আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবর্তনে সাড়ে ৯ হাজার শিক্ষার্থীর হাতে সনদ তুলে দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অর্থ উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা লাভ করেছেন, যার ভিত্তি আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর রয়েছে। দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির লক্ষ্য কেবল উচ্চশিক্ষা প্রদান নয়, বরং একটি দায়িত্বশীল, চিন্তাশীল ও মানবিক প্রজন্ম গড়ে তোলা।’

সমাবর্তন বক্তা ছিলেন অধ্যাপক আইনুন নিশাত। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এই সমাবর্তন শুধু একটি সনদ গ্রহণের মুহূর্ত নয়, বরং এটি একটি দিকনির্দেশনা।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক গোলাম রহমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের অর্জিত ডিগ্রি শুধু একটি সনদ নয়, এটি একটি দায়িত্ব। আপনারা এখন এমন একটি সমাজের অংশ, যেখানে আপনাদের জ্ঞান, মূল্যবোধ ও নেতৃত্ব খুব প্রয়োজন।’

বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা শুধু দেশের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নেই উল্লেখ করে উপাচার্য অধ্যাপক মো.

আশরাফুল হক বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও নিজেদের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছেন। বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়, বৈশ্বিক প্রযুক্তি সংস্থা, আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সংস্থায় আমাদের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন।’

সমাবর্তনে আরও বক্তব্য দেন সহ-উপাচার্য মোহাম্মেদ মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শারমিন রেজা চৌধুরী।

আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড ট্রাস্টিজ, সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার (ইনচার্জ) অধ্যাপক মো. শাফিউল আলম, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, অফিস প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও আমন্ত্রিত অতিথিরা সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ ঘণ্টা পরও খোলা হয়নি শাহ আমানত হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের তালা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আজ সোমবার দুপুরেও তা খোলা হয়নি। উল্টো আজ শিক্ষার্থীরা প্রধ্যক্ষের কক্ষের নামফলকও সরিয়ে ফেলেন। গতকাল রোববার সকালে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান আলোচনার প্রস্তাবও দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ ও অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আলোচনায় বসবেন না বলে হল সংসদের নেতারা জানিয়েছেন।

আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌ ধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলের গৃহশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে হলে যান। তিনি হল সংসদের প্রাকর্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল সংসদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হননি।

প্রাধ্যক্ষ দেখা করতে চাইলেও হল সংসদের সদস্যরা তাতে রাজি হননি বলে জানান শাহ আমানত হল সংসদের ভিপি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, দাপ্তরিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয়—এ জন্য হলের আরেকটি অফিস কক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি গৃহশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে হলে গিয়েছিলাম আলোচনায় বসতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আসেননি। পরে সহউপাচার্যের (একাডেমিক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেন এবং উপাচার্য চীন সফর শেষে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, গতকাল হল সংসদের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। তিনি সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রাধ্যক্ষ এসে জানিয়েছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করতে চান। কিন্তু উপাচার্য ও সহউপাচার্য (প্রশাসনিক) অনুপস্থিত থাকায় আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্য দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গতকাল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে হল সংসদের প্রতিনিধিরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর কক্ষে তালা দেন। অভিযোগে বলা হয়—হল স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, দরজা-জানালার মেরামত হয়নি, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু হয়নি এবং সাইকেল স্ট্যান্ডসহ মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এসব অভিযোগ তাঁরা সহ–উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনেক কাজই বাজেট ও প্রশাসনিক অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি নিয়মিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ