পতিবার বিকেলের বলে জানা গেছে। ভিডিওটি গতকাল শুক্রবার রাত থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই নেতার নাম কালা মিয়া। তিনি উত্তর রণিখাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

ভিডিওতে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীনকে একটি চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়। জয়নাল আবেদীন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর) আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থী।

ভিডিওতে কালা মিয়াকে বলতে শোনা যায়, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আবার এই দেশে আইতে হইলে (আসতে হলে), জন্ম নিতে হইলে, ১০-১৫ বছরের আগে সম্ভব নয়। যদি আইত পারে, দীর্ঘ দিন যাইত ওইব ওলান (অপেক্ষা করতে হবে)।’ জামায়াত নেতা জয়নাল আবেদীন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখন আমরার চেয়ারম্যানসাব (জয়নাল) আইছইন, সামনেদি (আসছেন সামনে) নির্বাচনে এমপি পদপ্রার্থী ওইবা (হবেন) আল্লাহর যদি হুকুম ওয়। আর তাইন পাস করতা পারইন (তিনি পাস করতে পারলে) আমরার এলাকার মানুষ যারা ভোট দিবা; যারা হাটবা-খাটবা তারতো মূল্যায়ন পাইত। যদিন ফেইলও মারইন, তা-ও মূল্যায়ন পাইত। ফেইল মারলেও তো এমপি। আমরা আশা করছি, আল্লাহ পাস কারাউক্কা। দলে যদি সরকার গঠন না করে; তবে আমরা ইগু আশাবাদী জামায়াতে ইসলাম বিরোধী দল থাকব। এর তাকি বেশি দূরে না যাইয়ার।’

কালা মিয়া বলেন, ‘যদি পাস না-ও করতে পারে, জামায়াতে ইসলামরে বিরোধী দল তনে হরাইয়া রাখতা পারতা নায় (জামায়াতকে বিরোধী দল থেকে সরিয়ে রাখা যাবে না)। আর যা দল আছে, নতুন দল নাগরিক পার্টি একটা বাইর করছে, এরা যে কতটা সিট পাইব, পাবলিকেও জানে তারাও জানে। তারার তো ইচ্ছা দেশ দখল করি লাইতা (দেশ দখল করার ইচ্ছা)। কিন্তু ইলেকশনে খারাইয়া দেখউক্কা (দাঁড়িয়ে দেখুক) কত ধানে কত চাল বারই।’ তিনি বলেন, ‘আমরাও চাইরাম আমরার সেন্টারে জামায়াতে ভোট পাউক অর্ধেক, আর বিএনপি নেউক অর্ধেক। তাঁরাও যেহেতু নির্যাতিত...আগে পাইছইন না; তারাও পাইত। আমরা চাইরাম সমান সমান ফিফটি ফিফটি করিয়া।’

এ বিষয়ে কথা বলতে আওয়ামী লীগ নেতা কালা মিয়ার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।

জানতে চাইলে জামায়াতের নেতা জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, তিনিও লক্ষ করেছেন একটি ভিডিও ছড়িয়েছে। ওই ব্যক্তিকে তিনি চিনতেন না। পরে জানতে পেরেছেন, তিনি আওয়ামী লীগের নেতা। মূলত গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কোম্পানীগঞ্জে দলের এক নেতার ছেলের বিয়েতে গিয়েছিলেন। ভিডিওতে যে স্থানে দেখা গেছে, পাশেই ছিল অনুষ্ঠান। দুপুরে খাওয়াদাওয়া শেষে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় কেউ একজন কালা মিয়া নামের একজনকে নিয়ে গিয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। তিনি বলেন, সামাজিক অনুষ্ঠানটিতে অনেকেই গিয়েছিলেন। বিএনপিরও অনেকে ছিলেন। বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তিকে তিনি চেনেন না। বিষয়টি কে বা কারা ভিডিও করে ছেড়ে দিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ