ছোট বোনের বস্তাবন্দী লাশ নালায় খুঁজে পেল ৯ বছরের শিশু
Published: 13th, May 2025 GMT
পাঁচ বছর বয়সী রোজা মনিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। গতকাল সোমবার বেলা একটার পর থেকে নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজি করার পর এলাকায় মাইকিংও করা হয়। এরপর রাত কেটে ভোর আসে। আবার শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। হঠাৎ বাসা থেকে একটু দূরে একটি নালার ময়লা-আবর্জনার মধ্যে ভারী একটি বস্তা দেখতে পায় রোজার ৯ বছর বয়সী বোন আইরিন আক্তার। তারপর আরেক কিশোরী বোন সুবর্ণা আক্তারকে নিয়ে এসে সেই বস্তা টেনে তোলে তারা। বস্তার মুখ কাটার পর বেরিয়ে আসে রোজা মনির লাশ।
শিশুটির পরিবার মাত্র ১৩ দিন আগে ঢাকার তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়ায় একটি টিনশেড ঘর ভাড়া নেয়। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেই বাসা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরত্বে বিজয় সরণি উড়ালসড়ক–সংলগ্ন নালা থেকে রোজা মনির লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। গরম পানি দিয়ে পুরো শরীর ঝলসে দেওয়া হয়েছে। তারপর বস্তাবন্দী করে নালায় লাশ ফেলা হয়। শিশুটির গলায় দড়ি প্যাঁচানো ছিল।
তেজকুনিপাড়ায় রোজা মনিদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, রোজা মনির মা শিল্পী আক্তার বিলাপ করছেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি জানালেন, তাঁদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরায়। স্বামী নূর আলম এক বছর আগে মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে গিয়ে তেমন আয় করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা আর্থিক অনটনে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে জীবিকার সন্ধানে ৮ মাস আগে ৭ সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে শিল্পী আক্তার ঢাকায় চলে আসেন। তিনি বাসাবাড়িতে কাজ নেন। দুই কিশোরী মেয়েকে পোশাক কারখানায় কাজে দেন। অন্য সন্তানদের কাজে দেওয়ার মতো বয়স হয়নি। ঢাকায় এসে প্রথমে তেজগাঁও এলাকায় ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় একটি বাসা নিয়েছিলেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে ১৩ দিন আগে সাড়ে তিন হাজার টাকায় তেজকুনিপাড়ায় এই বাসায় উঠেছিলেন।
শিল্পী আক্তারের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তাঁর কথা যেন থামছিল না। মেয়ের নানা স্মৃতি মনে করে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। কীভাবে মেয়ের লাশ খুঁজে পেলেন, সেই বর্ণনাও দিলেন নিজের মুখেই। কেন, কী কারণে তাঁর এই শিশুসন্তানকে হত্যা করা হলো, সেটি তিনি জানেন না। বললেন, ‘আমার নিষ্পাপ বাচ্চাডারে এমনে নির্মমভাবে যে মারল.
শিল্পী আক্তার বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, ‘মাইয়্যা (রোজা মনি) খালি কইতো, আমরার ডাহা (ঢাকা) ভাল্লাগে না। তুমি আব্বারে কও আমরারে দেশে লইয়্যা যাইতো। এই ডাহাই (ঢাকা) মাইয়্যাডারে কাইড়া নিল।’
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এই হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত, সেটি খুঁজে বের করতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। আশপাশের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিয়ে নিয়ে যা বললেন পূজা চেরি
শারদীয় দুর্গাপূজা—হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। ঢাকের তালে, উলুধ্বনির সুরে, আলোকসজ্জার ঝলকে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল প্রতিটি পূজামণ্ডপ। এই আনন্দে শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও যুক্ত হন।
গতকাল বিজয়া দশমীর পবিত্র তিথিতে দেবীকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার সমাপ্তি ঘটে। পূজামণ্ডপগুলোতে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেছিলেন ভক্তরা। একে অপরের মুখে সিঁদুর মেখে উল্লাসে মাতেন সনাতনীরা। দুর্গোৎসবের আনন্দ ছুঁয়ে গেছে অভিনেত্রী পূজা চেরিকেও। গতকাল সিঁদুর খেলায় অংশ নেন তিনি।
আরো পড়ুন:
‘সবাই ধরে নেয় আমি ঋষি কাপুরের অবৈধ মেয়ে’
সংসার ভাঙার কারণে স্বামীকে ১১ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে অভিনেত্রীর?
পূজামণ্ডপে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পূজা চেরি। এ সময় জানতে চাওয়া হয়, বিজয়া দশমীর দিনে দেবী দুর্গার কাছে কী চাইলেন? জবাবে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমার যে গর্ভধারিণী মা মারা গেছেন সে যেন ভালো থাকেন। যেখানেই থাকেন যেন ভালো থাকেন এটাই চেয়েছি এবং দুর্গা মাকে বলেছি ‘তুমি যেন ভালো থেকো’। কারণ আমরা সবাই চেয়ে বেড়াই কিন্তু মাকে একটু জিজ্ঞেস করি না যে, ‘মা তুমি কেমন আছো?”
ব্যক্তিগত জীবনে পূজা চেরি এখনো একা। ফলে তার বিয়ে নিয়ে ভক্ত-অনুরাগীদের আগ্রহের শেষ নেই। বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এই অভিনেত্রী বলেন, “এখানে একজন সিঁদুর আমার গালে লাগিয়ে দিচ্ছিল, তখন তারা বলল, ‘প্রার্থনা করি আগামীবার যেন দাদাসহ মণ্ডপে আসতে পারো’।” এ কথা বলে একটু হাসি মুখে পূজা বলেন, “দেখ যাক কী হয়! চিন্তার বিষয় চিন্তা করে দেখি।”
পূজা চেরি শোবিজ অঙ্গনে যাত্রা শুরু করেছিলেন শিশুশিল্পী হিসেবে। ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে নায়িকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অল্প সময়ের মধ্যেই অভিনয় গুণে দর্শকদের মনে জায়গা করে নেন তিনি।
ঢাকা/শান্ত