জুলাই অভ্যুত্থানে তরুণদের গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব উইং গঠন করা হচ্ছে। এটির নাম দেওয়া হয়েছে জাতীয় যুবশক্তি। আগামী শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানে শহীদ আবরার ফাহাদ অ্যাভিনিউতে সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী এ ঘোষণা দেন। এ সময় যুব উইংয়ের সমন্বয়কারী তারিকুল ইসলাম, এস এম শাহরিয়ার, তুহিন মাহমুদ, নাহিদা বুশরা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘২৮ ফেব্রুয়ারি এনসিপি আত্মপ্রকাশের পর আমরা প্রত্যেক জেলার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। কীভাবে যুব সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করতে পারি, সে বিষয়ে মতামত নিয়েছি। গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামে সংগঠন যেভাবে জুলাই অভ্যুত্থানে বড় আকারে নেতৃত্ব দিয়েছে, তেমনি জাতীয় যুবশক্তি বাংলাদেশে একটি নতুন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা ১০০-১৫০ বছরে একবার আসে। বাংলাদেশে বর্তমানে ৪০ শতাংশ তরুণ। বাংলাদেশের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে চাইলে এই তরুণ শক্তিকে কাজে লাগানো ছাড়া কোনো উপায় নেই। এই শক্তিকে কাজে লাগাতে হলে তরুণদেরকে সংগঠিত করতে হবে।

নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী আরও বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের একটি বড় কারণ ছিল তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে তাদের প্রবেশ কম ছিল। তারা মাঠে নেমে এসে এই বৈষম্য ভেঙে দিয়েছে। তরুণদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তরুণদের নিয়ে আসতে জাতীয় যুবশক্তি কাজ করবে।

এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক (যুব) তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাতচল্লিশের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধে যুব সমাজ অগ্রভাগে ছিল। প্রবল দেশপ্রেম থাকা সত্ত্বেও তরুণদের অধিকাংশই রাজনীতিতে জড়ানো ঝুঁকিপূর্ণ ও নিষ্ফল মনে করে। তাদের কথা বলার ও শোনার সহজলভ্য ও ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম নেই। আমরা চাই স্বাধীন মত প্রকাশ ও নৈতিক আদর্শে উজ্জীবিত যুব সমাজ তাদের কাঙ্ক্ষিত রাজনীতি করতে পারবে।’

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গণঅভ্যুত্থানের সামনের সারিতে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের হাত ধরে জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনকে সম্প্রসারিত এবং ছড়িয়ে দিতে এনসিপি ইতোমধ্যে আরও বেশ কয়েকটি উইং গঠন করেছে। এরমধ্যে রয়েছে- এনসিপি স্বাস্থ্য উইং, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী উইং, নারী উইং, শ্রমিক উইং, আইনজীবী উইং ইত্যাদি। উইংগুলো আত্মপ্রকাশ করতে প্রস্তুতি কমিটি গঠন করেছে তারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প য বশক ত স গঠন এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ ঘণ্টা পরও খোলা হয়নি শাহ আমানত হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের তালা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আজ সোমবার দুপুরেও তা খোলা হয়নি। উল্টো আজ শিক্ষার্থীরা প্রধ্যক্ষের কক্ষের নামফলকও সরিয়ে ফেলেন। গতকাল রোববার সকালে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান আলোচনার প্রস্তাবও দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ ও অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আলোচনায় বসবেন না বলে হল সংসদের নেতারা জানিয়েছেন।

আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌ ধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলের গৃহশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে হলে যান। তিনি হল সংসদের প্রাকর্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল সংসদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হননি।

প্রাধ্যক্ষ দেখা করতে চাইলেও হল সংসদের সদস্যরা তাতে রাজি হননি বলে জানান শাহ আমানত হল সংসদের ভিপি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, দাপ্তরিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয়—এ জন্য হলের আরেকটি অফিস কক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি গৃহশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে হলে গিয়েছিলাম আলোচনায় বসতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আসেননি। পরে সহউপাচার্যের (একাডেমিক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেন এবং উপাচার্য চীন সফর শেষে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, গতকাল হল সংসদের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। তিনি সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রাধ্যক্ষ এসে জানিয়েছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করতে চান। কিন্তু উপাচার্য ও সহউপাচার্য (প্রশাসনিক) অনুপস্থিত থাকায় আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্য দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গতকাল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে হল সংসদের প্রতিনিধিরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর কক্ষে তালা দেন। অভিযোগে বলা হয়—হল স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, দরজা-জানালার মেরামত হয়নি, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু হয়নি এবং সাইকেল স্ট্যান্ডসহ মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এসব অভিযোগ তাঁরা সহ–উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনেক কাজই বাজেট ও প্রশাসনিক অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি নিয়মিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ