ব্যাংক উল্টাপাল্টা করলে পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে
Published: 15th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, কোনো ব্যাংকের মূলধন কিংবা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি থাকলে প্রয়োজনে একীভূতকরণ বা অধিগ্রহণ করা হবে। দরকার হলে নতুন মূলধন দেওয়া হবে। আমানতকারীদের ভয়ের কিছু নেই। যার যেখানে আমানত আছে, সেখানেই রাখুন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো ব্যাংক রক্ষার জন্য নয়; আমানতকারীর স্বার্থরক্ষায় কাজ করছে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা এবং ঋণের কিস্তি নিয়ে সমঝোতা বিষয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন গভর্নর। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন ডেপুটি গভর্নরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনেক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষমতা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হবে। যে ব্যাংকের জন্য যা করা প্রয়োজন, তা-ই করা হবে। সবই করা হবে আমানতকারীর স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে। তাদের ভয়ের কিছু নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমানতকারীদের সঙ্গে আছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো সবল করা হবে। প্রয়োজনে রাষ্ট্র সাময়িকভাবে দুর্বল ব্যাংকের মালিকানা নেবে। ব্যাংক খাত ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’
তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে অবক্ষয়ের মূলে ছিল পরিচালনা পর্ষদের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করা এবং সুশাসন ফেরাতে বিগত সরকারের নিষ্ক্রিয়তা। সরকার পরিবর্তনের পর ১৪টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন করা হয়েছে। এসব ব্যাংকে গুণগত পরিবর্তন এসেছে।
গভর্নর বলেন, নীতিমালা প্রয়োগ করার কারণে কিছু ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর হয়তো সমস্যা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর অনুরোধে আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো ব্যাংক রেজল্যুশনে নেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিনিয়োগকারী দেখবে।
বিনিয়োগকারীর স্বার্থ দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের না। তারা বুঝেশুনে বিনিয়োগ করবেন। আহসান এইচ মনসুর বলেন, উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডারদের চোখের সামনে ব্যাংকের পতন হয়েছে। যারা পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন, তারাই এ জন্য দায়ী। তাদের শেয়ার বাজেয়াপ্ত হলে হয়তো এস আলম, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের জন্য এটি ভালো হবে না। অন্যদের জন্য এটি ভালো।
তিনি জানান, ব্যাংকের জন্য আগামীতে ঝুঁকিভিত্তিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে। আইএফআরএস আইন চালু করা হবে। পুরোপুরিভাবে এসব করতে পারলে দেশের ব্যাংক খাতের গুণগত মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
কাশবনের হাতছানিতে ব্রহ্মপুত্রের তীরে ভিড়
চারদিকে জেগে ওঠা ব্রহ্মপুত্র নদের বালুচর। এর মাঝখানে স্বচ্ছ পানির আধার। ওপরে নীল আকাশে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘ। আর চরজুড়ে শুভ্র কাশফুল। প্রকৃতির দানেই তৈরি হয়েছে এ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। বাতাসে দুলতে থাকা কাশফুলের এ সৌন্দর্য ভ্রমণপিপাসুদের মনে দেয় একধরনের প্রশান্তি। তাই প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করছেন এখানে।
এ অপার সৌন্দর্যের দেখা মিলবে জামালপুর শহরের ফৌজদারি এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নদের ধারে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষের। সবাই নিজেদের মতো করে ছবি তুলছেন, কেউবা কাশফুল ছিঁড়ে তৈরি করছেন তোড়া।
গত মঙ্গলবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, শহরের মোড় থেকে শুরু করে নদের তীর পর্যন্ত মানুষের ভিড়। ছোট্ট একটি সেতু পার হয়ে সবাই ছুটছেন নদীর ধারে। প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে ফুটেছে কাশফুল। সবুজ লম্বা পাতার বুক থেকে বেরিয়ে আসা শুভ্র কাশফুল কোথাও থোকা থোকা, কোথাও গুচ্ছ আকারে। দূর থেকে মনে হবে, বালুচরে যেন সাদা চাদর বিছানো। হাওয়ায় দুলে ওঠা কাশফুলে মন ভরে যাচ্ছে দর্শনার্থীদের।
চরের যে অংশে কাশবনের সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে জনবসতি নেই। আছে স্বচ্ছ পানির লেকের মতো একটি ডোবা। কাশফুলঘেরা সেই পানিতে ডিঙিনৌকা নিয়ে ঘুরছেন দর্শনার্থীরা। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষ কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা সন্তানদের নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছেন।