কোনো গোষ্ঠী একাত্তরকে বাইপাস করে রাজনীতি করতে চাইলে বুমেরাং হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
Published: 13th, May 2025 GMT
একাত্তরকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। একাত্তরকে বাংলাদেশের ভিত্তিমূল উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, যদি কোনো গোষ্ঠী বা কোনো পক্ষ একাত্তরকে বাইপাস করে রাজনীতি করতে চায়, তাদের রাজনীতিটা বুমেরাং হবে।
এনসিপি যুবসংগঠন জাতীয় যুবশক্তির আত্মপ্রকাশ সামনে রেখে আজ মঙ্গলবার দুপুরে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথাগুলো বলেন। রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন ট্রেড সেন্টারে এনসিপির যুব উইংয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘একাত্তরকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ নেই। একাত্তর আমাদের ভিত্তিমূল। আমরা চব্বিশে সেটা রিক্লেইম করেছি। এই ভিত্তিমূল আমাদের থাকতে হবে। যদি কোনো গোষ্ঠী বা কোনো পক্ষ একাত্তরকে বাইপাস করে রাজনীতি করতে চায়, তাদের রাজনীতিটা বুমেরাং হবে।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, ‘আমরা যে আমাদের সোনার বাংলা বা গোল্ডেন বাংলা বলে থাকি, সেই কাঙ্ক্ষিত বাংলাকে কিন্তু আমরা এখনো পাইনি। আমাদের জাতীয় সংগীত আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি। আমরা চাই যে আমাদের স্বপ্নে সুন্দর যে বাংলাটা রয়েছে, সোনার যে বাংলাটা রয়েছে, সত্যিকার সেই সোনার বাংলাটা হয়ে উঠুক। যারা জাতীয় সংগীতের প্রতি অবমাননা করছেন, বুঝে না বুঝে, আমরা তাদের বলব, বাংলাদেশের গণমানুষের যে রাজনীতি ও আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে, সেখানে অংশগ্রহণ করে আপনাদের মূলধারার রাজনীতিতে আসা উচিত। আমাদের এনসিপির পক্ষ থেকে আমরা এ ধরনের কার্যকলাপগুলোর বিরোধিতা করছি। বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দনের যে জায়গাগুলো, আকাঙ্ক্ষার জায়গাগুলো, সেখানে আঘাত না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে।’
সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনায় ছিলেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জাহেদুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা সারওয়ার নিভা ও যুগ্ম সমন্বয়ক (যুব) তারিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। তাঁরা জানান, আগামী শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় যুবশক্তির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স র দ দ ন প টওয় র এনস প র আম দ র র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
৩০ ঘণ্টা পরও খোলা হয়নি শাহ আমানত হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের তালা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আজ সোমবার দুপুরেও তা খোলা হয়নি। উল্টো আজ শিক্ষার্থীরা প্রধ্যক্ষের কক্ষের নামফলকও সরিয়ে ফেলেন। গতকাল রোববার সকালে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান আলোচনার প্রস্তাবও দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ ও অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আলোচনায় বসবেন না বলে হল সংসদের নেতারা জানিয়েছেন।
আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌ ধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলের গৃহশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে হলে যান। তিনি হল সংসদের প্রাকর্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল সংসদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হননি।
প্রাধ্যক্ষ দেখা করতে চাইলেও হল সংসদের সদস্যরা তাতে রাজি হননি বলে জানান শাহ আমানত হল সংসদের ভিপি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, দাপ্তরিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয়—এ জন্য হলের আরেকটি অফিস কক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি গৃহশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে হলে গিয়েছিলাম আলোচনায় বসতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আসেননি। পরে সহউপাচার্যের (একাডেমিক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেন এবং উপাচার্য চীন সফর শেষে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, গতকাল হল সংসদের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। তিনি সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রাধ্যক্ষ এসে জানিয়েছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করতে চান। কিন্তু উপাচার্য ও সহউপাচার্য (প্রশাসনিক) অনুপস্থিত থাকায় আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্য দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
গতকাল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে হল সংসদের প্রতিনিধিরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর কক্ষে তালা দেন। অভিযোগে বলা হয়—হল স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, দরজা-জানালার মেরামত হয়নি, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু হয়নি এবং সাইকেল স্ট্যান্ডসহ মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এসব অভিযোগ তাঁরা সহ–উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনেক কাজই বাজেট ও প্রশাসনিক অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি নিয়মিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।