এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তির’ আত্মপ্রকাশ
Published: 16th, May 2025 GMT
আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানের শহীদ আবরার ফাহাদ অ্যাভিনিউয়ে আয়োজিত আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ১৩১ সদস্যের কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে এই সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক, সদস্য সচিব ও মুখ্য সংগঠকের নাম ঘোষণা করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী।
আরো পড়ুন:
সাভারে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলা, আহত ৮
‘সরকারের ঘোষণা ইতিবাচক’, শাহবাগ ছাড়লেন আন্দোলনকারীরা
জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক হিসেবে অ্যাডভোকেট মো.
কমিটির অন্যরা হলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিন মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম সচিব দ্যুতি অরণ্য, মুখ্য যুব উন্নয়ন সমন্বয়ক খালেদ মাহমুদ ইকবাল। অচিরেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নবনিযুক্ত সদস্য সচিব ডা. জাহিদুল ইসলাম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌক্তিক দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করুন। তা না হলে ছাত্র-জনতার দাবির মুখে কি হবে সেই সিকিউরিটি দিতে পারছি না।”
“জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইয়েরা চার দিন ধরে রাস্তায় বসে আছেন। আমাদেরও মন কাঁদে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, সঠিক ও সুষ্ঠু সমাধানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিন।”
তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে, না তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নত হয়েছে, না তাদের আবাসন ব্যবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে রয়েছে। না তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে, না আবাসন সমস্যা সমাধান হয়েছে।”
এর আগে বিকেলে জাতীয় সংগীত ও কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠান মঞ্চে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন ডকুমেন্টারি প্রচার করা হয়। গণঅভ্যুত্থানের সময়ের বিভিন্ন স্লোগানের পাশাপাশি মঞ্চে গান পরিবেশন করা হয়।
দুপুরের পর থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত যুব নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হন। তারা ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘আপস না, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দালালি না, রাজপথ, রাজপথ’, ‘দিল্লি না, ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘যুব শক্তি আসছে, রাজপথ কাঁপছে’-স্লোগানে অনুষ্ঠানস্থল মুখরিত করে তোলে।
ঢাকা/মামুন/আসাদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় ন গর ক প র ট জ ত য় য বশক ত অন ষ ঠ ন এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার শুধু সাংবিধানিক জায়গায় আটকে আছে: হোসেন জিল্লুর রহমান
ত্বত্তাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সংস্কার টপ প্রায়োরিটি হওয়া দরকার। সংস্কার আলোচনা শুধু সাংবিধানিক জায়গায় আটকে আছে। জনগণের প্রাত্যহিক জীবন নির্বিঘ্ন করার বিষয়গুলো বিশেষত পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট এক পাশে ফেলে দেওয়া আছে, জনপ্রশাসন রিপোর্টটাও একই।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে 'গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সিভিল মিলিটারি সম্পর্ক' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘ইউনিটি ফর বাংলাদেশ' সংগঠনের আয়োজনে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবির, লেখক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চৌধুরী। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দর্শন বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ নিজার আলম।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সংস্কার টপ প্রায়োরিটি হওয়া দরকার। এটার পলিটিক্যাল ব্যবহারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। কক্সবাজার একজন কাউন্সিলরকে মেরে ফেলছে, অন ক্যামেরায় পাওয়া যাচ্ছে। ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির রিপোর্ট হবে ইন্টেলিজেন্ট কিন্তু অনেক রিপোর্ট শুধুমাত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ইন্টেলিজেন্ট নয়। কাজে এটা সংস্কার হতে হবে। আমার মনে হয়, সংস্কার আর্মির নেতৃত্বেও এটি হতে পারে। এটা অবশ্যই হতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এটা রাষ্ট্রের জন্য জরুরি। সক্ষম রাষ্ট্রের জন্য চারটি বিষয় জরুরি। সার্বভৌমত্ব বলতে আমরা বুঝি জিওগ্রাফিক, এটার অন্যতম হলো নীতি সার্বভৌমত্ব। স্বৈরাচারের সময় দেখেছি নীতি নেওয়া হচ্ছে, তবে সার্বভৌমভাবে নেওয়া হচ্ছে না। পলিটিক্যাল সার্বভৌমত্ব আছে তবে ভেতরে অন্তঃসারশূন্য।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে হবে। সিভিল মিলিটারি সম্পর্ক তার একটি অংশ। রিফর্ম নিয়ে একধরনের সাংবিধানিক বিষয়গুলোর আলোচনাই প্রাধান্য পাচ্ছে। কিন্তু জনগণের প্রাত্যহিক জীবনের বিশেষ করে পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট পাশে ফেলে দেওয়া আছে। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনায় রিপোর্টটাই নাই। প্রশাসন সংস্কারের রিপোর্টটাই একইভাবে পড়ে আছে।
সাংবিধানিক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষমতার ভারসাম্য জরুরি মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নতি, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের প্রয়োজন যদি মেটানো না যায়, আইনশৃংখলা/নিরাপত্তার বিষয়গুলো যদি মেটানো না যায়, তাহলে আজাদী মিথ্যা হয়ে উঠতে পারে এমন মনে হবে। এদিকে নজর দেওয়া দরকার।
নূরুল কবির বলেন, ‘সামরিক বাহিনীকে রাজনীতিকরণ করা ঠিক না' এটা হচ্ছে সবচেয়ে বেঠিক কথা। সেনাবাহিনী যদি রাজনীতি না বুঝে তাহলে তারা দেশের ক্রান্তিলগ্নে সিভিলিয়ানদের সাথে একযোগে কাজ করতে পারবে না। আপনারা রাজনীতিকরণ ও দলীয়করণকে এক করে মিলাবেন না।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য একটি ভালো সেনাবাহিনী দরকার কিন্তু সেনাশাসন দরকার নেই। সিভিল এবং মিলিটারি সম্পর্ক একটি বাইনারি অপজিশন। সেনাপ্রধান যখন এরশাদকে বলে মিলিটারি আর আপনার সঙ্গে নেই, তখনই এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। আবার গত ৩ আগস্ট যখন বর্তমান সেনাপ্রধান জুনিয়র অফিসারদের দাবির মুখে হাসিনাকে সেনাবাহিনীর অপারগতার কথা জানিয়ে দেন, তখনই হাসিনার পতন তরান্বিত হয়। ২০১৪ সাল নির্বাচন পরবর্তী সময়েই যদি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অসন্তোষ প্রকাশ করতো, তাহলে জুলাইয়ে দেড় হাজার মানুষের প্রাণ দেওয়া লাগতো না।
সৈয়দ নিজার আলম বলেন, মিলিটারি সম্পর্কে একটি বাইনারি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ এ সম্পর্ক দ্বান্দ্বিক হওয়ার কথা না। কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক থেকে শুরু করে মিলিটারি সবাই আমরা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রজন। তাই সবাইকে এক কাতারে থেকে দেশের সেবা প্রদান করতে হবে।